২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

নেইমার এত স্বার্থপর!

নেইমার এত স্বার্থপর! - ছবি : সংগৃহীত

বিশ্বকাপের প্রথম রাউন্ডে গ্রুপ ‘ই’তে পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল প্রথম ম্যাচে সুইজারল্যান্ডের বিরুদ্ধে ১-১ গোলে ড্র করার পর সাম্বার দেশের মিডিয়া সমালোচনায় মুখর হয়েছে। অনেক সংবাদপত্রই এই ‘ড্র’কে ‘চরম বিপর্যয়’ আখ্যা দিয়েছে।

ইএসপিএন ব্রাজিলের সাংবাদিক রিবোরো বলেছেন, ‘স্পষ্ট বোঝা গিয়েছে নেইমার একশো শতাংশ ফিট ছিল না। তা সত্ত্বেও ওকে পুরো সময় মাঠে রাখা হল কেন? পায়ে বল পরলেই ও কেবল ড্রিবল করে গেছে। আসলে ও বিপক্ষকে ফাউল করতে যেন আমন্ত্রণ জানিয়েছে। নেইমার কি ব্রাজিলকে একাই ম্যাচ জেতাতে পারবে? তিন মাসের বেশি ও মাঠের বাইরে ছিল চোটের জন্য। কিন্তু কোচ তিতে ওকে পুরো ৯০ মিনিট খেলিয়ে গেলেন।’

সাবেক ফুটবলার এলিয়াস বলেছেন, ‘বরাবর দেখেছি নেইমার একজন সেলফিস ফুটবলার। কেবল ব্যক্তিগত চাতুর্য দেখাতে চায়। কিন্তু টিম গেম খেলে না ও। যখন দেখছে ওকে, বার বার ফাউল করা হচ্ছে, তখন নেইমার ওয়ান টাচে খেলার চেষ্টা করল না কেন? এই ধরনের ব্যক্তিকেন্দ্রিক ফুটবল এখন অচল। ডগলাস কোস্তাকে অনেক আগেই নামানো উচিত ছিল। আর রবার্তো ফারমিনোর জায়গা প্রথম একাদশে। রিজার্ভ বেঞ্চে নয়।’

এদিকে, ব্রাজিলের কোচ তিতে বলেছেন, ‘সাকিরির কর্নার বক্সে উড়ে আসার সময় মিরান্দাকে পেছন থেকে ধাক্কা মারা হয়েছিল। তারপর হেড নিয়ে গোল করেন স্টিভন জুবের। এটা ছিল পরিষ্কার ফাউল। রেফারির ভুল সিদ্ধান্তের খেসারত দিতে হল ব্রাজিলকে। উনি কেন ভিএআর প্রযুক্তির সাহায্য নিলেন না? আমি পরে ভিডিও রিপ্লেতে আমি বার বার দেখেছি, ওটা ছিল ক্লিন ফাউল। চারজন সহকারি রেফারি ইন্সপেকশন রুমে থেকেও এটা ধরতে পারলেন না? আমরা প্রথম গোলটা করার আগে ফুটবলাররা কিছুটা মানসিক চাপে ছিল। তারপরেও প্রচুর সুযোগ পেয়েও নষ্ট হয়েছে। তবে আরও দুটো ম্যাচ বাকি রয়েছে। আশা করি, পরবর্তী দুটি ম্যাচেই জিতব।’

তবে তিতের প্রথম একাদশ চয়ন নিয়ে বিতর্ক দানা বেঁধেছে। গ্যাব্রিয়েল হেসাস ও উইলিয়ান ফ্লপ করা সত্ত্বেও বিরতিতে তিনি চেঞ্জ নিলেন না কেন?

আরো পড়ুন :

শততম আন্তর্জাতিক ম্যাচটা স্মরণীয় করে রাখতে চান সুয়ারেজ
বিশ্বকাপে একজন খেলোয়াড় যেকোনোভাবেই পত্রিকার পাতায় হেডলাইন হয়ে আসতে পারেন। এবার তেমনই এক সুযোগ এসেছে উরুগুয়ের তারকা লুইস সুয়ারেজের সামনে। আগেও তাকে নিয়ে গণমাধ্যও বেশ কয়েকবার সড়ব ছিল, যদিও সেই ঘটনাগুলো ছিল সবই নেতিবাচক। আগামীকাল রোস্তোভে গ্রুপ-এ’তে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে একে অপরের মুখোমুখি হচ্ছে উরুগুয়ে ও সৌদি আরব। এই ম্যাচের মাধ্যমে জাতীয় দলের জার্সি গায়ে শততম ম্যাচ খেলতে মাঠে নামবেন সুয়ারেজ। আর বার্সেলোনার এই তারকার সামনে শততম ম্যাচ স্মরণীয় করে রাখার দারুন এক সুযোগ রয়েছে।

