২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

‘এবার বাংলাদেশ দলকে দেয়ার পালা’

- ছবি : সংগৃহীত

বিদেশী ফুটবলার বৃদ্ধির ফলে এবার প্রিয় স্ট্রাইকিং পজিশনে খেলতে পারেননি অনেকে। মাহাবুবুর রহমান সুফিল, সাদ উদ্দিন, ইব্রাহিমদের ডিফেন্ডারের ভূমিকায় মাঠে নামতে হয়েছে। অবশ্য নিজ যোগ্যতায় ঠিকই কোচের পাশ মার্ক পেয়ে স্ট্রাইকার হিসেবেই খেলেছেন কয়েকজন। এদেরই একজন নাবিব নেওয়াজ জীবন। দেশী ফুটবলারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশী গোল তারই। এবারের লিগে ১৭টি গোল করেছেন আবাহনীর স্ট্রাইকার জীবন। সতীর্থদের গোল করতে সহায়তা করেছেন ৭ বার। সব মিলিয়ে ২০১৮-১৯ মওসুমকে ক্যারিয়ারের সেরা সময় বলে উল্লেখ করলেন তিনি। তবে এখন দায়িত্ব বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের পক্ষে গোল করা। লাল সবুজদের জেতানো সামনের আন্তর্জাতিক ম্যাচে। জানান জীবন।

এবার এএফসি কাপের সাথে মিল রেখে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের সব দলেই চার জন করে বিদেশীকে খেলানোর অনুমতি দেয় পেশাদার লিগ কমিটি। লিগ কমিটির এই সিদ্ধান্তে প্রতি দলে সমসংখ্যক দেশী ফুটবলারকে সাইড লাইনে বসে থাকতে হয়। নাবিব নেওয়াজ জীবনের এবারের সিজনটাও শুরু হয়েছিল সাইড লাইনে কাটিয়ে। নাইজেরিয়ান সানডে, আর হাইতির বেলফোর্ডের জন্য একাদশে সুযোগ হচ্ছিল না তার। বদলী হিসেবে মাঠে নামলেও সুবিধা করতে পারছিলেন না। এরই মধ্যে আবাহনী জয় করে ফেডারেশন কাপ। তা দেশী কোচ জাকারিয়া বাবুর অধীনে। স্বাধীনতা কাপে দায়িত্ব নেন পর্তূগালের মারিও লেমস। মূলত: এই কোচের আগমনই পাল্টে দেয় জীবনের ক্যারিয়ার।

জীবন জানান, নিয়মিত খেলতে না পারায় আমান মন খুব খারাপ থাকতো। তখন কোচ লেমস আমাকে ডেকে বলেন, ‘আমি যদি আবাহনীর কোচ থাকি তাহলে তুমি নিয়মিত খেলবে। তুমি কোন কোয়ালিটির স্ট্রাইকার তা আমি জাতীয় দলে থাকার সময় দেখেছি।’ শেষে এক ফুটবলারের ইনজুরিতে দলের ফরমেশনে পরিবর্তন আনেন লেমস। ৪-৩-৩ এর বদলে কোচ ৪-২-৩-১ ফরমেশনে আকাশী নীল শিবিরকে খেলাতে থাকেন। এতে ১০ নং ফুটবলারের পজিশনে একাদশে সুযোগ মেলে জীবনের। এই পজিশনে খেলতে নেমেই লিগের প্রথম পর্বে রহমতগঞ্জের বিপক্ষে হ্যাটট্রিক করে বসেন জাতীয় দলের এই ফুটবলার। জীবন তথ্য দেন, ‘ওই ম্যাচই ঘুরিয়ে দেয় আমার ক্লাব ক্যারিয়ার। এরপর থেকে আমি দলে নিয়মিত। সে ধারাক্রমে এবারের লিগে করেছি ১৭ গোল। আর আমার পাস থেকে সাতটি গোল। একজন দেশী ফুটবলারে এটা অনেক বড় পাওনা। এই দ্বৈত পারফরম্যান্সের কারনে এই মওসুমকে আমার ক্যারিয়ারে সেরা সময়ই বলছি।’ এজন্য তিনি পুরো কৃতিত্ব দেন কোচ লেমসকে। ‘তার কারনেই আমার নিয়মিত খেলার সুযোগ হয়েছে।’ জানান, ‘আগের দুই বছর আমি এই আবাহনীতেই ছিলাম। কিন্তু কোচ জর্জ কোটার এবং ড্রাগো মামিস আমাকে নিয়মিত খেলাতেন না। এরপরও ৫টি করে গোল ছিল গত দুই বছরে।’

এবারের এএফসি কাপে দলকে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন করানোর ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখেন জীবন। এই আসরে তার দুই গোল বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামেই ভারতীয় ক্লাব মিনার্ভা পাঞ্জাব এবং নেপালের মানাং মার্সিয়ান্দিন বিপক্ষে। এখন তার লক্ষ্য আসন্ন বিশ্বকাপ বাছাই পর্বে বাংলাদেশ দলের হয়ে গোল করা। যা তিনি মিস করেছেন লাওসের বিপক্ষে বিশ্বকাপ প্রাক বাছাই পর্বে। সাবেক ফুটবলার শাহীনুল কবির শিমুলে ভাতিজা বগুড়ার সন্তান জীবনের মতে, লাওসের বিপক্ষে গোল করতে পারলেতো আমি হিরোই হয়ে যেতাম। এখন বাংলাদেশের পরের ম্যাচ গুলোতে গোলের ধারায় থাকতে চাই লিগের মতোই।

২০১৫ সাল থেকেই জাতীয় দলে খেলছেন জীবন। মাঝে বাদ পড়তে হয়েছিল। অবশ্য লালসবুজ জার্সী গায়ে তার তিনটি গোল আছে। ২০১৬ সালে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচে, ২০১৬ সালের বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপে শ্রীলংকার বিপক্ষে এবং ২০১৫ সালে সাফের আগে চীনের একটি টুর্নামেন্ট। এছাড়া অনূর্ধ্ব-২৩ দলের হয়ে গত ২০১৬ এর এসএ গেমসে তার তিন গোল মালদ্বীপ, ভুটান ও নেপালের বিপক্ষে। তথ্যগুলো দেন জীবনই।

 


আরো সংবাদ



premium cement