২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

নির্বাচনী মাঠ সহিংস

হামলার শিকার মির্জা আব্বাস, মাহাবুব উদ্দিন খোকন, হাসিনা আহমদ ও অমিতসহ অনেক প্রার্থী
বাঁ থেকে : রাজধানীর বিজয়নগরে বিএনপি প্রার্থী মির্জা আব্বাসের ওপর হামলা; নোয়াখালীতে গুলিবিদ্ধ বিএনপি প্রার্থী ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন; যশোরে বিএনপি প্রার্থী অনিন্দ্য ইসলাম অমিতের সভায় বোমা হামলা :নয়া দিগন্ত -

সহিংস হয়ে ওঠেছে নির্বাচনী মাঠ। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মনোনীত প্রার্থী এবং তাদের নির্বাচনী প্রচারণায় ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ ও পুলিশের হামলা অব্যাহত রয়েছে। গতকাল শনিবার ঢাকা-৮ আসনের প্রার্থী মির্জা আব্বাস, নোয়াখালীতে ব্যারিস্টার মাহাবুব উদ্দিন খোকন, কক্সবাজারে হাসিনা আহমদসহ সারা দেশে ধানের শীষ প্রতীকের অনেক প্রার্থীর নির্বাচনী প্রচারণায় হামলা করা হয়। নোয়াখালীতে ব্যারিস্টার মাহাবুব উদ্দিন খোকন আওয়ামী লীগের হামলা ও পুলিশের রাবার বুলেটে গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। চকরিয়ায় গণসংযোগকালে আওয়ামী লীগের হামলার সময় স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় রক্ষা পান বিএনপি প্রার্থী হাসিনা আহমদ। যশোরে বিএনপি প্রার্থী অমিত ও আখাউড়ায় মুসলিম উদ্দিনের গণসংযোগে হামলা করা হয়েছে। পটুয়াখালীতে হামলা করা হয়েছে বিএনপি প্রার্থী গোলাম মওলা রনির স্ত্রীর ওপর। সারা দেশে এসব হামলায় বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের শতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। অনেক গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। পুলিশ বিএনপির অনেক নেতাকর্মীকে আটক করেছে।
রাজধানীতে হামলার শিকার মির্জা আব্বাস : আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক জানান, রাজধানীর সেগুনবাগিচায় নির্বাচনী প্রচারণাকালে ঢাকা-৮ আসনে বিএনপির প্রার্থী মির্জা আব্বাসের ওপর হামলা চালানো হয়েছে। গতকাল দুপুরে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, মির্জা আব্বাস কয়েকটি এলাকায় নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে সেগুনবাগিচা কাঁচাবাজারসংলগ্ন রাস্তায় পৌঁছলে বাঁশ, লাঠি, রড, চাপাতি হাতে ৩০-৪০ জনের একদল যুবক তার ওপর হামলা চালায়। মির্জা আব্বাসকে এ সময় ঘিরে ধরে কোনো রকমে রক্ষা করেন তার নেতাকর্মীরা। হামলায় কমপক্ষে ৬০ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন মির্জা আব্বাসের সাথে থাকা কর্মীরা। আহতরা হলেন শ্রমিক দল নেতা আওয়াল, স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা আবুল কালাম, শাহাদাত হোসেন, নুর আলম, মো: রানা, মহিলা দল নেত্রী জাহানারা বেগম, বিলকিস, মণি, রাশিদা, নিরাপত্তারক্ষী কফিল উদ্দিন, জাহিদ হোসেন, আলম, আবদুস সালাম, নাদিয়া পাঠান পাপন, বিএনপি নেতা মানিক, যুবদল নেতা ইমন, শওকত আলী স্বপন, মিজান, আলীমুদ্দিন প্রমুখ। অনেককে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হামলার শিকার কয়েকজনকে আটকও করা হয়েছে।
হামলার প্রতিবাদে দুপুরে মির্জা আব্বাস তার শাজাহানপুরের বাসভবনে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, আমাদের নিয়মতান্ত্রিক নির্বাচনী প্রচারণার কার্যক্রমে আওয়ামী লীগ এভাবে সহিংস আক্রমণ চালাবে আমি ভাবতেও পারিনি। তিনি আহত নেতাকর্মীদের মাথায়, পিঠে, হাতে ও পায়ে আঘাতের চিহ্ন সাংবাদিকদের দেখিয়ে বলেন, এই হচ্ছে সারা বাংলাদেশের পরিস্থিতি। সরকার বলছে, বিএনপি শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে থাকবে কি না। আসলে আমাদের শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে রাখবে কি না সেটাই প্রশ্ন। আমরা নির্বাচন করতে পারব কি না এ বিষয়ে দেশের জনগণের মাঝে সন্দেহ রয়েছে। আমি সাংবাদিক বন্ধুদের মাধ্যমে জানতে চাই, আসলে সরকার কি চায়? বিএনপিকে নির্বাচন করতে আদৌ দেবে কি দেবে না এ বিষয়ে সরকারের সিদ্ধান্ত স্পষ্ট হওয়া উচিত।
তিনি বলেন, তফসিল ঘোষণার সময় সরকার বলেছিল, বিএনপি নেতাকর্মীদের নামে নতুন কোনো মামলা হবে না এবং পুরনো মামলায় গ্রেফতার করা হবে না। এ বক্তব্যের সাথে বাস্তবতার কোনো মিল নেই। প্রতিদিন নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে, নতুন নতুন গায়েবি মামলা দেয়া হচ্ছে। আমরা নির্বাচনে থাকতে চাই বলেই সরকারের এ আক্রোশ। মির্জা আব্বাস বলেন, আমাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। পালানোর সুযোগ আমাদের নেই। আজ আমার ওপর হামলা হয়েছে, চার দিন আগে ঢাকা-৯ নির্বাচনী আসনের ধানের শীষের প্রার্থী, আমার সহধর্মিণী আফরোজা আব্বাসের ওপর হামলা চালানো হয়েছে। কিন্তু হামলা মামলা যতই হোক নির্বাচনের মাঠ আমরা ছাড়ব না।
ব্যারিস্টার মাহাবুব উদ্দিন খোকন গুলিবিদ্ধ
নোয়াখালী সংবাদদাতা জানান, নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের মধ্যে সংঘর্ষে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও সোনাইমুড়ী-চাটখিল আসনের প্রার্থী ব্যারিস্টার মাহাবুব উদ্দিন খোকন গুলিবিদ্ধ হওয়াসহ অর্ধশত নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। গুরুতর আহত অবস্থায় ব্যারিস্টার মাহাবুব উদ্দিন খোকনকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহত অন্যদের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়।
জানা গেছে, সোনাইমুড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার এবং পুলিশ প্রশাসন থেকে অনুমতি নিয়ে গত শনিবার বিকেলে গণসংযোগের আয়োজন করেন ব্যারিস্টার মাহাবুব উদ্দিন খোকন। এ উপলক্ষে সোনাইমুড়ী কলেজ মাঠে বিএনপি কর্মীরা জড়ো হন। এ সময় আওয়ামী লীগের সাথে বিএনপির সংঘর্ষ হয়। পরে সোনাইমুড়ী বাজারে গণসংযোগকালে পুলিশ দুই দিক থেকে ব্যারিকেড দেয়।। একপর্যায়ে পুলিশ দু’দিক থেকে লাঠিচার্জ করে এবং রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। এ সময় ব্যারিস্টার খোকন আহত হন। তার শরীরে পাঁচটি রাবার বুলেট বিদ্ধ হয়েছে।
আওয়ামী লীগের কর্মীরা সোনাইমুড়ী বাইপাসের সব কটি চেয়ার কোচ কাউন্টার, সোনাইমুড়ী পৌর বিএনপির সভাপতি মোতাহার হোসেন মানিকের ধানসিঁড়ি হোটেল, বিএনপি নেতা ডা: জালালের ফার্মাসি ভাঙচুর, লুট ও নুরুল ইসলাম নুরুর ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ভাঙচুর করে।
কক্সবাজার, কক্সবাজার দক্ষিণ ও চকরিয়া সংবাদদাতা জানান, কক্সবাজার-১ (চকরিয়া-পেকুয়া) আসনে বিএনপি প্রার্থী অ্যাডভোকেট হাসিনা আহমদের গাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেছে আওয়ামী লীগের লোকজন। চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজারা ইউনিয়নের কাটাখালী ব্রিজের কাছে নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর সময় ডুলাহাজারা ইউপির সাবেক মেম্বার সাইফুলের নেতৃত্বে এ হামলা করা হয় বলে হাসিনা আহমদ অভিযোগ করেন। হামলাকারীরা তার গাড়িসহ তিনটি গাড়ি, চারটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর ও দু’টি মোটরসাইকেল ছিনিয়ে নেয়। হামলায় বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের শতাধিক নেতাকর্মী আহত হন। রক্ষা পায়নি সাংবাদিকদের গাড়িও। হাসিনা আহমদকে এলাকাবাসী নিরাপদে সরিয়ে নেয়ায় তিনি প্রাণে রক্ষা পান। তবে আওয়ামী লীগের প্রার্থী জাফর আলম এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, বিএনপির প্রার্থী জনসমর্থন হারিয়ে ফেলায় এসব মিথ্যা অভিযোগ করছেন।
হামলার পর কক্সবাজার জেলা বিএনপি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে অ্যাডভোকেট হাসিনা আহমদ বলেন, তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে এ আসনের আওয়ামী লীগ প্রার্থী জাফর আলমের কর্মী-সমর্থকেরা এ হামলা করেছে। স্থানীয় লোকজন ও মহিলারা তাকে উদ্ধার না করলে যেকোনো ঘটনা ঘটতে পারত। তিনি জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা, পুলিশ সুপার ও চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে এ ঘটনার লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
উপজেলা বিএনপির সভাপতি মিজানুর রহমান চৌধুরী খোকন মিয়া জানান, হাসিনা আহমদসহ নেতাকর্মীরা কাটাখালী ব্রিজ এলাকায় পৌঁছলে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা হাসিনা আহমদের গাড়িতে হামলা চালায়। ওই এলাকা থেকে বের হয়ে আসার পথে ডুলাহাজারা সাফারি পার্কের গেটের সামনে এলে আবারো হামলার শিকার হন হাসিনা আহমদসহ নেতাকর্মীরা। আহতরা চকরিয়া সরকারি হাসপাতাল ও বিভিন্ন হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে তিনি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ১৩ ডিসেম্বরও চকরিয়া উপজেলার পৌর এলাকার ৮ নম্বর ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ প্রার্থী জাফর আলমের নেতৃত্বে হাসিনা আহমদের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা হয়েছে। হামলায় চকরিয়া পৌর বিএনপির সভাপতি ও সাবেক পৌরমেয়র নুরুল ইসলাম হায়দারসহ পাঁচ নেতাকর্মী আহত হন।