এই ম্যাচে জয়ের মাধ্যমে উরুগুয়ের জন্য নক আউট পর্বের টিকিট নিশ্চিত হতে পারে। কিন্তু যেখানে সুয়ারেজের মত খেলোয়াড় দলে রয়েছেন সেখানে সমর্থকরাও জানেন মাঠ ও মাঠের বাইরে সবসময়ই দল তাকে নিয়ে সতর্ক অবস্থায় থাকে। গত দুটি বিশ্বকাপে সুয়ারেজের বিদায়টা অন্তত সুখকর হয়নি। ২০১০ সালে ঘানার বিপক্ষে কোয়ার্টার ফাইনালে নির্ধারিত সময় ১-১ গোলে ড্র থাকাকালীন অতিরিক্ত সময়ে ১২০ মিনিটে লাল কার্ড দেখে মাঠ ত্যাগে বাধ্য হয়। শেষ মিনিটে ঘানার একটি শট গোলপোস্টের মাঝখান থেকে হাত দিয়ে আটকে দিয়ে লাল কার্ড দেখেন সুয়ারেজ। যার ফলে পেনাল্টি পায় ঘানা। কিন্তু স্পট কিক থেকে গোল করতে ব্যর্থ হওয়ায় শেষ পর্যন্ত ম্যাচটি টাই ব্রেকারে গড়ায়। যদিও পেনাল্টি শ্যুট আউটে ৪-২ গোলে জয়ী হয়ে শেষ চার নিশ্চিত হয়েছিল উরুগুয়ের। ম্যাচটিকে বিশ্বকাপের ইতিহাসে অন্যতম নাটকীয় এক ম্যাচ হিসেবে গণ্য করা হয়।

২০১৪ সালে আবারো আলোচনায় সেই সুয়ারেজ। এবার অবশ্য সম্পূর্ণ ভিন্ন এক ঘটনায় তিনি খলনায়কে পরিনত হয়েছিলেন। ইতালির গিওর্গিও চিয়েলিনিকে কামড়ের দায়ে সব ধরনের ফুটবল থেকে চার মাসের জন্য নিষিদ্ধ হয়েছিলেন। এটি তার ক্যারিয়ারে তৃতীয় কামড়ের ঘটনা ছিল। এই ঘটনাটি কোনভাবেই মেনে নিতে পারেনি উরুগুয়ের ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থা। যদিও খেলোয়াড়দের মধ্যে সুয়ারেজের পক্ষ নিয়ে অনেকেই কথা বলেছিল।

মাঠে সুয়ারেজের কর্মকান্ড বা ব্যবহার নিয়ে প্রশ্ন উঠলেও তার প্রতিভা নিয়ে কোন সন্দেহ নেই। যে কারনে আন্তর্জাতিক ও ক্লাব উভয় ক্ষেত্রেই তিনি স্বমহিমায় নিজেকে প্রমান করেছেন। বিতর্কের শতভাগ পূর্ণ করলেও ৯৯ ম্যাচে ৩১ বছর বয়সী এই তারকা ফরোয়ার্ডের কাছ থেকে উরুগুয়ে সর্বকালের সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ড পেয়েছে। এ পর্যন্ত আন্তর্জাতিক ম্যাচে সুয়ারেজের গোলসংখ্যা ৫১টি। এর মধ্যে পাঁচটি এসেছে বিশ্বকাপ থেকে। মিশরের বিপক্ষে এবারের বিশ্বকাপে ১-০ গোলের জয় দিয়ে শুভ সূচনা করেছে উরুগুয়ে। একাতেরিনবার্গের ঐ ম্যাচে নিজেকে মেলে ধরতে না পারলেও অপেক্ষাকৃত দূর্বল সৌদি আরবের বিপক্ষে নিজের শততম ম্যাচটা ঠিকই স্মরণীয় করে রাখতে চান সুয়ারেজ।

এই ম্যাচে উরুগুয়ের মধ্যমাঠে পরিবর্তনের আভাষ পাওয়া গেছে। নাথিয়ান নানডেজ ও গিওরগিয়ান ডি আরসকায়েটার স্থানে দলে আসতে পারেন কার্লোস সানচেজ ও ক্রিস্টিয়ান রডরিগুয়েজ।

এদিকে স্বাগতিক রাশিয়ার কাছে বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচে ৫-০ গোলে বিধ্বস্ত হওয়া সৌদি আরব যেকোন মূল্যেই টুর্ণামেন্টে টিকে থাকার মিশনে মাঠে নামবে। যে কারনে দলে একাধিক পরিবর্তন আসতে পারে। যদিও ম্যাচটির আগে দলকে বহনকারী বিমানের ইঞ্জিনে আগুন ধরে যাওয়ায় বড় ধরনের দূর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেয়েছে পুরো সৌদি দল। এতে খেলোয়াড়দের মনে কিছুটা হলেও বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। যদিও পরবর্তীতে বিমানটি নিরাপদেই রোস্তোভে অবতরণ করে।


আরো সংবাদ



premium cement