২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

বিএনপি নেতা মুক্তিযোদ্ধা মোজাফফর হোসেনের ইন্তেকাল

রংপুরে দলীয় কার্যালয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন, মহাসচিবসহ বিভিন্ন মহলের শোক
মোজাফফর হোসেনের মৃত্যুতে সব শ্রেণী-পেশার মানুষের মাঝে শোক নেমে আসে - ছবি : নয়া দিগন্ত

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প বিষয়ক সম্পাদক, মুক্তিযোদ্ধা দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি, রংপুর মহানগর সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা মোজাফফর হোসেন ইন্তেকাল করেছেন।

রোববার রাত পৌনে ৯টায় স্ট্রোক করে রংপুর কমিউনিটি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬৭ বছর।

বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্য দিয়ে বাসায় ফিরে স্ট্রোক করেছিলেন তিনি।

সব শ্রেণী-পেশার মানুষের প্রিয় মুখ সজ্জন রাজনীতিবিদ হিসেবে পরিচিত মোজাফফর হোসেনের মৃত্যুতে শোকে মুহ্যমান রংপুরবাসী। তার লাশে শ্রদ্ধা জানানোর জন্য দুপুর সাড়ে ১২টায় নেয়া হয় গ্রান্ড হোটেল মোড়ের দলীয় কার্যালয়ে।

রংপুর মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম মিজু নয়া দিগন্তকে জানান, গতকাল রোববার বাদ আসর একই সাথে বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা সভাতে অংশগ্রহণ করি আমরা। আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন তিনি। সভা শেষ করে দ্রুত বাসায় যান মাগরিবের নামাজ পড়ার জন্য। নামাজ শেষে রাত আটটার দিকে তার শরীর খারাপ লাগতে শুরু করলে তিনি নিজেই দ্রুত জীপ বের করার কথা বলেন। জীপে করে তাকে রংপুর কমিউনিটি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে নেয়া হয়। সেখানেই মারা যান তিনি।

মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, দুই কন্যা ও এক পুত্র সন্তানসহ হাজার হাজার রাজনৈতিক সহকর্মী এবং গুনগ্রাহী রেখে যান। রাজনীতি ছাড়াও তিনি রংপুরের বিভিন্ন সামাজিক ও পেশাজীবী সংগঠনেও সফল নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।

রংপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রইচ আহমেদ নয়া দিগন্তকে জানান, আজ সোমবার বেলা ২টায় বীরমুক্তিযোদ্ধা মোজাফফর হোসেনের জানাযা নামাজ অনুষ্ঠিত হবে শালবন মিস্ত্রিপাড়া ঈদগাহ মাঠে। তারপর মিস্ত্রিপাড়া কবরস্থানে তাকে কবরস্থ করা হবে।

এদিকে বিনয়ী এই রাজনীতিকের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার সাথে সাথেই শোকে স্থবির হয়ে যান বিএনপির নেতাকর্মীরা। হাসপাতালে ছুটে যান জেলা বিএনপির সভাপতি সাইফুল ইসলাম, মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রইচ আহমেদ, জেলা যুবদল সভাপতি নাজমুল আলম নাজু, মহানগর যুবদল সভাপতি মাহফুজ ইন নবী ডন, জেলা যুবদল সেক্রেটারী সামসুল হক ঝন্টু, মহানগর যুবদল সেক্রেটারি লিটন পারভেজ, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মনিরুজ্জামান হিজবুল, মহানগর ছাত্রদল সভাপতি নুর হাসান সুমন, সেক্রেটারি জাকারিয়া ইসলাম জীম।

হাসাপাতালে থেকে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় তার শালবন মিস্ত্রিপাড়ার বাসায়। প্রিয় মানুষকে শেষবারের মতো দেখতে হাজার হাজার নেতাকর্মী, সহকর্মী শুভানুধ্যায়ীরা ভির করেন বাসায়। তাকে দেখতে আসের সিটি মেয়র ও জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা, জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোছাদ্দেক হোসেন বাবলু, মহানগর কমান্ডার বীরমুক্তিযোদ্ধা সদরুল আলম দুলু, মহানগর বিএনপির সেক্রেটারি এসএম ইয়াসির, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তুষারকান্তি মন্ডলসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীসহ সব শ্রেণী-পেশার মানুষ।

রংপুর জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের কমান্ডার মোছাদ্দেক হোসেন বাবলু নয়া দিগন্তকে জানান, মুক্তিযুদ্ধের সময় একই সাথে মোজাফফর হোসেন ৬নং সেক্টরে সম্মুখ সমরে অংশ নিয়েছিলেন। তিনি একজন দেশপ্রেমিক খাঁটি মুক্তিযোদ্ধা ও ভদ্র রাজনীতিবিদ ছিলেন।

এদিকে, তার লাশ দলীয় কার্যালয়ে আনার পর সেখানে রংপুর সিটি মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা, বিএনপির রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলুসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ তার লাশে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।

তার মৃত্যুতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, মহাসচিব ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের, মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা, রংপুর সিটি মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফাসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক এবং পেশাজীবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ শোক জানিয়েছেন।


আরো সংবাদ



premium cement