শুধু নেপালি শিক্ষার্থীদের জন্যই বাংলাদেশ দীর্ঘমেয়াদি মাল্টিপল এন্ট্রি ভিসা দেয় : রাষ্ট্রপতি

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, শুধু নেপালি শিক্ষার্থীদের চার বছর অথবা কোর্সের সময়কালের জন্য দীর্ঘমেয়াদি মাল্টিপল এন্ট্রি ভিসা প্রদানের সুবিধা দিয়ে থাকে বাংলাদেশ। সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও ক্ষমতাসীন নেপাল কমিউনিস্ট পার্টির সহসভাপতি পুস্প কামাল দাহাল (প্রচন্ড) গতকাল দুপুরে মেরিয়ট হোটেলে তার সাথে সাক্ষাৎ করতে এলে রাষ্ট্রপতি তাকে এ কথা বলেন।
রাষ্ট্রপতির বরাত দিয়ে তার প্রেস সচিব জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘নেপাল সরকারের অনুরোধ বিবেচনায় রেখে বাংলাদেশ চলতি বছরের জুন থেকেই নেপালি শিক্ষার্থীদের চার বছর বা কোর্সের সময়কালের জন্য দীর্ঘমেয়াদি মাল্টিপল এন্ট্রি ভিসা প্রদান করছে।’
ঐতিহাসিক ও অনেক অভিন্ন বিষয়ের যোগসূত্রের ভিত্তিতে নেপালের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক অত্যন্ত গুরুত্ব বহন করে উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, বিদ্যমান দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে বহুপক্ষীয় সম্পর্কে রূপান্তরিত করার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে।
রাষ্ট্রপতি মনে করেন, ‘ব্যবসা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে আমাদের অনেক সম্ভাবনা রয়েছে।’ তিনি বাংলাদেশ ও নেপালের মধ্যে সড়ক-নদী-আকাশ পথে যোগাযোগ বাড়ানোর ওপরেও গুরুত্বারোপ করেন।
রাষ্ট্রপতি বলেন, নেপালকে তৃতীয় দেশ হিসেবে ট্রানজিটসহ সমুদ্রসুবিধা নিয়ে চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দর ব্যবহারের জন্য নেপালের কাছে প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ। দেশের অন্যান্য অবকাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি দু’টি বন্দরের সুবিধা বাড়ানো হয়েছে এবং ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের দিকগুলোকে অনেক উন্নত করা হয়েছে।
আবদুল হামিদ বাংলাদেশ ও নেপালে বিদ্যুৎবাণিজ্যের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ, ভারত ও নেপালের মধ্যে ত্রিপক্ষীয় সহযোগিতা, বিশেষ করে আন্তঃসীমান্ত বিদ্যুৎ সরবরাহের ইস্যুতেও গুরুত্বরোপ করেন। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, বাংলাদেশ ও নেপাল ঐতিহ্যগতভাবে বহুপক্ষীয় এবং আঞ্চলিক ফোরামে তাদের ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে এবং দুই দেশের অভিন্ন আশা-আকাক্সক্ষা পূরণে একসাথে কাজ চালিয়ে যাবে।
এর আগে, নেপালের জাতীয় পরিষদের (আপার হাউজ) চেয়ারম্যান গনেশ প্রসাদ টিমিলসিনা রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের সাথে এখানে সাক্ষাৎ করেছেন। রাষ্ট্রপতি তার সাথে আলাপকালে দুই দেশের ঐতিহ্যগত ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা অব্যাহত রাখার ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
আবদুল হামিদ বলেন, উভয় দেশকে বঙ্গোপসাগরবিষয়ক উদ্যোগের জন্য আগ্রহ সহকারে বিমসটেকের পাশাপাশি সার্কের প্ল্যাটফর্মের আওতাধীন ক্ষেত্রগুলোতে নিবিড়ভাবে সহযোগিতা করা দরকার।
তিনি নেপালি জনগণ ও রাজনৈতিক নেতৃত্বকে তাদের গণতন্ত্রকে সুসংহত করতে তিনটি নির্বাচন (স্থানীয়, প্রাদেশিক ও সংসদীয়) সফলভাবে সম্পন্ন করার মাধ্যমে ২০১৫ সালে গৃহীত সংবিধানের প্রয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করায় অভিনন্দন জানিয়েছেন।
পরে বিরোধীদলীয় নেতা এবং নেপালি কংগ্রেস দলের সভাপতি শের বাহাদুর দেউবাও বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির সাথে সাক্ষাৎ করেন। সব দলের নেপালি নেতৃবৃন্দ তার (রাষ্ট্রপতি) সুস্বাস্থ্য, দীর্ঘায়ু ও সুখ এবং বাংলাদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ মানুষের জন্য, অব্যাহত শান্তি, সমৃদ্ধি ও স্থিতিশীলতা কামনা করেছেন।
বৈঠকগুলোতে হুইপ আতিউর রহমান আতিক, এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরী এমপি, পররাষ্ট্র সচিব মো: শহিদুল হক, রাষ্ট্রপতির সচিব সম্পদ বাড়ূয়া, সামরিক সচিব মেজর জেনারেল শামীম-উজ-জামান ও প্রেস সচিব জয়নাল আবেদীন উপস্থিত ছিলেন।