২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন খারিজ

খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবিতে আদালতে আইনজীবীদের বিক্ষোভ : নয়া দিগন্ত -

জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। আদেশে খালেদা জিয়া যদি সম্মতি দেন তা হলে বোর্ডের সুপারিশ অনুযায়ী তার অ্যাডভান্স ট্রিটমেন্টের (বায়োলজিক্যাল) পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের ছয় সদস্যের বেঞ্চ উভয় পক্ষের শুনানি গ্রহণ করে গতকাল বৃহস্পতিবার খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন পর্যবেক্ষণসহ খারিজ করে দেন। বেঞ্চের অন্য সদস্যরা হলেনÑ বিচারপতি মোহাম্মদ ইমান আলী, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী, বিচারপতি জিনাত আরা, বিচারপতি আবু বকর সিদ্দিকী ও বিচারপতি মো: নূরুজ্জামান। আদালতে খালেদা জিয়ার জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন ও জয়নুল আবেদীন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। আর দুর্নীতি দমন কমিশনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান।
শুনানি : শুনানিতে খালেদা জিয়ার আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, আমাদের দেশে যে সংস্কৃতি তাতে রাজনীতি ও জেলখানা পাশাপাশি। সত্য-মিথ্যা যাই হোক না কেন। রাজনীতি করতে হলে জেলে যেতে হবে। আবার জেল থেকে মুক্তি পেয়ে রাজনীতি করতে হবে। ভাবটা এমন যে ক্ষমতায় থাকলে ফেরেশতা আর ক্ষমতার বাইরে থাকলে তার চেয়ে খারাপ মানুষ কেউ নেই। বেগম খালেদা জিয়া খুবই অসুস্থ আমরা তার জামিন চাচ্ছি। আমরা ম্যারিটে বলব না। খন্দকার মাহবুব হোসেন আরো বলেন, তিনি কোনো অর্থ আত্মসাৎ করেননি, তাই তার বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ আসতে পারে না।
শুনানির শুরুতে খালেদা জিয়ার আইনজীবী জয়নুল আবেদীন বলেন, এই আদালতের প্রতি আমাদের পূর্ণ আস্থা আছে। আমরা মানবিক কারণে খালেদা জিয়ার জামিন চাইছি। তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হচ্ছে। যে রিপোর্ট আছে, তার হাত-পা নাড়াতে পারছেন না। তার অবস্থা পঙ্গুত্বের দিকে যাচ্ছে। খালেদা জিয়া সুস্থ মানুষ ছিলেন। কিন্তু আমরা দেখলাম, তার অবস্থা দিন দিন খারাপ হচ্ছে। এই ছয় মাস চিকিৎসার পরও তার এই অবস্থা। আর ছয় মাস পর হয়তো তিনি লাশ হয়ে বের হবেন। আমরা সর্বোচ্চ এই আদালতের পর আর কোথাও যেতে পারব না। খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসা দরকার। এ জন্য মানবিক দিক বিবেচনা করে তার জামিন আবেদন করেছি। আমাদের বলার আর জায়গা নেই। তিনি ৭৫ বছর বয়স্ক একজন নারী। ২২ মাস ধরে জেলে আছেন। মানবিক কারণে আমরা তার জামিন চাই। তিনি বলেন, তারা (মেডিক্যাল বোর্ড) তো বলেনি খালেদা জিয়া হাঁটাচলা করতে পারে। তার স্টেজ ক্রিপলে (পঙ্গুত্ব) আছেন। তিনি উচ্চ আদালতে ১০টি মামলার রায় উপস্থাপন করেন। ওই সব মামলায় সাত বছর বা তার চেয়ে বেশি সাজার মামলায় উচ্চ আদালত আসামিদের জামিন দিয়েছেন।
শুনানিতে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, তার (খালেদা জিয়া) এক মামলায় ১০ বছরের সাজা হয়েছে। অন্য মামলায় সাত বছর হয়েছে। সব মিলে তার ১৭ বছর সাজা। তারা আবেদনে বলেছেন, ১৯৯৭ সালে একবার এবং ২০০২ সালে একবার হাঁটু প্রতিস্থাপন করেছেন তিনি। তা হলে তো ন্যাচারালি তার হাঁটা রেস্ট্রিকটেড হবে। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় যেমন দ্রুত আপিল শুনানি করতে নির্দেশ দিয়েছেন। এটিতেও দিতে পারেন।
খুরশীদ আলম খান বলেন, আবেদনকারীর পক্ষে কয়েকটি মামলার উদাহরণ দেয়া হয়েছে। কিন্তু তাদের হচ্ছে অবৈধ সম্পত্তির মামলা। আর এটা হলো ক্ষমতার অপব্যবহারের। তিনি প্রধানমন্ত্রী পদে আসীন হয়ে চ্যারিটির নামে টাকা আত্মসাৎ করেছেন। হাইকোর্ট অপরাধের গুরুত্ব বিবেচনা করে জামিন দেননি। তিনি আরো বলেন, মেডিক্যাল বোর্ড যদি উনার সম্মতি না পান তা হলে চিকিৎসায় বোর্ড আর ডাক্তারের কী করার আছে? উনি তো সহযোগিতা করছেন না।
সকালে আপিল বিভাগের কার্যক্রম শুরু হলে প্রধান বিচারপতি বলেন, খালেদা জিয়ার জামিন শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষ ও জামিন আবেদনের পক্ষে শুধু ৩০ জন করে আইনজীবী আপিল বিভাগে থাকবেন।
এ সময় খালেদা জিয়ার আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, আপনারা আমাদের শেষ ভরসাস্থল। এখানে অনেক আইনজীবী ঢুকতে পারেনি। তিনি ইন্ডিয়ান সুপ্রিম কোর্টের রায় পড়ে আদালতে বলেন, শুনানিতে আইনজীবীরা উপস্থিত থাকবেন। তখন প্রধান বিচারপতি বলেন, আমরা সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি যারা যারা এনরোলড, তারাই ঢুকবে। আর যাদের এনরোলমেন্ট নেই তাদের আমরা অ্যালাউ করব না। খন্দকার মাহবুব হোসেন তখন বলেন, অনেক ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেলও এখানে আছেন। আমার অনেক আইনজীবী বাইরে। এই বৃদ্ধ বয়সে আমাকে ফাইল নিয়ে আসতে হয়েছে। এ সময় প্রধান বিচারপতি বলেন, আপনার জুনিয়র তো অবশ্যই আসবে। একপর্যায়ে খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, উভয়পক্ষের যারা কেবল এনরোলড তারাই শুধু থাকবে। তখন অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ২০ জন অথবা ৩০ জন করে থাকতে পারে।
তখন প্রধান বিচারপতি বলেন, উভয়পক্ষের ৩০ জন করে থাকেন। এতে অ্যাটর্নি জেনারেল ও খালেদা জিয়ার আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন এবং জয়নুল আবেদীন একমত পোষণ করেন।
এ দিকে আদালতের কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর আদালতে প্রবেশ করতে না দেয়ায় অ্যাডভোকেট আসিফা আশরাফী পাপিয়াসহ শতাধিক আইনজীবীকে আপিল বিভাগের সামনে পুলিশের সাথে তর্ক-বিতর্ক করতে দেখা যায়।
এর আগে সকাল ১০টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত জনাকীর্ণ আদালতে খালেদা জিয়ার জামিন আবেদনের শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। আদালত কক্ষে সিসি ক্যামেরা দেখা যায়। এর আগে খালেদা জিয়ার মেডিক্যাল বোর্ডের প্রতিবেদন আদালতে উপস্থাপন করা হয়।
শুনানিকালে খালেদা জিয়ার আইনজীবী হিসেবে আদালতে ছিলেনÑ প্রবীণ আইনজীবী ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন, এ জে মোহাম্মদ আলী, নিতাই রায় চৌধুরী, মাহবুবউদ্দিন খোকন, তৈমূর আলম খন্দকার, বদরুদ্দোজা বাদল, জামিল আখতার এলাহী, আখতারুজ্জামান, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, এ বি এম রফিকুল হক তালুকদার রাজা, গাজী কামরুল ইসলাম সজল, মো: ফারুক হোসেন, সগির হোসেন লিওন, মির্জা আল মাহমুদ, আইয়ুব আলী আশ্রাফী, আনিছুর রহমান খান, গোলাম আক্তার জাকির, মাহবুবুর রহমান দুলালসহ বিএনপি সমর্থক আইনজীবীরা।
এ দিকে রায় ঘোষণার পর বিএনপি সমর্থক আইনজীবীরা সুপ্রিম কোর্ট থেকে বের হয়ে বার ভবনের সামনে বিক্ষোভ করেন। তারা স্লোগান দেন উই ওয়ান্ট জাস্টিস। অবিলম্বে খালেদা জিয়ার মুক্তি চাই। অন্য দিকে সরকার সমর্থক আইনজীবীরা সুপ্রিম কোর্ট বারের সভাপতির কক্ষের সামনে অবস্থান করে বিক্ষোভ করেন। তারা স্লোগান দেনÑ শেখ হাসিনার ভয় নাই, রাজপথ ছাড়ি নাই।
নিরাপত্তা : শুনানিকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হয় পুরো সুপ্রিম কোর্ট ও আশপাশের এলাকা। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল থেকে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান ফটক, মাজার গেট এবং বার কাউন্সিলের গেটে সাধারণের প্রবেশে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়। পরিচয়পত্র যাচাই করে ঢুকতে দেয়া হয়। এ ছাড়াও সুপ্রিম কোর্ট বার ভবন থেকে আদালতের মূল ভবনের প্রবেশ পথে এবং আপিল বিভাগের সামনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন করা হয়। আপিল বিভাগে আইনজীবীদের প্রবেশে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়। সকালে আপিল বিভাগে মামলা করার অনুমতি রয়েছে কেবল এমন আইনজীবীদের প্রবেশ করতে দেয়া হয়। এ সময় সুপ্রিম কোর্টের কর্মকর্তা ও পুলিশ সদস্যরা আইনজীবীদের পরিচয় ও তালিকা যাচাই করতে দেখা গেছে।
সুপ্রিম কোর্টে এ ধরনের জামিন আবেদন নাকচ নজিরবিহীন : অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন আদালত থেকে বের হয়ে বলেন, জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় সাত বছরের সাজা পেয়েছিলেন খালেদা জিয়া। এর মধ্যে তিনি দেড় বছরের সাজা খেটেছেন। তিনি বয়স্ক, অসুস্থ। তার উন্নত চিকিৎসা দরকার। এ অবস্থাতেও যে তার জামিন আবেদন সুপ্রিম কোর্ট নাকচ করলেন, তা নজিরবিহীন। শুধু বাংলাদেশ নয়, আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশেও এ ধরনের জামিন আবেদন নাকচ করে দেয়ার নজির নেই। খন্দকার মাহবুব বলেন, খালেদা জিয়া পঙ্গু অবস্থায় আছেন। তার উন্নত চিকিৎসা দরকার। শুধু এই মেডিক্যাল গ্রাউন্ডেই নয়, তার বয়স, অসুস্থতা সব কিছু বিবেচনায় নিয়েই আমরা জামিনের আবেদন করেছিলাম। কিন্তু আদালত আমাদের দরখাস্ত নাকচ করে দিয়েছেন। মেডিক্যাল বোর্ডের রেকর্ডে যেভাবে আছে, সেভাবে তার চিকিৎসা করার কথা বলেছেন।
আপিল বিভাগ থেকে জামিন আবেদন নাকচ করে দেয়ায় এই মামলায় খালেদা জিয়ার জামিন পাওয়ার আর কোনো আইনি প্রক্রিয়া বাকি রয়েছে কি না জানতে চাইলে এই আইনজীবী বলেন, আইনিপ্রক্রিয়া থাকবে। যত দিন আইনজীবীরা আছেন, তত দিন আইনি প্রক্রিয়াও থাকবে। দেখেন, কী হয়।
পরবর্তী করণীয় ঠিক করবেন সিনিয়র আইনজীবীরা : জামিন আবেদন খারিজের বিষয়ে পরবর্তী করণীয় সিনিয়র আইনজীবীরা ঠিক করবেন বলে জানিয়েছেন অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন। সুপ্রিম কোর্ট বার অডিটোরিয়ামে এক ব্রিফিংয়ে খালেদা জিয়ার আইনজীবী জয়নুল আবেদীন বলেন, এখন আদালত যে আদেশ দিয়েছেন সেখানে কোনো রিজন (কারণ) উল্লেখ করা হয়নি। দেখব, কী কারণে আমাদের আবেদন খারিজ করা হয়েছে। সে বিষয় দেখে আমাদের একটা সিনিয়র আইনজীবী প্যানেল আছে, ওই প্যানেলের আইনজীবীরা বসে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করবেন। জয়নুল আবেদীন বলেন, একটি রাজনৈতিক মামলায় খালেদা জিয়াকে কারাবন্দী করে রাখা হয়েছে। তিনি খুবই অসুস্থ। তার অ্যাডভান্সড চিকিৎসা দরকার। মানবিক কারণে আমরা আদালতে তার জামিন চেয়েছিলাম। সরকারের রোষানলের কারণে সর্বোচ্চ আদালতে জামিন পেলাম না। কী কারণে জামিন আবেদন খারিজ হয়েছে তা দেখে এবং সিনিয়রদের সাথে কথা বলে পরবর্তী করণীয় ঠিক করব। তিনি অভিযোগ করেন সরকার চাচ্ছে তার মৃত্যু পর্যন্ত তাকে জেলে আটকে রাখতে। এ সময় জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সদস্য সচিব ফজলুর রহমানসহ বিএনপি সমর্থক আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন।
খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার বিশেষ কোনো অবনতি হয়নি : অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেছেন, আমরা দেখিয়েছি, আসলে তার শারীরিক অবস্থার বিশেষ কোনো অবনতি হয়নি। যেভাবে ছিল, সে রকমই আছে। সার্বক্ষণিকভাবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ খালেদা জিয়াকে দেখভাল করছে। কিন্তু তার অনুমতি না পেলে অ্যাডভান্সড চিকিৎসা করা সম্ভব হবে না। খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন খারিজের পর নিজ কার্যালয়ে এক ব্রিফিংয়ে মাহবুবে আলম এ কথা বলেন।
