২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`
জাতীয় দলের মানববন্ধন

শপথ নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে : বিএনপি

-

কোনো শর্তে নয়, নিঃশর্তে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে হবে মন্তব্য করে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, শপথ গ্রহণ করার বিষয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে। গতকাল সকালে এক মানববন্ধন কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি স্পষ্ট করে বলেন, আমাদের বক্তব্য স্পষ্ট। আমরা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্ত চাই। কোনো শর্তাধীনে নয়। আমরা যেকোনো মূল্যে তার মুক্তি চাই। যেকোনো মূল্যে তাকে আমরা মুক্ত করব ইনশাআল্লাহ। সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন পদ্ধতির কথা বলা হচ্ছে যেটা আমি উচ্চারণই করতে চাই না। কারণ এসবের সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই। আমরা কখনো এই কথা (প্যারোল) বলি নাই। আমরা তার মুক্তির আন্দোলন সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সব মানুষ রাজপথে নেমে এলে সরকার ঠেকাতে পারবে না।
ঢাকায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে গতকাল শনিবার দুপুরে ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক জাতীয় দলের উদ্যোগে জোট নেত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে এই মানববন্ধন হয়। বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদার সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, কেন্দ্রীয় নেতা আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, নিপুণ রায় চৌধুরী, জেবা আমিন খান, কাজী মনিরুজ্জামান, স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক সাইফুল ইসলাম ফিরোজসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।
জামিন খালেদা জিয়ার প্রাপ্য মন্তব্য করে নজরুল ইসলাম খান বলেন, এই জামিন তার প্রাপ্য। তিনি একজন সিনিয়র সিটিজেন, ৭৪ বছর বয়স। তিনি নানা কঠিন রোগে আক্রান্ত। এই দেশে তার সুষ্ঠু চিকিৎসা যেখানে সম্ভব ছিল তার একটা ছিল পিজি হাসপাতাল। এর আগে এখানে নিয়ে আসা হয়েছিল। কিন্তু তাকে যথাযথ চিকিৎসা প্রদান করা হয়নি। তিনি সুস্থ হয়ে গেলে আমরা তো তার সুষ্ঠু চিকিৎসার জন্য তার মুক্তি দরকারÑ এ কথা বলতে পারব না। আমি রাজনৈতিক কারণে তার মুক্তি দাবি করি, ন্যায্য কারণে মুক্তি দাবি করি, আইনসঙ্গত কারণে তার মুক্তি দাবি করি।
তিনি বলেন, আজকে এই সরকারের আমলে অনেকের হাজার হাজার মামলা প্রত্যাহার করা হয়েছে। খুনের আসামিকে মাফ করা হয়েছে। খালেদা জিয়ার পাঁচ বছরের সাজা হওয়ার পর তিনি বের হতে পারলেন না। আর এই সরকারের বশংবদ ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা ১৫ বছরের কারাদণ্ড হওয়ার পরও কয়েক দিনের মধ্যেই জামিন পেয়ে গেলেন। আদালত কি একটি না দুটি বাংলাদেশে? বেগম খালেদা জিয়ার জন্য একরকমের বিচার আর সরকারকে যারা সমর্থন করে তাদের জন্য আরেক রকমের বিচার।
বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন মিথ্যা মামলা দিয়ে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে বন্দী রাখা হয়েছে। বিশ্বের যেখানে গণতন্ত্র আছে সেখানে মানুষ হয়রানি নিপীড়িত হয় না। আজকে লাখো মানুষের জীবন ও মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীন দেশে আমরা অধিকার বঞ্চিত। আসলে ক্ষমতাসীনেরা জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয়। এ জন্য জনগণের কাছে তাদের কোনো জবাবদিহিতা নেই। তারা পুলিশ ও প্রশাসনকে ব্যবহার করে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায়।
সংসদে যাওয়া না যাওয়ার বিষয়ে নজরুল ইসলাম খান বলেন, আমাদের সংসদ সদস্যরা সংসদে যাবেন কি যাবেন নাÑ এটা দলের সিদ্ধান্তের প্রশ্ন। আপাতত তো বলাই হয়েছে যে, আমরা এই নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করেছি। তাই আমাদের জন্য যে ফলাফল তাও তো প্রত্যাখ্যান করেছি আমরা। এ নিয়ে নানা কথা ও বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা হচ্ছে। আমাদের দলের পক্ষ থেকে তাদেরকে (নির্বাচিত সংসদ সদস্য ৬ জন) ডেকে বলে দেয়া হয়েছে যে, দলের সিদ্ধান্ত আপনারা মানবেন, মানতে হবে। দলের সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত আপনারা সংসদে যাবেন না এবং কোনো ব্যাপারে কোনো কথাও বলবেন না। আমাদের সংসদ সদস্যরা রাজি হয়ে গেছেন।
মানববন্ধনের সভাপতি সৈয়দ এহসানুল হুদা বলেন, ১৪ মাস ১২ দিন ধরে দেশমাতা বেগম খালেদা জিয়া সম্পূর্ণ বিনা কারণে মিথ্যা মামলায় কারাগারে বন্দী। কারো করুণায় নয় মাকে ও মাতৃভূমিকে বাঁচাতে এক হয়ে মাঠে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। তবেই আমাদের মা বেগম খালেদা জিয়া মুক্তি পাবেন, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার হবে এবং তারুণ্যের প্রতীক তারেক রহমান নিরাপদে দেশে ফিরবেন।


আরো সংবাদ



premium cement