২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

রাজশাহীতে বিধ্বস্ত ডায়নামাইটস

উইকেট নেয়ার পর রাজশাহীর ক্রিকেটাররা আনন্দে মেতে উঠেন : নয়া দিগন্ত -

ঢাকা ডায়নামাইটসের মতো হেভিওয়েট দল বিধ্বস্ত হয়েছে। সেটাও খুব বড় কোনো দলের বিপক্ষে না। রাজশাহী কিংসের বিপক্ষে অনেকটা সাদামাটা এক ম্যাচে হেরেছে সাকিব আল হাসানের দল ২০ রানে। সিলেটের স্লো উইকেটে এ ম্যাচটাও ছিল লো-স্কোরিং। প্রথম ব্যাটিং করে কিংস খুব বেশি রান করতে পারেনি। ১৩৬ রানেই আটকে যায় শিরোপাপ্রত্যাশীদের কাছে। ওই পর্যন্ত সবই ছিল ঠিক। কিন্তু বিপত্তি দেখা যায় ডায়নামাইটসের ব্যাটিংয়ে। রাজশাহীর মতোই ব্যাটিং হচ্ছিল তাদের। একপর্যায় তাদের ইনিংসটা থামে আরো দুর্বলতম অবস্থানে গিয়ে। ৯ উইকেটে ১১৬ রান সংগ্রহে সাকিবদের দলের স্কোরটা বড্ড বেমানানও লাগে। হার তো যথারীতি ছিলই। কিন্তু এমন লড়াইয়ের আগে আত্মসমর্পণ যা আসলেই এ আসরের বড় দলের কাছে কেউ প্রত্যাশা করেনি। চরম ব্যাটিংব্যর্থতা, ও দুর্বল মানসিকতার প্রতিফলনে চলমান আসরের প্রথম পরাজয়ের স্বাদ নিয়েছে বিগ বাজেটে গড়া দলটি।
সিলেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত এ ম্যাচে টসে জিতে মেহেদি হাসান মিরাজের রাজশাহী সিদ্ধান্ত নেয় প্রথম ব্যাটিংয়ের। কিন্তু সেটা যথার্থ ছিল কি না তা বুঝা গেল ম্যাচ শেষে। কারণ, রানই হলো না। দেড় শ’র আগেই একটা টি-২০ ম্যাচের ইনিংস শেষ। সেটাকে মোটেও চ্যালেঞ্জিং স্কোর বলা যাবে না। বরবরের মতোই এ ম্যাচেও দর্শকরা তারকা খেলোয়াড়দের কাছ থেকে চার-ছক্কার মার দেখতে পারেননি। কে জিতবে, কে হারবে সেটা ম্যাচ শেষে। কিন্তু মাঠে টাকা খরচ করে সময় অপচয় করে আসেন তারা কিছুটা বিনোদন করতে। সেটা তারা পায়নি। বঞ্চিত হয়েছেন। টি-২০ আসরের উইকেট নিয়ে সমালোচনা চলছে। কিন্তু প্রায় প্রতিবারই এমনটা হয়ে আসে। এর কোনো প্রতিকার লক্ষ করা যায় না। ব্যাটিংসহায়ক উইকেট গড়লে কী ক্ষতি সেটা বোঝা যাচ্ছে না। খেলায় রাজশাহীর পক্ষে সুনীল নারিন, রুবেল হোসেন ও আন্দ্রে রাসেলদের নিখুঁত বোলিংয়ের সামনে রাজশাহীর যা করা প্রয়োজন, ততটুকুই করেছিল। বিগ বাজেটের একটা দলের বিপক্ষে ব্যাটিংয়ে নেমে ১৩৬ রানে আটকে যায় তারা ৬ উইকেট খরচায়। এর মধ্যে দীর্ঘ দিন পর বিপিএল খেলতে নামা মার্শাল আইয়ুব ছিলেন সেরা। ৩১ বলে খেলেন তিনি ৪৫ রানের এক ইনিংস। যার মধ্যে ছিল দুই ছক্কা ও তিন চারের মার। নারিনের বলে আউট হন তিনি। অন্যদের মধ্যে ওপেনার শাহরিয়ার নাফিসের ২৭ বলে করা ২৫, জাকির হাসানের ২০ ও ডাসখাটের ১৬ রান ইনিংসের উল্লেখযোগ্য। অধিনায়ক মেহেদি হাসান মিরাজ ১ রান করেই আউট ওপেনিংয়ে নেমে। নারিন তিন উইকেট নেন। ১৯ রানের বিনিময়ে উইকেট নিয়েছেন তিনি। এ ছাড়া রাসেল, সাকিব নেন একটি করে।
এরপর ১৩৭ রানের সহজ টার্গেট সামনে রেখে খেলতে নামা ঢাকা ডায়নামাইটস। কত বল হাতে রেখে দ্রুত জিতে যাবে এটাই ছিল গ্যালারিতে আলোচনার মূল। কিন্তু ঘটল উল্টো সব ঘটনা। ওপেনার সুনীল নারিনকে মিরাজ লেগ বিফোর করেই উত্তাপ ছড়িয়ে দেন রাজশাহীতে। ১১ রানের কথা। দলীয় ২৩ রানে ঘটে আরো দুই উইকেট পতন। এ সময় আউট হন হজরাতুলাল্লাহ ও বিগ ম্যান আন্দ্রে রাসেল। প্রথমটা উদানা ও দ্বিতীয়টা নেন আরাফাত সানি। ম্যাচে কিছুটা হলেও যেন উত্তাপ ছড়িয়ে পড়ে। সাকিব ও রনি তালুকদার ছিলেন এ সময় ক্রিজে। এ দু’জন ঠাণ্ডা মাথায় খেলবেন এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু না, দলীয় ৪৯ রানে আরাফাত সানির শিকারে পরিণত হয়ে যান সাকিব। এরপর আরো একবিপর্যয় ডায়নামাইটসের। সেটা রনি আউট ৫৩তে। ব্যাস, ম্যাচ হয়ে যায় ফিফটি-ফিফটি। কায়রন পোলার্ডের ওপর একটা ভরসা ছিল। কিন্তু সেটাও হয়নি। রাব্বির বলে আউট হন তিনি। এরপর রান সংগ্রহের গতিও যায় স্লো হয়ে। রুবেল, নুরুল হাসানদের কিভাবে কন্ট্রোল করতে হয় সেটা বেশ ভালই জানা ছিল মিরাজের। সেটাই হয়েছে। ডায়নামাইটসের ইনিংস শেষ ১১৬তে। আরাফাত সানি নেন তিন উইকেট, মিরাজ নিজে নেন দু’টি। মুস্তাফিজ তার চার ওভারে ১৯ রান দিয়ে নিয়েছেন এক উইকেট। আরাফাত সানি ম্যান অব দ্যা ম্যাচের পুরস্কার লাভ করেন।


আরো সংবাদ



premium cement