খালেদা জিয়াকে দেখতে যাবেন ঐক্যফ্রন্টের নেতারা

একাদশ সংসদ নির্বাচন নিয়ে দেয়া বক্তব্যে খুশি হয়ে রাশেদ খান মেননকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন।
গতকাল রোববার দুপুরে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির বৈঠকের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘আমি তো এই কথাটি বারবার বলে যাচ্ছি যে, আপনারা কেউ কি ৩০ ডিসেম্বর ভোট দিয়েছিলেন? আমি এই পর্যন্ত একজনের কাছ থেকেও খবর পাইনি যে, হ্যাঁ তারা ভোট দিয়েছেন। দেরিতে হলেও রাশেদ খান মেনন এটা কনফার্ম করলেন। আমি খুশি। এ জন্য আমি উনাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’
ড. কামালের মতিঝিল চেম্বারে দুপুরে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির বৈঠক হয়। বৈঠকে আগামী ২২ অক্টোবর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ফ্রন্টের উদ্যোগে আবরার ফাহাদ হত্যার প্রতিবাদে নাগরিক শোক সমাবেশের বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। এ ছাড়া বৈঠকে ড. কামালের নেতৃত্বে কারাবন্দী বেগম খালেদা জিয়ার সাথে শিগগিরই দেখা করতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। বৈঠকে আবরার হত্যার প্রতিবাদে দেশ-বিদেশে গণস্বাক্ষর সংগ্রহ অভিযান কর্মসূচি গ্রহণের বিষয়েও আলোচনা হয়েছে।
বৈঠকের পর জেএসডি সভাপতি আসম আবদুর রব বলেন, আমরা আগামী ২২ তারিখে আবরার হত্যার প্রতিবাদে ঢাকায় নাগরিক শোক সমাবেশ করব। আজকে পর্যন্ত আমরা অনুমতি পাইনি। সরকার বিভিন্ন রকমের ঘাফেলতি করছে, এখন পর্যন্ত পরিষ্কারভাবে তারা কিছু বলছে না। এই পরিপ্রেক্ষিতে আমরা দেখব- তারা কী করতে চায়। সরকার যদি আমাদের নাগরিক অধিকার না দেয়, মৌলিক অধিকার না দেয় তার বিরুদ্ধে জনগণ ১৭ কোটি মানুষ বাধ্য হবে তার নাগরিক অধিকার আদায় করার জন্য। সমাবেশের ব্যাপারে কামাল হোসেন বলেন, আমরা দাবি জানাচ্ছি, সংবিধানে মৌলিক অধিকারের যে অধ্যায় আছে তার বরাত দিয়ে সরকারকে বলছি, সংবিধান মানুন।
আসম রব বলেন, আজকে সরকারি জোটের একজন নেতা বলেছেন, বাংলাদেশের কোনো জনগণ ভোট দিতে পারে নাই- আমি সাক্ষ্য দেবো। পত্রিকায় এসেছে, উনি (রাশেদ খান মেনন) ক্যাসিনো থেকে মাসে ১০ লাখ টাকা করে পেতেন এবং নির্বাচনের সময়ে কোটি কোটি টাকা নিয়েছেন। আমরা বলতে চাই, আরো রাঘব বোয়াল আছে ওদের নাম প্রকাশ করেন। যারা অভিযান করছেন জুয়ার বিরুদ্ধে, দুর্নীতির বিরুদ্ধে চুঁনোপুটি ধরতেছেন, ওয়ার্ড কমিশনার ধরতেছেন। বড় বড় রাঘাব বোয়াল কোথায়? যুবলীগের ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট বলেছেন, আমি একা কেনো, বাকিরা কোথায়?
আ স ম আবদুর রব বলেন, আমাদের তিন বারের প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া কারাগারে আছেন। সারা জাতি আজকে উৎকণ্ঠিত যেকোনো সময়ে একটা দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। উনার একটা হাত অবশ হয়ে গেছে, উনি খেতে পারেন না। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে একটা প্রতিনিধি দল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানাব- আমরা উনাকে দেখতে যেতে চাই, অবস্থাটা কী- এটা জানার জন্য।
বৈঠকে বিএনপির সিনিয়র নেতা ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, জহির উদ্দিন স্বপন, জেএসডির তানিয়া রব, আবদুল মালেক রতন, শহিদউদ্দিন মাহমুদ স্বপন, গণফোরামের সুব্রত চৌধুরী, রেজা কিবরিয়া, মোশতাক হোসেন, নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না, মমিনুল ইসলাম, বিকল্প ধারা অধ্যাপক নুরুল আমিন ব্যাপারী, গণস্বাস্থ্য সংস্থার ডা: জাফরুল্লাহ চৌধুরী প্রমুখ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
ঐক্যফ্রন্টের দফতর প্রধান জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু জানিয়েছেন, আ স ম আব্দুর রবের স্বাক্ষরে বেগম জিয়ার সাথে সাক্ষাতের আবেদনটি আজ-কালের মধ্যেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ে পৌঁছে দেয়া হবে।