২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

মিগুয়েল গার্সেলোদের ষষ্ঠ বিশ্বকাপ

-

রাশিয়া এখন বিদেশী ফুটবলপ্রেমীদের আখড়া। বিশ্বকাপ দেখতে তারা এখন কেউ মস্কোতে, কেউবা সচি. সেন্টপিটার্সবার্গ বা অন্য বিশ্বকাপ ভেনুতে। ফ্যান আইডি সংগ্রহের জন্য এই ফুটবল পাগলদের বড় একটা অংশ এখন ভিড় করছেন লুঝনিয়াকি স্টেডিয়ামে। সবাই যার যার দেশের পতাকা সাথে রেখে আগাম পরিচয় জানিয়ে দিচ্ছেন। কাল স্টেডিয়ামে ঢুকতেই চোখে পড়ল দুই আর্জেন্টাইন বুড়োবুড়িকে। তাদের হাতে আর্জেন্টিনার পতাকা। তবে আকাশি নীল- সাদা পতাকার মাঝখানে অন্য ছয় দেশের পতাকা দেখে একটু বিস্মিতই হতে হলো। তাদের পতাকায় তো সূর্যের ছবি থাকে। ভেতরে মানুষের মুখ। তা ঠিকই আছে, কিন্তু অন্য অন্য দেশের পতাকা কেন? জিজ্ঞাসা করতেই মিগুয়েল ম্যাক্সিমের উত্তর, আমি এই পাঁচ দেশে গিয়ে বিশ্বকাপ ফুটবল দেখেছি। এবার এলাম রাশিয়ায়। তাই ছয় দেশের পতাকা।
মিগুয়েল অবশ্য একা আসেননি। সাথে তার স্ত্রী গার্সেলো, ছেলে মার্সেলো এবং ছেলের বান্ধবী অ্যাশলে। সবাই ফুটবলপ্রেমী। আরেকটু বাড়িয়ে বললে বিশ্বকাপ পাগল। বয়স ৭০ পেরিয়ে গেছে মিগুয়েলের। তার স্ত্রীর বয়সও তেমন। মিগুয়েল জানান, আমি ১৯৯৪ সাল থেকে নিয়মিত বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার খেলা দেখছি। সাথে আমার জীবন সঙ্গিনীও।’ ৪০ বছর ধরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে থাকছে মিগুয়েলের পরিবার। তাই ৯৪-এর যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বকাপ দিয়েই তাদের যাত্রা শুরু। এরপর ১৯৯৮-এ ফ্রান্স, ২০০২ সালে জাপান-কোরিয়া, ২০০৬ সাল জার্মানি, ২০১০ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা এবং ২০১৪ সালে জামাই-বউ মিলে বিশ্বকাপ খেলা দেখেছেন সরাসরি স্টেডিয়ামে বসে। এর পরেই অবস্থান ছেলে মার্সেলোর। তিনি দেখেছেন গত চারটি বিশ্বকাপ। অবশ্য ছেলের বান্ধবী অ্যাশলের এবারই অভিষেক হচ্ছে বিশ্বকাপের মাঠে। মিগুয়েলের দেয়া তথ্য, আমার মেয়েও ফুটবলপ্রেমী। সে অবশ্য এখন ভীষণ ব্যস্ত মার্কিন মুল্লুকে। তাই সে আসতে পারেনি।
গত পাঁচ বিশ্বকাপের মধ্যে মিগুয়েলের কাছে আর্জেন্টিনাকে শক্তিশালী মনে হয়েছে ২০০৬ ও ২০১৪ এর দলকে। বিশেষ করে গতবারের মেসি বাহিনীকে। জানান, ফাইনালে ওভাবে গোল মিস না করলে তো আর্জেন্টিনাই চ্যাস্পিয়ন হতো। ২০০৬ সালে টাইব্রেকারে হারের কষ্ট এখনো তাকে তাড়িয়ে বেড়ায়। অবশ্য এবার মেসিরা চ্যাম্পিয়ন হবে এমনটা জোর দিয়ে বলতে পারলেন না এই সাবেক অপেশাদার ফুটবলার। ছেলে মার্সেলোর মতে, ‘আর্জেন্টিনার এবারের দলে কোনো ধারাবাহিকতা নেই। এক ম্যাচ ভালো খেলে তো পরের খেলাতেই ছন্দ পতন। ইনজুরির জন্য দুই ফুটবলার বাদ। সব মিলিয়ে আমি আশা দেখছি না।’ মিগুয়েল অবশ্য অপেক্ষায় মেসি ঝলকের।
এই পরিবার শুধু আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ ম্যাচ দেখেন। এর বাইরে ২০১৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিত কোপা আমেরিকাও মাঠে বসে উপভোগ করেছেন তারা। জানালেন মিগুয়েল।
এরা যখন সাক্ষাৎকার দিচ্ছেলেন তখন পেছন থেকে কলম্বিয়ার পতাকা হাতে ঢুকে পড়েন কয়েক কলম্বিয়ান। তাদের মুখে নিজ দেশের নাম উল্লেখ করে চ্যাম্পিয়ন, চ্যাম্পিয়ন স্লোগান।

 


আরো সংবাদ



premium cement