সরকারের আয়ুষ্কাল শেষ হয়ে যাচ্ছে : ড. কামাল
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ১১ ডিসেম্বর ২০১৮, ০০:০০
ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন দেশে বিনা বিচারে একের পর এক হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, এটা তো মহামারীর মতো দেখা দিচ্ছে। বিনা বিচারের কেন এত হত্যার ঘটনা বাড়ছে সে ব্যাপারে শক্তিশালী একটি তদন্ত কমিটি গঠনের আহ্বান জানান তিনি। এ ব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে ক্ষমতাসীন সরকারকে পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, আর কয়েকদিন পরই এ সরকারের আয়ুষ্কাল তো শেষ হয়ে যাচ্ছে। শেষ সময়ে শেষ সুযোগকে কাজে লাগাতে পরামর্শ দেন তিনি। অন্তত যাতে সরকারকে একটা মোবারকবাদ দেয়া যায়।
জাতীয় প্রেস ক্লাবের মিলনায়তনে বাংলাদেশ মানবাধিকার পর্যবেক্ষণ পরিষদের উদ্যোগে এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বন্ধের দাবি জানিয়ে ড. কামাল হোসেন বলেন, রোগের কারণ চিহ্নিত করার পরে তো চিকিৎসা। কিন্তু আমরা তো রোগ সম্পর্কেই জানতে পারি না, না হলে রোগে আক্রান্ত ৩২১ জন বিনাবিচারে হত্যাকাণ্ডের শিকার হয় কেন? তা আমাদের জানানো উচিত। কেননা যেকোনো নাগরিকের বেঁচে থাকার অধিকার নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের কর্তব্য।
বর্তমান সংসদ সদস্যদের উদ্দেশে ড. কামাল হোসেন বলেন, এরা বিনা ভোটে নির্বাচিত হলেও এখনো তারা একজন সংসদ সদস্য হিসেবেই বিবেচিত। তাই তাদের অবস্থান থেকে এখনো কিছু করতে পারেন তারা। কারণ আর কয়েকদিন পরত সাধারণ পাবলিকে পরিণত হয়ে যাচ্ছেন এসব সংসদ সদস্য। কারণ আপনার তো বলছেন দেশের জন্য অনেক উন্নয়ন করেছেন। তাই বিনা বিচারে এভাবে যারা মারা যাচ্ছে, তাদের ব্যাপারে খোঁজ নিন, কিছু একটা করুন। তখন জাতিকে বলতে পারবেন হ্যাঁ আমরা বিনা বিচারে হত্যার ব্যাপারে ক্ষমতার শেষ সময়েও পদক্ষেপ নিয়েছি। তবে তিনি জনগণকেও মানবাধিকার রক্ষায় অতন্দ্র প্রহরীর ভূমিকায় থাকতে বলেন।
এ দিকে এক প্রশ্নের উত্তরে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ভোট দেয়া নাগরিক অধিকার। এটা তো কোনো অপরাধ নয়। ভোটাধিকার না দেয়ার শতভাগ ব্যর্থতা জনগণের নিজের। ক্ষমতার মালিক জনগণ, এটা তো কাগজ দেখিয়ে বলার কিছু নেই। নীরব-নিষ্ক্রিয় হলে চলবে না। দেশের মালিক ১৮ কোটি মানুষ। মালিকানা নিজেরা ভোগ করতে চাই, তবে কেউ তা রুখতে পারবে না। অপর দিকে দেশের বিভিন্ন নিউজ পোর্টালসহ ৫৮টি ওয়েবসাইট বন্ধ করে দেয়ার খবরেও উদ্বেগ প্রকাশ করেন ড. কামাল।
নির্বাচনে আওয়ামী লীগ হেরে যাওয়ার পর ৩১ ডিসেম্বর সাধারণ জনগণ ও অন্য নেতাকর্মীরা যেন তাদের মোবারকবাদ দিতে পারে, নির্বাচনের আগের দিনগুলোতে ঠিক তেমন কিছু কাজ আওয়ামী লীগকে করে যাওয়ার আহ্বান জানান তিনি। ড. কামাল বলেন, ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে আপনারা তো ইনশা আল্লাহ হেরে যাচ্ছেন। এরপর জনগণ আপনাদের কিভাবে দেখবে সেই কথাটাও একটু ভাবুন। আপনাদের নেতাকর্মীদের জনগণকে মোবারকবাদ দেয়ার সুযোগ করে দিন।
এতে সাবেক শিক্ষামন্ত্রী শেখ শহীদুল ইসলাম বলেন, রাজনীতিতে ত্যাগী নেতাদের মূল্যায়ন হচ্ছে না। এখানে যোগ্যতার মানদণ্ড হচ্ছে টাকা। তিনি বলেন, টাকাই হচ্ছে নেতৃত্ব পাওয়ার মূল কথা সেখানে তো রাজনৈতিক নেতৃত্ব তৈরি হবে না। তবে তিনি সবাইকে সতর্ক করে দিয়ে বলেন, দেশে অন্যায়-অবিচার দেখে হতাশ হওয়া যাবে না। কারণ হতাশ হলে লুটেররা লুটপাটে আরো বেশি উদ্বুদ্ধ হবে।
সাবেক সচিব মোফাজ্জ্বল করিম বলেন দেশে এখন মানবাধিকার নয় চলছে দানবাধিকারের দাপট। শুধু সরকারেই শুধু নয় সব ক্ষেত্রেই এ দানবের পদচারণা অব্যাহত রয়েছে।
সভায় সভাপতিত্ব করেন নুরুল হুদা মিলু চৌধুরী। আরো বক্তৃতা করেন মানবাধিকার ফেডারেশনের চেয়ারম্যান ড. মোহা: শাহজাহান, ড. ফরিদউদ্দিন ফরিদ, অধ্যাপক ড. অমিত আজাদ, আবদুল্লাহ আল মাহমুদ, প্রকৌশলী মমিনুল ইসলাম প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন তালুকদার মনিরুজ্জামান।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা