ভেড়ামারায় স্বামী হত্যার দায়ে দ্বিতীয় স্ত্রীসহ ৪ জনের মৃত্যুদণ্ড

কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলায় কৃষক হানিফ আলী হত্যা মামলায় তার দ্বিতীয় স্ত্রীসহ চারজনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। গতকাল বুধবার বেলা ১১টার দিকে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক অরূপ কুমার গোস্বামী আসামিদের উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন নিহত হানিফ আলীর দ্বিতীয় স্ত্রী দোলনা বেগম (৪২), ভেড়ামারা উপজেলার আরকান্দি গ্রামের নুরুল প্রামাণিকের ছেলে শ্যামল প্রামাণিক (২৭), একই গ্রামের মৃত বাদশা আলী মণ্ডলের ছেলে আসমত আলী মণ্ডল (৪৭) ও মৃত মিরাজ উদ্দিনের ছেলে মুকুল হোসেন (২৬)।
জানা গেছে, ২০১৭ সালের ৬ জানুয়ারি আধিপত্য নিয়ে উপজেলার আরকান্দি মণ্ডলপাড়া গ্রামে মারামারির ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় প্রতিপক্ষ ইয়াসিন আলী প্রামাণিক ও তার ছেলে ময়নুল প্রামাণিক গুরুতর আহত হন। ঘটনার সাত দিন পর রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইয়াসিন আলীর মৃত্যু হয়। এতে আসামি মুকুলের ভাইসহ প্রায় ১৫ জনের নামে ভেড়ামারা থানায় মামলা দায়ের করা হয়। আসামি মুকুল তার ভাইকে হত্যা মামলা থেকে বাঁচাতে এবং ঘটনা ভিন্নখাতে প্রবাহিত করে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে হানিফ আলীকে হত্যার পরিকল্পনা করে। তাছাড়া সম্পর্কে চাচা হওয়ায় হানিফ আলীর সঙ্গে আসামি মুকুলের জমিজমা নিয়ে বিরোধ চলছিল। এদিকে অপর আসামি আসমতের সঙ্গে হানিফ আলীর দ্বিতীয় স্ত্রী দোলনার অনৈতিক সম্পর্ক থাকায় তাদেরকেও হাত করে মুকুল। সেই সঙ্গে ১০ হাজার টাকা চুক্তিতে আরেক আসামি শ্যামলকে সাথে নেয়। এরই অংশ হিসেবে ২০১৭ সালের ১০ এপ্রিল রাতে হানিফ আলী বাড়ি থেকে বাইরে বের হলে পূর্ব পরিকল্পনানুযায়ী আসামি মুকুল, শ্যামল, আসমত ও স্ত্রী দোলনা তাকে পার্শ্ববর্তী মাঠে গলা কেটে হত্যা করে। ঘটনার পরদিন নিহতের ১ম পক্ষের ছেলে আমিনুল ইসলাম বাদি হয়ে ভেড়ামারা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলাটি তদন্ত শেষে রহস্য উদ্ঘাটন করে চার আসামির বিরুদ্ধে ভেড়ামারা থানা পুলিশ ২০১৭ সালের ১৫ জুন আদালতে চার্জশিট দেয়। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ও কুষ্টিয়া জজ কোর্টের পিপি অ্যাডভোকেট অনুপ কুমার নন্দী জানান, দীর্ঘ সাক্ষ্য ও শুনানি শেষে আসামিদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় আদালত আজ এই রায় দেন। মামলাটি পর্যবেক্ষণ মন্তব্যে বিজ্ঞ আদালত বলেন, সম্পত্তি ও পারিবারিক দ্বন্দ্ব কলহের জের ধরেই এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়।