২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

বগুড়ায় শিশু রিফাত খুনের রহস্য উন্মোচন

-

বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার চাঞ্চল্যকর শিশু রিফাত (৮) অপহরণ ও খুনের রহস্য উদ্ঘাটন ও ঘটনার সাথে জড়িত আসামি গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা হলো- সজীব (১৯), আবুল কালাম আজাদ ওরফে কালাম (২৮), পাঁচ ফুল, মেহেদী, বায়েজিদ, জাহিদ, বোরহান, মাসুদ, সেলিম।
বগুড়া জেলা পুলিশ জানায়, গত ১৫ জুলাই সন্ধ্যা থেকে গোহাইল ইউনিয়নের খাদাস বাজারের ব্যবসায়ী সাবেক কুয়েত প্রবাসী এনামুল হকের ৮ বছরের শিশুপুত্র রিফাত হারিয়ে যায়। তাকে পরিবারের সদস্য এবং গ্রামবাসী রাতভর খুঁজে না পেয়ে পরদিন ইউপি চেয়ারম্যানের সাথে পরামর্শ করে তারা থানায় সাধারন ডায়েরি করেন। ১৬ জুলাই সকাল নয়টার দিকে রিফাতের বাবা এনামুলের মোবাইল নম্বরে ফোন করে ৫লক্ষ টাকা দাবি করে বলা হয় টাকা নিয়ে জামাদারপুকুর বাসস্ট্যান্ডে আসতে এবং পুলিশকে না জানাতে। পুলিশ বিষয়টা জানতে পেরে একটু কৌশলী ভূমিকা গ্রহন করে। কিন্তু কেউই টাকা নিতে আসেনি। ফোনটা কল করার পর থেকে বন্ধ পাওয়া যায়। তথ্য বিশ্লেষন করে পুলিশ ঘটনার সাথে জড়িতদের পরিচয় নিশ্চিত হয় এবং একাধিক আসামী আটক করে। কিন্তু কোনভাবেই তাদের মুখ খুলতে পারছিল না। এক পর্যায়ে ১৮ জুলাই সকালে শিশু রিফাতের অর্ধগলিত লাশ পোয়ালগাছা ভদ্রাবতী নদীর সিংহবাড়ি ব্রিজের নিচ থেকে উদ্ধার হয়। লাশ পাবার পর রিফাতের বাবা এনামুল বাদি হয়ে কয়েকজনের নাম দিয়ে থানায় মামলা করেন। এজাহারভুক্তদের মধ্যে একজন আবুল কালাম আজাদ ওরফে কালাম (২৮)। সাথে তার এক ঘনিষ্ঠ নিকটাত্মীয় ছিল।
এজাহারে তিনি জানান, তার গ্রামের কালাম তার কাছ থেকে অনেকদিন যাবত টাকা ধার চায়। টাকা না দেয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে সে এ কাজ করতে পারে। কালাম আগে থেকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক ছিল। তার কাছ থেকে ঘটনা জানার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করে পুলিশ। কিন্তু জিজ্ঞাসাবাদের সকল কৌশল ব্যর্থ হলে পুলিশি তদন্তের সবধরনের কৌশল প্রয়োগ করা হয়। অবশেষে মোবাইল কল এনালাইসিস করে ধীরে ধীরে ঘটনা স্পষ্ট হতে থাকে। আটক করা হয় সজীব (১৯) নামক এক অটোরিক্সাচালককে। তার কাছে জানা যায় পুরো ঘটনা।
অটোরিক্সা চালক সজীব জানায়, ১৫ জুলাই সন্ধ্যায় কালাম এবং তার এক নিকটাত্মীয় সজীবের অটোরিক্সায় জামাদারপুকুর থেকে উঠে আরেকটু এগিয়ে আসার পর পাঁচ ফুল, মেহেদী এবং বায়েজিদ নামে তিনজন শিশু রিফাতকে নিয়ে গাড়িতে ওঠে। তারা শিশুটিকে পাখি দেখানোর কথা বলে বাজার থেকে কৌশলে বের করে নিয়ে আসে। আর একটু এগিয়ে মফিজুল নামে আরেকজন তাদের সাথে যোগ দেয়। পিছন পিছন আরেকটি ব্যাটারি চালিত ভ্যানে ছিল জাহিদ, বোরহান, মাসুদ ও সেলিম। তারা সবাই গিয়ে যে সিংহবাড়ি ব্রিজের নিচে লাশ পাওয়া যায় সেখানে গিয়ে নামে। তাদের নামিয়ে দিয়ে সজীব গাড়ি নিয়ে শেরপুরের গাড়িদহ চলে যায়। এরপর কালাম, তার সেই নিকটাত্মীয় এবং মফিজুল বাচ্চাটিকে নিয়ে নদীর ভেতর নামে। মফিজুল বাচ্চাটির পা ধরে কালাম হাত ধরে এবং আরেক জন ছেলেটিকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। এরপর ভদ্রাবতী নদীর কচুরিপানার ভিতর লাশ ফেলে দিয়ে উপরে চলে আসে। সজীব গাড়িদহ থেকে ফিরে আসার সময় তাদের নিয়ে আবার খাদাস গ্রামে চলে আসে। পুলিশ জানায়, ঘটনায় জড়িত ১১ জনের মধ্যে ১০ জনুকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এদের মধ্যে ৭ জন আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে এই চাঞ্চল্যকর মামলার চার্জশীট দেয়া হবে বলে বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সনাতন চক্রবর্তী জানিয়েছেন।
শাজাহানপুর থানার ওসি জিয়া লতিফুল ইসলামের তত্ত্বাবধানে ইন্সপেক্টর (তদন্ত) আবুল কালাম আজাদ এই অপহরণ ও খুনের ঘটনার রহস্য উদঘাটন করেছেন বলে পুলিশ জানায়।


আরো সংবাদ



premium cement
চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিদ্বন্দ্বী না হয়ে অংশীদার হওয়া উচিত : শি জিনপিং ওকাব সভাপতি নজরুল ইসলাম, সম্পাদক জুলহাস আলম পাবনায় ১০ কোটি টাকার অনিয়মে ৩ ব্যাংক কর্মকর্তা কারাগারে চুয়েট ১১ মে পর্যন্ত বন্ধ, শিক্ষার্থীদের আন্দোলন স্থগিত নরসিংদীতে হিট স্ট্রোকে শিশুর মৃত্যু হিলিতে ভটভটি-মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে নিহত ২ ‘গাজার ধ্বংসাবশেষ পরিষ্কার করতে ১৪ বছর লাগতে পারে’ সখীপুরে ছাগল চুরির মামলায় মা-ছেলে কারাগারে ‘অন্যায়ের সাথে নয়া দিগন্তের সাংবাদিকরা কখনোই আপোষ করেন না’ রাজশাহীতে হলে ঢুকতে না দেয়ায় রাস্তায় বিসিএস পরীক্ষার্থীর কান্না সালমান-শাকিবের পর এবার জয়কে টার্গেট!

সকল