২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

বেসরকারি খাতের সাড়া নেই, সরকারই করবে কক্সবাজারে পর্যটন কমপ্লেক্স

-

বেসরকারি উদ্যোক্তাদের কাছ থেকে কোনো সাড়া না পেয়ে এবার সরকারি উদ্যোগেই তৈরি করা হবে কক্সবাজারে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন একটি পর্যটন কমপ্লেক্স। এটি বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন (বিপিসি)। এই প্রস্তাবটি অনুমোদনের জন্য অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির আগামী বৈঠকে উত্থাপন করা হচ্ছে বলে জানা গেছে ।
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে একটি সারসংক্ষেপ বৈঠকের জন্য পাঠিয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে পর্যটন শিল্পের বহুমাত্রিক বিকাশে বেসরকারি উদ্যোগকে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে পিপিপির আওতায় ‘এস্টাব্লিশমেন্ট অব ইন্টারন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড ট্যুরিজম কমপ্লেক্স অ্যাট এক্সিস্টিং ওপেন কম্পাউন্ড অ্যাট কক্সেস বাজার’ শীর্ষক প্রকল্পটি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া হয়। প্রকল্পটি ২০১৪ সালের ২ সেপ্টেম্বর অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়। এরপর দীর্ঘ সাড়ে পাঁচ বছর অতিক্রান্ত হলেও প্রকল্পের জন্য কোনো বেসরকারি বিনিয়োগকারীর সাড়া পাওয়া যায়নি বলে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি।
সূত্র জানায়, অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির পরামর্শ অনুযায়ী পরে বিস্তারিত সম্ভাব্যতা সমীক্ষা করার জন্য ট্রানজাকশন অ্যাডভাইজার নিয়োগ করা হয়। সম্ভাব্যতা যাচাই শেষ করার পর প্রকল্পের বিনিয়োগকারী নির্বাচনের জন্য এ পর্যন্ত তিনবার দরপত্র আহ্বান করা হয়। গত ২০১৭ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি আহ্বান করা প্রথম দরপত্র একই বছর ২৯ জুন খোলার সময় সীমা বেঁধে দেয়া হয়। এই দরপত্রে আপফ্রন্ট প্রিমিয়াম ১২ কোটি টাকা, প্রকল্প উন্নয়ন ফি পাঁচ কোটি টাকা (প্রতি বছর ৫ শতাংশ হারে বাড়বে) এবং কন্ট্রাক্ট পিরিওড ৫০ বছর ধরা হয়। এতে দু’টি বিনিয়োগকারী সংস্থা দরপত্র ক্রয় করে। কিন্তু উভয় সংস্থাই নন-রেসপন্সিভ হয়।
দ্বিতীয়বার ২০১৮ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর দরপত্র আহ্বান করা হয় এবং দরপত্র সংগ্রহের সময়সীমা দেয়া হয় একই বছর ১১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। সে দরপত্রে আপফ্রন্ট প্রিমিয়াম কমিয়ে ছয় কোটি টাকা করা হয়। প্রকল্প উন্নয়ন ফি ধরা হয় চার কোটি টাকা। বার্ষিক কন্ট্রাক ফি দুই কোটি টাকা (প্রতি বছর ৩ শতাংশ হারে বাড়বে) চুক্তির মেয়াদ প্রথমে ২৫ বছর এবং পরে আরো ১৫ বছর বাড়ানো যাবে। শর্ত সহজ করেও দরপত্রে কোনো সাড়া মেলেনি।
তৃতীয়বার দরপত্র আহ্বান করা হয় ২০১৯ সালের ২৬ মে এবং দরপত্র জমা দেয়ার সময় বেঁধে দেয়া হয় একই বছর ১২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। এবারের দরপত্রে আর্থিক শর্তগুলো অপরিবর্তিত রেখে চুক্তির মেয়াদ ৫০ বছর করা হলে একটি সংস্থা বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করে দরপত্রে অংশ নেয়। কিন্তু তাদের দরপত্র নন-রেসপন্সিভ হয়।
জানা যায়, তৃতীয়বারের দরপত্রে ইউএস সেন্টার ফর কো-অপারেশন অ্যান্ড ইকানমিক ডেভেলপমেন্ট (ইউসিইডি) নামক একটি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে পাওয়া দরপত্রটি মূল্যায়ন কমিটি মূল্যায়ন করে। কমিটি প্রস্তাবটি নন-রেসপন্সিভ ঘোষণা করে তা বিপিসিকে জানিয়ে দেয়। বিপিসি পরে তা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে অবহিত করে।
এ অবস্থা অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির ২০১৯ সালের ৮ মে তারিখে অনুষ্ঠিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তৃতীয় দরপত্র আহ্বান করেও কোনো দরদাতা নির্বাচন না হওয়ায় বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের প্রকল্পটি পিপিপি থেকে প্রত্যাহার করে নেয়। সিদ্ধান্ত নেয়া হয়, সরকারি অনুদানে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির আওতায় বাস্তবায়নের লক্ষ্যে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে আবার উপস্থাপন করা হবে। সে অনুযায়ী প্রস্তাবটি আগামীকাল অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে উত্থাপন করা হতে পারে।


আরো সংবাদ



premium cement