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, খালেদা জিয়া যদি রাজি থাকেন, বঙ্গবন্ধু বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসকদের নির্দেশ দিয়েছেন তার অ্যাডভান্সড চিকিৎসার জন্য। এটা ওনার (খালেদা জিয়া) অনুমতিসাপেক্ষে।
মেডিক্যাল বোর্ডের প্রতিবেদনের বিষয়ে মাহবুবে আলম বলেন, যেই রিপোর্টগুলো আগেও দাখিল করা হয়েছিল। গতকালও যেটা দাখিল করা হয়েছে সেটাও পড়ে শোনানো হয়েছে। তাতে আমরা দেখিয়েছি, আসলে তার শারীরিক অবস্থার বিশেষ কোনো অবনতি হয়নি। যেভাবে ছিল, সে রকমই আছে।
প্রতিবেদনে কী আছে? এমন প্রশ্নে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, সর্বশেষ রিপোর্টে বলা রয়েছেÑ তার দুটো হাঁটু রিপ্লেসমেন্ট করা হয়েছে। একটা ১৯৯৭ সালে, আরেকটা ২০০২ সালে। স্বাভাবিকভাবে এত দিন পরে রিপ্লেসমেন্টের কার্যকারিতা থাকে না। সে ক্ষেত্রে এটার অ্যাডভান্সড চিকিৎসা নিতে হয়। কতগুলো বিশেষ ধরনের ইনজেকশন রয়েছে, সেই ইনজেকশন নেয়ার ব্যাপারে তার অনুমতি না পাওয়া গেলে তা দেয়া যাবে না। উনি (খালেদা জিয়া) অনুমতি দিচ্ছেন না। আদালত বলেছেন, উনি যদি অনুমতি দেন তা হলে সে চিকিৎসা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যেন করে।
রোববার সারা দেশে প্রতিবাদ সমাবেশ ও বিক্ষোভ : বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবিতে সুপ্রিম কোর্ট বারসহ সারা দেশের সব জেলা আইনজীবী সমিতিতে আগামী রোববার বেলা ১টায় প্রতিবাদ সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল কর্মসূচি ঘোষণা করেছে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম। গতকাল জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন। খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন খারিজ হওয়ার পর সুপ্রিম কোর্ট বার ভবনে সাংবাদিকদের কাছে তিনি এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, দেশের ১৬ কোটি মানুষ বেগম খালেদা জিয়ার পাশে আছে।
এর আগে গত ৫ ডিসেম্বর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় বেগম খালেদা জিয়ার জামিন শুনানিকে কেন্দ্র করে আপিল বিভাগে হট্টগোল হয়। ওই দিন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম খালেদা জিয়ার মেডিক্যাল রিপোর্ট আসেনি উল্লেখ করে ১২ ডিসেম্বর পর্যন্ত শুনানি পেছানোর আবেদন করলে আপিল বিভাগ পরবর্তী শুনানির জন্য ১২ ডিসেম্বর ধার্য করেন। এরপর বিএনপি ও সরকার সমর্থক আইনজীবীদের হট্টগোলের কারণে এজলাস ছেড়ে চলে যান প্রধান বিচারপতি ও অন্যান্য বিচারপতি। এরপর আবারো আদালতের কার্যক্রম শুরু হলে খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা জামিন আবেদনের শুনানি করার অনুরোধ জানান। তাতে সাড়া না পেয়ে আইনজীবীরা ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’ বলে স্লোগান দিতে থাকেন।
গত ২৮ নভেম্বর বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার বিষয়ে জানতে মেডিক্যাল বোর্ডের রিপোর্ট তলব করেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। গত ৩১ জুলাই বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন খারিজ করে আদেশ দেন।
গত বছরের ২৯ অক্টোবর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়াকে সাত বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়। পাশাপাশি ১০ লাখ টাকা টাকা জরিমানা করা হয়। এ মামলায় খালেদা জিয়াসহ চার আসামিকে সাত বছর করে কারাদণ্ড দেয়া হয়। ২০১০ সালের ৮ আগস্ট খালেদা জিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে তেজগাঁও থানায় জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলা করে দুদক।


আরো সংবাদ



premium cement