২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

অদৃশ্য সাপ আতঙ্কে লাখো মানুষ

‘অদৃশ্য সাপ’ আতঙ্কে লাখো মানুষ। - সংগৃহীত

‘অদৃশ্য সাপ’ আতঙ্কে আতঙ্কিত পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলা ও নাটোর জেলার বড়াইগ্রাম উপজেলা মানুষ। বিশেষ করে আতঙ্কিত হচ্ছেন শিশুরা। ছোবল দেয়ার পরে কেউ সাপ বা পোকা দেখতে না পারলেও কিছুক্ষণ পরে শরীরে অনুভূতি হচ্ছে জ্বালা-পোড়া। খেয়াল করলে বোঝা যাচ্ছে ছোবলের দাগ ও রক্ত। কিছুক্ষণ পর শরীর হয়ে যাচ্ছে কালো। প্রায় শতাধিকের বেশি মানুষ এ ছোবলের শিকার হয়েছেন বলে জানা গেছে।

ঈশ্বরদী ও পার্শ্ববর্তী নাটোর জেলার বড়াইগ্রাম উপজেলার সব বয়সী ছেলে মেয়ের মধ্যে অদৃশ্য সাপ আতঙ্ক বিরাজ করছে। যা প্রতিদিনই বৃদ্ধি পাচ্ছে নতুন নতুন গ্রাম। এ সাপের ছোবল থেকে রক্ষা পেতে শিশুরা হাতে বাঁধছে লাল সুতা। কেউ কেউ কোরআন শরীফের বিভিন্ন আয়াত লিখে তাবিজ বানিয়ে ব্যবহার করছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঈশ্বরদীর মুলাডুলি ইউনিয়নের বাঘহাচলা এলাকার স্কুল শিক্ষক আব্দুস সাত্তার জানান, সোমবার আমার বাঘহাচলা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দুইজন ছাত্রী আক্রান্ত হওয়ার কথা বললে তাদের দংশনের স্থান হাতে কোন চিহ্ন পাওয়া যায়নি। তবে তিনি জানান জনৈক কবিরাজের কাছ ফিরত আসার পর নাকি চিহ্ন পাওয়া যাচ্ছে বলে আমি শুনেছি। আবার কেউ কেউ বলেন, এলাকার সাধারণ মানুষ গুজব হিসেবে মনে করছিল। কিন্তু যখন পর্যায়ক্রমে এ গুজব চলে এলো গ্রামে গ্রামে, ঘরে ঘরে তখন আর কেউ এ ‘অদৃশ্য সাপ’কে অবিশ্বাস মনে হচ্ছে না।দাশুড়িয়া ইউনিয়নের এক ব্যক্তি জানান, আমার পরিবারে দুই সদস্য অসুস্থ হয়ে পড়লে পড়ে ওঝা নিয়ে এসে বিষ তোলার পর এখন তারা সুস্থ।

মুলাডুলি ইউনিয়নের কলেজ শিক্ষক আব্দুল মোত্তালিব জানান, তার এক প্রতিবেশি রবিবার রাতে জ্বালা-পোড়া অনুভুত হলে তিনি কবিরাজ বা কোন চিকিৎসকে কাছে না গিয়েও সে সুস্থ।

দাশুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম বকুল সরদার জানান, এ অদৃশ্য সাপের ছোবলের কথা প্রথমে শোনা যায়, নাটোর জেলার বড়াইগ্রাম থানার রাজাপুর ইউনিয়নে। এর পরেই চলে আসে পাবনা জেলার ঈশ্বরদী থানার মুলাডুলি ইউনিয়নে। রোববার থেকে চলে এসেছে পাবনা ঈশ্বরদী থানার দাশুড়িয়া ইউনিয়নে। পর্যায়ক্রমে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে বিভিন্ন গ্রামে।

এ ব্যাপারে উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার হাসান উদ্দিন চৌধুরী বলেন, এইটা ভিত্তিহীন একটি খবর। বাস্তবে এরকম অদৃশ্য কোনো সাপ নেই। তাই ভয় পাওয়ার কিছুই নেই। এ ধরনের ঘটনা মাস হিস্টিরিয়া হতে পারে। মানে ভয় বা আতঙ্ক অতি দ্রুত একজন থেকে আরেক জনে ছড়িয়ে পড়ছে। আমরা সরেজমিন গিয়ে দেখেছি, এ ঘটনায় কেউ মারা যায়নি।

তিনি আরও বলেন, বাস্তবে খোঁজ নিয়ে দেখেন কাউকে সাপে কাটেনি/সাপে কাটার কোনো দাগও নাই। অনেক সময় দেখা যায় কোনো স্কুল বা কলেজে কোনো কারণ ছাড়াই একসঙ্গে অনেক স্টুডেন্ট জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। আসলে কোনো রোগের কারণে তাদের এমন হয় না। ভয় বা আতঙ্ক দ্রুত একজন স্টুডেন্ট থেকে আরেজনে ছড়িয়ে পড়ে, ফলে তাদের একই রকম শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন লক্ষণ দেখা যায়। এটাই মাস হিস্টিরিয়া। কয়েক বছর আগে বর্ষার সময় এমন আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছিল। পরবর্তীতে দেখা গেলো সাপ নয়। ঢোলকমলি ফুলের ভেতর এক ধরনের পোকা থাকে সেই পোকার কামড় এবং তা থেকে আতঙ্কের কারণে এমন হয়েছিল। তখন ঈশ্বরদীতে ঢোলকমলি কাটা শুরু হয়েছিল। এটা আতঙ্ক ছাড়া আর কিছু নয় বলে জানান উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার।

এ ব্যাপারে ঈশ্বরদী থানার ওসি আজিম উদ্দীন বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছু শুনি নাই।


আরো সংবাদ



premium cement
যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশী শ্রমিকদের ভিসা সহজ করার আহ্বান প্রবাসী প্রতিমন্ত্রীর চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিদ্বন্দ্বী না হয়ে অংশীদার হওয়া উচিত : শি জিনপিং ওকাব সভাপতি নজরুল ইসলাম, সম্পাদক জুলহাস আলম পাবনায় ১০ কোটি টাকার অনিয়মে ৩ ব্যাংক কর্মকর্তা কারাগারে চুয়েট ১১ মে পর্যন্ত বন্ধ, শিক্ষার্থীদের আন্দোলন স্থগিত নরসিংদীতে হিট স্ট্রোকে শিশুর মৃত্যু হিলিতে ভটভটি-মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে নিহত ২ ‘গাজার ধ্বংসাবশেষ পরিষ্কার করতে ১৪ বছর লাগতে পারে’ সখীপুরে ছাগল চুরির মামলায় মা-ছেলে কারাগারে ‘অন্যায়ের সাথে নয়া দিগন্তের সাংবাদিকরা কখনোই আপোষ করেন না’ রাজশাহীতে হলে ঢুকতে না দেয়ায় রাস্তায় বিসিএস পরীক্ষার্থীর কান্না

সকল