২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

বিভিন্ন স্থানে নিহত ৮

-

দেশের বিভিন্ন স্থানে সড়ক দুর্ঘটনায় আটজন নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে মেহেরপুরে এক পুলিশ কনস্টেবল এবং মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় এক চা-শ্রমিক রয়েছেন।
নোয়াখালী সংবাদদাতা জানান, জেলার হাতিয়া ও সেনবাগে পৃথক দু’টি সড়ক দুর্ঘটনায় দুইজন নিহত হয়েছেন। আহত হন আরো তিনজন। জানা গেছে, গতকাল দুপুরে জেলার বিচ্ছিন্নদ্বীপ হাতিয়া উপজেলার বেকেরবাজারের কাছে একটি মোটরসাইকেলের সাথে ব্যাটারি চালিত ইজিবাইকের ধাক্কা লাগে। এ সময় মোটরসাইকেলচালক টুটুল চন্দ্র ঘটনাস্থলেই মারা যান। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। হাতিয়া থানার ওসি কামরুর জামান শিকদার বলেন, এ ব্যাপারে থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। এ দিকে দুপুর ১২টায় ফেনী-নোয়াখালী সড়কের কল্যান্দী বাজার এলকায় সিএনজি ও মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় মো: ছালে আহম্মদ (৬৫) নামে বৃদ্ধ নিহত হন। এ ঘটনায় মোটরসাইকেলের চালক মো: হারুন (১৭) ও সিএনজিচালক অজ্ঞাত (২৩) আহত হয়েছেন। খবর পেয়ে হাইওয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মোটরসাইকেল ও সিএনজিটি জব্দ এবং ময়নাতদন্তের জন্য লাশ নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
মেহেরপুর সংবাদদাতা জানান, দুর্গাপূজার নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন শেষে ফিরে আসার পথে মেহেরপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় আসাদ রানা নামের এক পুলিশ কনস্টেবল নিহত হয়েছেন। গত শুক্রবার রাতে সদর উপজেলার নূরপুর এলাকায় দু’টি মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত পুলিশ কনস্টেবল আসাদ রানা চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুড়হুদা উপজেলার চণ্ডিপুর গ্রামের আলী আহমেদের ছেলে। তিনি মেহেরপুর কোর্টে কর্মরত ছিলেন।
মেহেরপুর কোর্ট পুলিশ পরিদর্শক শাহিনুজ্জামান জানান, দায়িত্ব পালন শেষে ফিরে আসার সময় দু’টি মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে মারাত্মক আহত হয় আসাদ রানা। তাকে দ্রুত মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হলে তার অবস্থার অবনতি ঘটে। পরে চিকিৎসকের পরামর্শে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে যাওয়ার পথে তিনি মারা যান।
কুলাউড়া (মৌলভীবাজার) সংবাদদাতা জানান, কুলাউড়ার চাতলাপুর চা বাগানে মোটরসাইকেলের ধাক্কায় নারী চা শ্রমিক শীলা রবিদাস (২৫) নিহত হয়েছেন। পুলিশ মোটরসাইকেল চালকসহ দুইজনকে আটক করেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, চাতলাপুর চা বাগানের পূর্বটিলা লাইনের চা শ্রমিক মোহন রবি দাসের মেয়ে শীলা রবি দাস (২৫) দুর্গাপূজা উপলক্ষে স্বামীর বাড়ি রাজনগর থেকে বাপের বাড়ি এসেছিলেন। গত বৃহস্পতিবার রাতে পূজামণ্ডপ থেকে বাড়িতে ফিরার পথে মোটরসাইকেলচালক চাতলাপুর বাগানের বাসিন্দা বিনয় কৃষান কুর্মী (৪৫) মদ্যপ অবস্থায় শীলা রবি দাসকে সাজোরে ধাক্কা দিয়ে গুরুতর আহত করে। পরে তাকে উদ্ধার করে শমসেরনগর ক্যামেলিয়া ডানকান হাসপাতালে ভর্তি করার পর রাত ১১টায় তিনি মারা যান।
এ ঘটনায় কুলাউড়া থানায় মামলা হয়েছে এবং পুলিশ মোটরসাইকেল চালক বিনয় কৃষান কুর্মী ও আরোহী বাবুল মৃধাকে আটক করেছে।
নীলফামারী ও সৈয়দপুর সংবাদদাতা জানান, জেলা শহরের অদূরে কামারপুকুরে যাত্রীবাহী বাস ‘নওশিন’ এর ধাক্কায় গত শুক্রবার সন্ধ্যায় নুর ইসলাম (৫০) নামে এক পথচারী নিহত হয়েছেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রংপুর থেকে ছেড়ে আসা দ্রুতগামী বাসটি দিনাজপুর যাওয়ার পথে এ দুর্ঘটনা ঘটায়। নিহত ওই পথচারীর বাড়ি কামারপুকুর ইউনিয়নের ব্রহ্মত্তর গ্রামের ছালুয়াপাড়ায়। দুর্ঘটনার পর স্থানীয়রা আহত নুর ইসলামকে স্থানীয় ১০০ শয্যা হাসপাতালে নেয়ার পথেই তিনি মারা যান। স্থানীয় জনতা বাসটিকে আটক করেছে।
নিজস্ব প্রতিবেদক জানান, রাজধানীর খিলক্ষেত ও হাজারীবাগে সড়ক দুর্ঘটনায় দুইজন নিহত হয়েছেন। তারা হলেনÑ খিলক্ষেতে আবদুস সালাম (৭০) ও হাজারীবাগে এক নারী যার নাম পরিচয় জানা যায়নি।
খিলক্ষেতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের হোটেল লা মেরিডিয়ানের সামনের রাস্তায় গতকাল সকালে অজ্ঞাত গাড়ির ধাক্কায় গুরুতর আহত হন আবদুস সালাম। খিলক্ষেত থানার পুলিশ কনস্টেবল মোশারফ হোসেন প্রথমে তাকে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরে তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে সকাল ১০টায় তিনি মারা যান।
অপর দিকে গত শুক্রবার রাতে হাজারীবাগের বউবাজার এলাকায় একটি প্রাইভেটকারের ধাক্কায় এক নারী গুরুতর আহত হন। রাতে আবদুল আলিম নামে এক রিকশাচালক তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে তিনি মারা যান।
ঢাকা মেডিক্যালের পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ বাচ্চু মিয়া জানান, নিহতদের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে রাখা হয়েছে।
নিজস্ব প্রতিবেদক জানান, রাজধানীর মোহাম্মদপুর কলেজ গেটের সামনে দ্রুতগতির বাসের ধাক্কায় রুমা আক্তার (২৫) নামে এক গৃহবধূ নিহত হয়েছেন। গতকাল বিকেলে স্বামীকে ডাক্তার দেখাতে গিয়ে এই দুর্ঘটনার শিকার হন।
নিহতের স্বামী লিটন জানান, তিনি নিজের চিকিৎসার জন্য তিন বছরের মেয়ে লামিয়া ও রুমাকে নিয়ে মোহাম্মদপুরে যাচ্ছিলেন। তারা একটি বাস থেকে কলেজ গেটে নামেন। এরপর রাস্তা পার হয়ে ওপারে যাচ্ছিলেন। তখন মেয়ে লামিয়া লিটনের কাছে ছিল। রুমা ছিলেন তাদের পেছনে। এমন সময় গাবতলীগামী একটি দ্রুতগতির বাস রুমাকে ধাক্কা দিয়ে পালিয়ে যায়। গুরুতর অবস্থায় তাকে প্রথমে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু সেখানে অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসকেরা রুমাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহতের গ্রামের বাড়ি সুনামগঞ্জ জেলার ধর্মপাশা উপজেলার বাড়গাঁও গ্রামে। স্বামী সন্তান নিয়ে তারা মিরপুর মধ্য পাইকপাড়ার একটি বাসায় ভাড়া থাকতেন। স্বামী লিটন একটি পোশাক তৈরি কারখানায় চাকরি করেন।


আরো সংবাদ



premium cement