২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

এডিস মশা নির্মূলে চিরুনি অভিযান শুরু ডিএনসিসির সচেতন না হলে আইনগত ব্যবস্থা : আতিকুল

-

এডিস মশা নির্মূলে চিরুনি অভিযান শুরু করেছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। এ লক্ষ্যে গতকাল গুলশানের শহীদ ডা: ফজলে রাব্বী পার্ক থেকে ‘ওয়ার্ডভিত্তিক এডিস মশার প্রজননস্থল ধ্বংসকরণ ও বিশেষ পরিচ্ছন্নতা অভিযান’ উদ্বোধন করা হয়। ডিএনসিসি মেয়র মো: আতিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ।
ডিএনসিসির কর্মকর্তারা জানান, ১৯ নম্বর ওয়ার্ড (গুলশান-বনানী এলাকা) থেকে এ অভিযানের পরীক্ষামূলক যাত্রা শুরু করা হয়েছে। এ ওয়ার্ডকে ১০টি ব্লকে ভাগ করা হয়েছে, আবার প্রতিটি ব্লককে ১০টি সাব-ব্লকে ভাগ করা হয়েছে। ডিএনসিসির পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা স্থানীয় কমিউনিটির সাথে যুক্ত হয়ে গতকাল ১ নম্বর ব্লকের ১০টি সাব-ব্লকে ১০টি উপদলে বিভক্ত হয়ে এ অভিযান সম্পন্ন করে। এভাবে আগামী ১০দিনে এ ওয়ার্ডটিতে এডিস মশার প্রজননস্থল ধ্বংসকরণ ও বিশেষ পরিচ্ছন্নতা অভিযান সম্পন্ন হবে। এ ওয়ার্ডের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে আগামী কয়েকদিনের মধ্যে ডিএনসিসির অন্যান্য ওয়ার্ডেও এ অভিযান পরিচালনা করা হবে।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেন, ডেঙ্গু প্রতিরোধ করতে হলে এডিস মশার উৎপত্তিস্থল ধ্বংস করতে হবে। আমাদের বাসাবাড়ির ভেতরে এবং আশপাশে এডিস মশার বংশবিস্তারের স্থানগুলো ধ্বংসের কাজটি নিয়মিত নগরবাসীদেরকে করে যেতে হবে। তিনি আরো বলেন, পরিচ্ছন্ন হলেই আলোকিত মানুষ হওয়া যায়। অপরিচ্ছন্ন মানুষ আলোকিত মানুষ হতে পারে না। আমাদের মধ্যে নোংরামির অভ্যাস আছে। খুব অল্প কয়েকজনকে বাদ দিলে আমাদের কারোও বাড়িঘর পরিপাটি না। আমাদের সমাজেই একটা বিশৃঙ্খলা আছে। এসব থেকে নিস্তার পেতে হলে আশপাশের সবকিছু আমাদেরই পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।
মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, স্থানীয় জনগণ এ অভিযানের সাথে সম্পৃক্ত হলেই অভিযানটি সফল হবে। তাই এ অভিযানে ডিএনসিসির সাথে স্থানীয় জনগণকে সম্পৃক্ত করা করা হয়েছে। আমরা বাসাবাড়িতে গিয়ে এডিস মশার লার্ভা পেলে তাকে সতর্ক করব এবং ‘সাবধান! এ বাড়িতে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া গিয়েছে’ লেখা একটি স্টিকার লাগিয়ে দেব। আমাদের বিশ্বাস এরপর তারা নিজেদের শুধরে নেবেন। যদি শুধরে না নেন, তাহলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করব। অভিযান চলাকালে সিটি করপোরেশনের কর্মীদের সচেতনভাবে সহযোগিতা করার জন্য মেয়র বাড়ির মালিকদের প্রতি আহ্বান জানান।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো: আবদুল হাই, সচিব রবীন্দ্র বড়–য়া, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোমিনুর রহমান মামুন, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন মঞ্জুর হোসেন, ওয়ার্ড কাউন্সিলর মফিজুর রহমান, বিভিন্ন সোসাইটির নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এডিস মশা নির্মূলে ডিএনসিসির ভ্রাম্যমাণ আদালত : এডিস মশা নির্মূলে ‘চিরুনি অভিযান’ উদ্বোধনের পরে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাজিদ আনোয়ারের নেতৃত্বে গুলশান এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়। এ সময় তিনটি নির্মাণাধীন স্থাপনা এবং একটি বাণিজ্যিক ভবনের মালিককে মোট তিন লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। শহীদ ডা: ফজলে রাব্বী পার্কে উদ্বোধন অনুষ্ঠানের পরে অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদকে সাথে নিয়ে ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম গুলশান-১ এর ১ নম্বর সড়কের ১ নম্বর বাড়িতে যান। এ বাড়ির ছাদে কমোডের পরিত্যক্ত ফ্লাশে এডিস মশার লার্ভা পাওয়ায় ভবনের মালিককে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। এ ছাড়া ১৪০ নম্বর সড়কের ১০ নম্বর নির্মাণাধীন ভবনে এডিস মশার লার্ভা পাওয়ায় ভবনের মালিককে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। একই অপরাধে ১৪০ নম্বর সড়কের নির্মাণাধীন ৭/এ নম্বর ভবন এবং গুলশান-২ এর ৬২ নম্বর সড়কের নির্মাণাধীন ৭ নম্বর ভবনের মালিকদেরকে ৫০ হাজার টাকা করে মোট এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।

 

 

 


আরো সংবাদ



premium cement