২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

সাত কলেজের অধিভুক্তি বাতিল দাবিতে অচল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

-

ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় থেকে রাজধানীর সরকারি সাত কলেজের অধিভুক্তি বাতিলের দাবিতে করা বিশ^বিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের ধারাবাহিক আন্দোলনে অচলাবস্থা বিরাজ করছে বিশ^বিদ্যালয় ক্যাম্পাসে। গতকাল রোববার সকাল থেকে ক্যাম্পাসের সব অ্যাকাডেমিক ও প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন শিক্ষার্থীরা। এতে কার্যত অচল হয়ে পড়ে বিশ^বিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম। দুপুরে শিক্ষার্থীরা গতকালের মতো আন্দোলন স্থগিত করলেও অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন ও বিক্ষোভ অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছেন। তবে এত আন্দোলনে সত্ত্বেও বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসন জানায়, শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক আন্দোলনে তাদের সম্মতি থাকলেও অধিভুক্তি বাতিলের এখতিয়ার বিশ^বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নেই।
সন্ধ্যায় বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসনের অবস্থানের প্রতিক্রিয়ায় আন্দোলনকারীদের মুখপাত্র শাকিল আহমেদ বলেন, আলাদাভাবে শিক্ষাকার্যক্রম পরিচালনা নয়, আমাদের দাবি ছিল সাত কলেজ বাতিল। যেহেতু প্রশাসন আমাদের দাবি মেনে নেয়নি, সেহেতু আগামীকাল থেকে আমাদের কর্মসূচি যথারীতি চলবে।
পূর্বঘোষণা অনুযায়ী সাত কলেজ বাতিলের দাবিতে গতকাল সকাল ৭টা থেকে ক্যাম্পাসের সব অ্যাকাডেমিক ও প্রশাসনিক ভবনে তালা দেয়া হয়। সকাল ৮টার দিকে এসব ভবনে তালা খুলতে গিয়ে শিক্ষার্থীদের সাথে বাগি¦তণ্ডা হয় ভবনগুলোর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের। শিক্ষার্থীরা নিজেদের দাবিতে অনড় থেকে ক্লাস ও পরীক্ষায় অংশ নেয়া থেকে বিরত থাকে। বাগি¦তণ্ডা হয় বেশ কয়েকটি বিভাগের শিক্ষকদের সাথেও। সহ¯্র শিক্ষার্থী বিক্ষোভ করতে থাকেন বিশ^বিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক ও প্রশাসনিক ভবনগুলোর সামনে। সকাল সোয়া ৯টার দিকে নিজ কার্যালয়ে প্রবেশ করতে গিয়ে শিক্ষার্থীদের বাধার মুখে পড়েন প্রোভিসি অধ্যাপক সামাদ। শিক্ষার্থীরা প্রোভিসির গাড়ি আটকিয়ে স্লোগান দিতে থাকেন। একপর্যায়ে গাড়ি থেকে নেমে প্রোভিসি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সমর্থন আছে জানিয়ে আলোচনায় বসার আহ্বান জানান। কিন্তু এতে সায় দেননি আন্দোলনকারীরা। তারা সাত কলেজের অধিভুক্তি বাতিল না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলনে থাকার ঘোষণা দেন। তীব্র আন্দোলনের মুখে বন্ধ থাকে বিশ^বিদ্যালয়ের সব অ্যাকাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম। দুুপুরে আন্দোলনকারীরা মিছিল নিয়ে ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো প্রদক্ষিণ করে। এসময় উত্তেজিত শিক্ষার্থীরা ‘প্রশাসন করে কী, খায় দায় ঘুমায় নাকি’, ‘ঢাবির সম্মান, নষ্ট হতে দেবো না’, ‘সাত কলেজ বাতিল চাই’, ‘রাখতে ঢাবির সম্মান, সাত কলেজ বেমানান’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ভিসির বাসভবনের সামনে প্রায় ঘণ্টাখানেক অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন আন্দোলনকারীরা।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সাথে সংহতি জানান ডাকসুর সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেন ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক আসিফ তালুকদার।
ভিসি চত্বর থেকে আন্দোলনকারীরা বেলা ১টার দিকে রাজু ভাস্কর্যে সমাবেশ করেন। এসময় আন্দোলনকারীদের মুখপাত্র শাকিল আহমেদ বলেন, আমরা আজকের মতো স্থগিত করছি। আগামীকাল থেকে ফের চলবে আমাদের কর্মসূচি।
এ দিকে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. মো: আখতারুজ্জামান দেশের বাইরে থাকায় রোববার বিকেলে এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়ে প্রোভিসি (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ সাংবাদিকদের বলেন, শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক আন্দোলনে সমর্থন ও সহানুভূতি রয়েছে। কিন্তু অধিভুক্তি বাতিলের এখতিয়ার বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসনের নেই।


আরো সংবাদ



premium cement