২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

গণপূর্তের দু’জন অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে দুদকে তমা’র অভিযোগ

-

গণপূর্ত অধিদফতরের দু’জন অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মোসলেহ উদ্দিন ও ড. মইনুল ইসলামের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) অভিযোগ করেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তমা কনস্ট্রাকশন। এতে তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ করা হয়েছে।
অভিযোগপত্রে তমা কনস্ট্রাকশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, গণপূর্ত অধিদফতরের দু’জন অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মোসলেহ উদ্দিন ও ড. মইনুল ইসলামের সীমাহীন দুর্নীতির ফলে প্রতিষ্ঠানটি ডুবে যেতে বসেছে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী ও গণপূর্ত মন্ত্রীর জিরো টলারেন্স নীতির কোনো তোয়াক্কাই করেননি গণপূর্ত অধিদফতরের দুই অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মোসলেহ উদ্দিন ও ড. মইনুল ইসলাম। এ দুই অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী বিভিন্ন ঠিকাদার থেকে পার্সেন্টেজ নিয়ে কাজ পাইয়ে দিতেন। অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী ড. মঈনুল ইসলাম অতীতে উচ্চশিক্ষার জন্য তিন বছরের ছুটি নিয়ে বিদেশ গমন করেন। পরবর্তীতে তিনি বিনা ছুটিতে আরো ছয় বছর বিদেশে ছিলেন। এ সময় চাকরি শৃঙ্খলা ভঙ্গ করায় তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয় এবং তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়ের করা হয়। দীর্ঘ প্রায় ৯ বছর পর দেশে ফিরে তিনি গণপূর্ত মন্ত্রণালয় ও গণপূর্ত অধিদফতরের কয়েকজন কর্মকর্তাকে বিশেষ উপঢৌকনের মাধ্যমে ম্যানেজ করে আদালতে জাল কাগজপত্র জমা দিয়ে চাকরিতে স্বপদে ফিরে আসেন। গত ২০১৮ সালের ৫ জুন র্যাব সদর দফতরের কাজের জন্য টেন্ডার আহ্বান করা হয়। এ সময়ের টেন্ডার নিষ্পত্তির চেয়ারম্যান ছিলেন গণপূর্তের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী প্রকল্প ও বিশেষ প্রকল্পের (পিএনএসপি) বর্তমান কর্মকর্তা ড. মঈনুল ইসলাম। প্রচলিত বিধি অনুযায়ী প্রকল্পের দরপত্র গণপূর্তের ঢাকা সার্কেল-৩ থেকে আহ্বান ও তৎকালীন ঢাকা গণপূর্ত জোন থেকে মূল্যায়ন দেয়ার কথা। র্যাব সদর দফতরের কাজের টেন্ডার গণপূর্তের ঢাকা সার্কেল-৩ এর অধীনে কিন্তু কোনো নিয়মনীতি না মেনে বর্তমান অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী ড. মঈনুল ইসলাম এবং তৎকালীন প্রধান প্রকৌশলী মো: রফিকুল ইসলামের সাথে যোগসাজশে অতিরিক্ত কমিশন আদায়ের জন্য গণপূর্তের সদর দফতর থেকে টেন্ডার আহ্বান করা হয়। উত্তরাতে র্যাবের হেডকোয়ার্টার নির্মাণে ৫৫০ কোটি টাকার কাজে সমান সমান অথবা কিছু কমে নেয়ার কথা, সেখানে ১০ শতাংশ বেশিতে কাজ দিয়েছেন জি কে শামীমের প্রতিষ্ঠান জিকে বিল্ডার্সকে। এমনিভাবে সরকারের বড় অংশের ক্ষতি করে নিজের পকেট ভারী করেছেন ড. মঈনুলসহ তার সহযোগীরা। এ ছাড়া সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্বাধীনতা স্তম্ভ ভবন নির্মাণে ১৫০ কোটি টাকার প্রকল্প ৫ শতাংশ বেশিতে একজন ঠিকাদারকে দিয়ে তার থেকে ১৩.৫ শতাংশ হারে ঘুষ নিয়েছেন ড. মঈনুল ও তার সহযোগীরা। অভিযোগে আরো বলা হয়, সম্প্রতি রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের বালিশ কেলেঙ্কারির ঘটনা হাইকোর্ট পর্যন্ত গড়ানোর কারণে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে তদন্ত হলেও গণপূর্ত অধিদফতরের বেশ কয়েকজন প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে এর আগে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পরও কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। এমনকি জাতীয় সংসদের তদন্ত কমিটি সংসদ ভবন এলাকার দায়িত্বে থাকা কয়েকজন প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করলেও তা মানেনি গণপূর্ত অধিদফতর। বরং তাদের কয়েক দফা পদোন্নতি দেয়া হয়েছে। অভিযোগপত্রে গণপূর্ত অধিদফতরের দু’জন অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মোসলেহ উদ্দিন ও ড. মঈনুল ইসলামের বিরুদ্ধে দুর্নীতির বিষয়গুলো অনুসন্ধান করে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয়।


আরো সংবাদ



premium cement