২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`


একজন ভোটারের অভিজ্ঞতা

একজন ভোটারের অভিজ্ঞতা - ছবি : সংগৃহীত

অতীতেও বিভিন্ন নির্বাচনে ভোট দিয়েছি। এবারও সংসদ নির্বাচনে ভোট দেয়ার জন্য গেলাম। লম্বা লাইন। পেছনে দাঁড়ালাম। লাইন এগোচ্ছে না। আমার চেনা, দু’জন আওয়ামী লীগ কর্মী আমাকে দাঁড়ানো দেখে কেন্দ্রের ভেতর থেকে তাড়াতাড়ি এসে লাইন বাদ দিয়ে কর্মরত আনসারকে বলে আমাকে ভেতরে নিয়ে গেল এবং বলল ‘স্যারকে তাড়াতাড়ি ব্যালট দিন’। কোনো অমোচনীয় কালি লাগাল না।

পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিলাম। আমার পর আর একজন ঢুকে একটি নম্বর দিলো। পোলিং অফিসার তার নাম, বাবার নাম কিছুই জিজ্ঞেস করলেন না, ছবিও মেলালেন না; শুধু একটি নম্বরে টিক মার্ক দিলেন। যেহেতু আমার গ্রামের বুথ, তাই ভোটাররা আমার চেনা। লক্ষ করলাম- পোলিং অফিসার যে নম্বরে টিক মার্ক দিলেন তার সাথে ওই ভোটারের বা তার বাবার নামের কোনো মিল নেই। তার আঙুলেও কোনো অমোচনীয় কালি লাগানো হলো না। সে ভোট দিয়ে আবার ভোট দেয়ার জন্য লাইনে দাঁড়াল। আমি দেখলাম, ভেতরে আওয়ামী লীগ ছাড়া আর কোনো দলের পোলিং এজেন্ট নেই। বেরিয়ে এলাম, দেখলাম- লম্বা লাইন একটুও এগোচ্ছে না। বুঝতে পারলাম লোকগুলো লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে একজন করে একেকবার সেখান থেকে গিয়ে ‘ভোট দিয়ে’ ফিরে এসে আবার লাইনে দাঁড়াচ্ছে।

পরে জানলাম, টাকার বিনিময়ে এভাবে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার জন্য তাদের নিয়োগ করা হয়েছে। লাইনের কাছাকাছি আনসার থাকলেও কোনো পুলিশ সদস্য নেই। দু’জন পুলিশ একটু দূরে দাঁড়িয়ে আওয়ামী লীগের ইউনিয়ন সভাপতির সাথে কথা বলছিলেন। পরিচিত একজনকে জিজ্ঞেস করলাম, বিএনপি কাকে এজেন্ট করেছে? তিনি তার নাম বললেন। একটু দূরে তাকে পেয়ে বললাম, তুমি না এজেন্ট, বাইরে কেন? সে বলল, এমনিতে গায়েবি মামলার আসামি আমি। যে অবস্থা চলছে প্রতিবাদ করে কি আরো মামলার আসামি হবো? তাই বের হয়ে চলে এসেছি।’ বিএনপির তেমন কোনো নেতাকে দেখলাম না কোথাও। শুনলাম তারা মামলা-হামলায় আগেই এলাকা ছাড়া। এর মধ্যে সেনাবাহিনীর টহলদল এসে ঘুরে গেল। তারা ভোটকেন্দ্রের ভেতরে প্রবেশ করেননি। ফিরে আসার পথে দেখলাম, একদল লোক দাঁড়িয়ে আছে।

তারা ভোট দিতে আসা লোকজনকে ফিরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছে এবং বলছে, ‘আপনার ভোট দেয়া হয়ে গেছে। আরেকটু এগিয়ে দেখলাম, আরেক দল দাঁড়িয়ে আছে। তারা বলছে- ব্যালট পেপার শেষ হয়ে গেছে; এখন গিয়ে লাভ নেই।’ এ বলে কেন্দ্রে যেতে ইচ্ছুক লোকজনকে নিরুৎসাহিত করছে। একজন মহিলা বললেন, আমার হাত থেকে ব্যালট নিয়ে ওরাই সিল মেরেছে। আরেক জন মহিলার কথা, আপনাকে ব্যালট দেয়া হবে, তবে আমাদের সামনে নৌকায় সিল দিতে হবে। এটা শুনে আমি অস্বীকার করায় আমাকে ব্যালট দেয়া হয়নি।’

একজন পুরনো ভোটার হিসেবে এটা আমার সম্পূর্ণ নতুন অভিজ্ঞতা। জানি না, অন্যান্য কেন্দ্রে ৩০ ডিসেম্বর কী ধরনের ভোট হয়েছে। নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনের অনেকের আত্মীয়স্বজন দেশের বিভিন্ন স্থানে আছেন, তাদের থেকে খোঁজ নিলে কিংবা ভোট শেষে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে ভোটকেন্দ্রে ভোটার নম্বরে টিক দেয়া যে তালিকা জমা দেয়া হয়েছে, তাতে কতজন প্রবাসীর এবং মৃত ব্যক্তির, অন্যত্র ভোটের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তির নম্বরে চিহ্ন দেয়া আছে, তা মেলালে নির্বাচনের সঠিক চিত্র পাওয়া যাবে।
মো: ইয়াছিন মজুমদার
শ্রীরামপুর, নাঙ্গলকোট, কুমিল্লা


আরো সংবাদ



premium cement
গাজায় গণহত্যা বন্ধের আহ্বান জানালো উত্তর আয়ারল্যান্ডের ফার্স্ট মিনিস্টার হোসেনপুরে চাঞ্চল্যকর হত্যায় ভাতিজা গ্রেফতার দেশের সর্বোচ্চ ৪৩ ডিগ্রি তাপমাত্রা রেকর্ড চুয়াডাঙ্গায় সীমান্তে গুলির শব্দ নেই, তবুও আতঙ্কে স্থানীয়রা রাঙ্গাবালীর খালে পাওয়া টর্পেডো উদ্ধার করেছে নৌ-বাহিনী লক্ষীপুরে বিজয়ী ও পরাজিত উভয় চেয়ারম্যান প্রার্থী আটক ৩৪ বছরেও মুছেনি ভয়াল ২৯ এপ্রিলের দুঃসহ স্মৃতি যশোরে দেশের সর্বোচ্চ ৪২.৮ ডিগ্রি তাপমাত্রা রেকর্ড উত্তর ইসরাইলে হামাসের রকেট হামলা প্রচণ্ড গরমে বেতাগীতে ৪ শিক্ষার্থী শ্রেণিকক্ষে অসুস্থ মৌলভীবাজার কাল বৈশাখীর তাণ্ডবে ২৪ ঘণ্টা পরেও মিলছে না বিদ্যুৎ

সকল