লোহাগড়ায় আ’লীগ নেতা বদর হত্যাকাণ্ড বাবার হত্যাকারীদের ফাঁসি চায় শিশু সাঈদ
- নড়াইল সংবাদদাতা
- ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০০:০০
নড়াইলের লোহাগড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা বদর খন্দকারকে (৪০) কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় জড়িতদের ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল, মানববন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। লোহাগড়া উপজেলাবাসীর ব্যানারে গত বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলা পরিষদের সামনের সড়কে এসব কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে কান্নাজড়িত কণ্ঠে নিহত বদর খন্দকারের আট বছরের শিশু সন্তান সাঈদ বাবার হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবি করে। চতুর্থ শ্রেণীর শিক্ষার্থী সাঈদ বলে, আমার মতো শিশু বয়সে আর কাউকে যেন এতিম করা না হয়। নিষ্ঠুর-নির্দয়ভাবে কারোর বাবাকে কুপিয়ে হত্যা করা না হয়। আমি এবং আমার ছোট্ট ফুটফুটে বোন বাবার হত্যাকারীদের ফাঁসি চাই। যথাযথ শাস্তি চাই। আর যেন কোনো সন্তানকে পিতাহারা হতে না হয়।
মানববন্ধন ও সমাবেশ আরো বক্তব্য রাখেনÑ লোহাগড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা শিকদার আব্দুল হান্নান রুনু, ভাইস চেয়ারম্যান বি এম কামাল হোসেন, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ফারহানা ইয়াসমিন ইতি, জেলা পরিষদ সদস্য ও লোহাগড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শেখ সাজ্জাদ হোসেন মুন্না, কাশিপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান, আওয়ামী লীগ নেতা আজিজুর রহমান আর্জু, গোলাম মোস্তফা, নিহত বদর খন্দকারের বড় ভাই বাবর খন্দকার প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, অবিলম্বে বদর খন্দকার হত্যাকারীদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শান্তি দিতে হবে। বদরের মতো আর কোনো হত্যাকাণ্ড আমরা দেখতে চাই না। এসব কর্মসূচিতে লোহাগড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুন্সী আলাউদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মশিয়ুর রহমানসহ আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন না। তবে লোহাগড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের ব্যানার হাতে কয়েকজন যুবক ও ছাত্রকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।
এর আগে বদর খন্দকার হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবিতে লোহাগড়া ইউনিয়নবাসীর উদ্যোগে কালনাঘাট এলাকা থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে উপজেলা পরিষদের সামনে সমাবেশে মিলিত হয়। এসব কর্মসূচিতে নারী-পুরুষ ও শিশুসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
বদর খন্দকার নিহতের ঘটনায় তার স্ত্রী নাজমিন বেগম বাদি হয়ে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি রাতে লোহাগড়া থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছেÑ লোহাগড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও লোহাগড়া ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান নজরুল শিকদারকে (৪৫)।
অন্য আসামিরা হলোÑ নজরুল শিকদারের বড় ভাই ইবাদত শিকদার, ভাইপো জাকারিয়া শিকদার ওরফে গফফার, ভাগ্নে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক শিক্ষা ও পাঠচক্র বিষয়ক উপসম্পাদক আব্দুল্লাহ আল আজাদ সুজন, চাচাতো ভাই এনায়েত শিকদারসহ ১৬ জন। ইতোমধ্যে দুইজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এর মধ্যে মতিউর রহমান মুন্না গত বুধবার সন্ধ্যায় নড়াইলের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমাতুল মোর্শেদার আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকরোক্তিমূলক জবানবন্দীতে আওয়ামী লীগ নেতা বদর খন্দকার হত্যায় নিজের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মিলটন কুমার দেবদাস বলেন, অন্য আসামির গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। মামলার বিবরণে জানা যায়, সামাজিক বিরোধ ও পূর্বশত্রুতার জের ধরে লোহাগড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা বদর খন্দকারকে কুপিয়ে হত্যা করে আসামিরা। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা ৬টার দিকে লোহাগড়া-নড়াইল সড়কের টি-চরকালনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনের সড়কে বদরকে কুপিয়ে রক্তাক্ত করে সন্ত্রাসীরা। খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে রাত ৯টার দিকে চিকিৎসক তাকে মৃত্যু ঘোষণা করেন।
বদর লোহাগড়া ইউনিয়নের চরবগজুড়ি গ্রামের ময়ের আলীর ছেলে এবং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নির্বাহী কমিটির সাবেক সদস্য ছিলেন। ধারালো অস্ত্রের কোপে বদর খন্দকারের বাম হাতের তিনটি আঙুল এবং ডান হাতের কবজি প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এ ছাড়া দুই পায়ের হাঁটুর নিচ থেকে প্রায় বিচ্ছিন্ন ছিল। ঘটনার দিন বদর খন্দকার চরকালনা এলাকায় নিজের ইটভাটা থেকে মোটরসাইকেলে বাড়িতে ফিরছিলেন। এ সময় বদরের কাছে ইট বিক্রির সাড়ে চার লাখ টাকা থাকলেও আসামি আকবর খন্দকার ওই টাকা নিয়ে গেছে বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে। মামলার বাদি নিহত বদর খন্দকারের স্ত্রী নাজমিন বেগম আরো বলেন, আমার স্বামীকে এর আগে ট্রাকচাপা দিয়ে হত্যার চেষ্টা করেছিলেন আসামিদের কয়েকজন। এ ব্যাপারে আমার স্বামী লোহাগড়া থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছিলেন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা