২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

বিচারপতি সিনহা সরকারের মুখোশ খুলে দিয়েছেন : জামায়াত

-

বাংলাদেশের সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্রকুমার সিনহা লিখিত ও সম্প্রতি প্রকাশিত আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ এ ব্রোকেন ড্রিম: রুল অব ল হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড ডেমোক্র্যাসি নামক বইটি সম্পর্কে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ডা: শফিকুর রহমান এক বিবৃতিতে বলেন, ‘সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্রকুমার সিনহা লিখিত ও সম্প্রতি প্রকাশিত আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থটির মাধ্যমে তিনি তার নিজের এবং আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন বর্তমান ফ্যাসিবাদী সরকারের মুখোশ দেশী-বিদেশী সকলের কাছে খুলে দিয়েছেন। এ বইটি বর্তমান সরকারের ফ্যাসিবাদী কর্মকাণ্ড ও বিচারপতি এসকে সিনহা বর্তমান ফ্যাসিবাদী সরকারের ক্রীড়নক হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে যে অপরাধ করেছেন তারই আত্মস্বীকৃত দলিল হিসেবেই জাতির কাছে বিবেচিত হবে।
তিনি আরো বলেন, উচ্চাকাক্সক্ষা ও উচ্চ পদে আসীন হওয়ার লোভ তাকে বর্তমান ফ্যাসিবাদী সরকারের ক্রীড়নকে পরিণত করেছিল। এ ধরনের একজন নীতিহীন ও আদর্শহীন লোক কখনো ন্যায়বিচার করতে পারেন না। সরকারের ক্রীড়নক হিসেবে তিনি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নেতৃবৃন্দকে ফাঁসি দিয়ে হত্যা করে সরকারের রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে সহযোগীর ভূমিকা পালন করেছেন। এ রকম একজন পক্ষপাতদুষ্ট লোককে প্রধান বিচারপতির আসনে বসিয়ে সরকার ওই পদটিকে কলঙ্কিত করেছে।
জামায়াতের এ নেতা বলেন, সরকার তাকে ক্রীড়নক হিসেবে ব্যবহার করে বিচারের নামে জামায়াতের শীর্ষ নেতৃবৃন্দকে হত্যা করে প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার পর তাকে ছুড়ে ফেলে দিয়েছে। একজন বিচারপতির পদের লোভ থাকলে কিংবা অনুরাগ-বিরাগের বশবর্তী হলে তিনি কখনো ন্যায়বিচার করতে পারেন না। প্রমাণিত হয়েছে যে, বিচারপতি এসকে সিনহা সরকারের দ্বারা প্রভাবিত হয়েই জামায়াতের শীর্ষ নেতৃবৃন্দকে ফাঁসি দিয়েছেন। যত দিন বিচারপতি সিনহা সরকারের আজ্ঞাবহ হিসেবে সরকারের ইচ্ছামাফিক বিচার কাজ করেছেন তত দিন ফ্যাসিবাদী সরকার তার প্রতি খুশি ছিল। যখন তিনি সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় দিলেন তখনই সরকার তার প্রতি ক্ষীপ্ত হয়ে তাকে প্রধান বিচারপতির পদ থেকে জোরপূর্বক পদত্যাগে বাধ্য করে অসুস্থ সাজিয়ে বিদেশে নির্বাসনে পাঠিয়ে দিলো। অথচ তিনি বলেছেন যে, তিনি অসুস্থও ছিলেন না এবং স্বেচ্ছায় পদত্যাগও করেননি। এ থেকে বিশ্ববাসীর কাছে পরিষ্কার হয়ে গেছে, বর্তমানে বাংলাদেশ কী ভয়াবহ ফ্যাসিবাদী শাসন চলছে। তার উপর ফ্যাসিবাদী সরকারের তীব্র জুলুম-নির্যাতন এবং তার চরম ব্যর্থতা, হতাশা ও অপমানের তীব্র জ্বালা-যন্ত্রণা এবং বিবেকের দংশনই বইটিতে অত্যন্ত করুণভাবে প্রকাশিত হয়েছে। এ বইটি পাঠ করলেই বুঝা যায়, সরকার কিভাবে বিচার বিভাগের উপর হস্তক্ষেপ করছে।
তিনি বলেন, বিচারপতি সিনহার লেখাই প্রমাণ করেছে, দেশে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নেই, আইনের শাসন নেই, গণতন্ত্র নেই, বাক-স্বাধীনতা নেই, জনগণের জানমালের কোন নিরাপত্তা নেই। তিনি প্রমাণ করে দিয়েছেন, বর্তমান ফ্যাসিবাদী সরকার পারে না এমন কোন হীন কাজ নেই। তারা গোয়েবলসীয় কায়দায় সত্যকে মিথ্যা ও মিথ্যাকে সত্য এবং সুস্থ একজন মানুষকে অসুস্থ সাজিয়ে নির্বাসনে পাঠাতে পারে।
বিচারপতি সিনহার লেখা বই প্রমাণ করে, সত্য কোন দিন চাপা থাকে না। প্রকৃত সত্য একদিন প্রকাশিত হবেই। জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ নেতৃবৃন্দকে যে অন্যায়ভাবে বিচারের নামে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে হত্যা করা হয়েছে তা একদিন অবশ্যই প্রমাণিত হবে এবং তাদের যারা হত্যা করেছে তাদের বিচার একদিন হবে ইনশাআল্লাহ।
নদীভাঙনের ক্ষয়ক্ষতিতে উদ্বেগ : শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া ও জাজিরা উপজেলা এবং মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে পদ্মা নদীর ভাঙনে বহু লোক গৃহহীন ও বহু সংখ্যক স্থাপনা নদীতে বিলীন হওয়ার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে জামায়াতে ইসলামীর আমির মকবুল আহমাদ বলেন, পদ্মা নদীর ব্যাপক ভাঙনে শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া ও জাজিরা উপজেলা এবং মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে মানুষের বহু ঘরবাড়ি ও মূল্যবান স্থাপনা নদীতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু সরকার নদীভাঙন রোধ ও ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্যে এগিয়ে আসছে না। সরকার জনগণের দুঃখ-দুর্দশা লাঘবে উদাসীনতা ও শৈথিল্য প্রদর্শন করছে। সরকারের দায়িত্বহীনতায় মনে হচ্ছে জনগণের প্রতি তাদের কোন দায়বদ্ধতা নেই। সাহায্যসামগ্রী না পাঠিয়ে সরকার অসহায় মানুষের প্রতি চরম অবজ্ঞা প্রদর্শন করছে। আমি সরকারের এহেন অমানবিক আচরণের তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করছি। নদীভাঙনে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য সাহায্য নিয়ে তাদের পাশে দাঁড়ানোর লক্ষ্যে তিনি সংশ্লিষ্ট এলাকার জামায়াতের নেতাকর্মী এবং সচ্ছল বিত্তবান লোকদের প্রতি আহ্বান জানান।
নেতাকর্মী গ্রেফতারের প্রতিবাদ : ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা জামায়াতের আমির সৈয়দ গোলাম সারোয়ার, দিনাজপুর উত্তর সাংগঠনিক জেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি তৈয়ব আলী, বায়তুলমাল সেক্রেটারি আতাউর রহমান ও ব্রাক্ষণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলা জামায়াতের আমির ছায়েদ আলী, আশুগঞ্জ উপজেলা শাখা জামায়াতের আমির মো: শাহজাহান, সরাইল উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মো: এনাম খান এবং বায়তুলমাল সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মনিরকে গ্রেফতারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, জামায়াতকে নেতৃত্বশূন্য করার হীন উদ্দেশ্যেই পুলিশ অন্যায়ভাবে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও দিনাজপুরে জামায়াতের নেতৃবৃন্দকে গ্রেফতার করেছে। বিজ্ঞপ্তি।


আরো সংবাদ



premium cement