হাসিনা আহমদ জানান, হামলার পর চকরিয়া থানায় অভিযোগ জানাতে গেলে আওয়ামী লীগ প্রার্থী জাফর আলমের নেতৃত্বে থানা কম্পাউন্ডের বাইরে তার নেতাকর্মীদের ওপর আরেক দফা হামলা চালানো হয়। এ সময় তিনিও থানা কম্পাউন্ডে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন। প্রায় দু’ঘণ্টা পর পুলিশের সহায়তায় তিনি বাড়ি ফিরে যান।
চট্টগ্রাম ব্যুরো জানায়, চট্টগ্রামের বিভিন্ন আসনে বিএনপি নেতাকর্মী আটক, আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হামলা, মাইকিংয়ে বাধা, পোস্টার ছিনতাইয়ের অভিযোগ করা হয়েছে বিএনপির প থেকে।
চট্টগ্রাম-৪ আসনে যুবদল নেতা আহত : চট্টগ্রাম-৪ আসনে সীতাকুণ্ড আসনের ১০নং ইউনিয়নের আবদুল্লাহ্ ঘাটা এলাকায় শুক্রবার রাতে পোস্টার লাগানোর সময় ছাত্রলীগ ও যুবলীগের সন্ত্রাসীরা ১নং ওয়ার্ড যুবদলের সহসভাপতি মো: শওকত আলীর ওপর সন্ত্রাসী হামলা চালায়। এ সময় তার হাতে থাকা সব ব্যানার-পোস্টার পুড়িয়ে দেয়া হয়। তাকে গুরুতর আহতাবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
চট্টগ্রাম-১০ আসনে স্বেচ্ছাসেবক দলনেতা গ্রেফতার : চট্টগ্রাম-১০ আসনের খুলশী ঝাউতলা এলাকা থেকে গত শুক্রবার জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলনেতা আলিম উদ্দিন গুড্ডুকে আটক করে পুলিশ। জুমার নামাজের পর খুলশী থানার ওসির নেতৃত্বে পুলিশ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও যুবলীগের একদল সন্ত্রাসী গুড্ডুর বাসায় গিয়ে তাকে না পেয়ে স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও যুবলীগ সন্ত্রাসীরা তার মা-বোনকে নির্যাতন করে। পরে এলাকাবাসী তাদের আহতাবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়।
হাটহাজারীতে আটক : বিএনপিকর্মী সাইফুলের খোঁজ না পাওয়ায় উৎকণ্ঠা : চট্টগ্রাম-৫ আসনে হাটহাজারীতে গত বৃহস্পতিবার রাতে নির্বাচনী পোস্টার লাগাতে গিয়ে পুলিশের হাতে আটক হয়েছেন বিএনপিকর্মী সাইফুল তালুকদার। খবর পেয়ে তার আত্মীয়স্বজন হাটহাজারী থানায় গেলে পুলিশ তাকে আটক কিংবা গ্রেফতারের কথা অস্বীকার করে। কোনো খোঁজ না পাওয়ায় সাইফুলের পরিবারে উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে।
পটিয়া-চন্দনাইশ (চট্টগ্রাম) সংবাদদাতা জানান, চট্টগ্রাম-১৪ চন্দনাইশ সাতকানিয়া আংশিক আসনে ২০ দলীয় জোটের মনোনতি প্রার্থী কর্ণেল অলির ছাতা প্রতিকের নির্বাচনী গণসংযোগে হামলা ও পাল্টা হামলায় কর্ণেল অলি আহমদের পুত্র অধ্যাপক ওমর ফারুকসহ উভয় দলের ১২ জন আহত হয়েছেন। গতকাল বেলা ১ টায় কেউচিয়া তেমুহনী এলাকায় এই সংর্ষের ঘটনা ঘটে। আহত ওমর ফারুককে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
যশোর অফিস জানায়, যশোর-৩ আসনের বিএনপি প্রার্থী অনিন্দ্য ইসলাম অমিতের পথসভার বোমা হামলা চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। নির্বাচনী গণসংযোগ চলাকালে শনিবার বিকেলে যশোর শহরের বারান্দিপাড়া কদমতলা এলাকায় ক্ষমতাসীন দলের লোকজন তিনটি বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। এ সময় পুরো এলাকা ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে যায়। এর আগে সকালে ১০টা ৪৫ মিনিটের সময় আরবপুর ইউনিয়নের কদমতলা মোড়ে গণসংযোগ শেষে পথসভা পর ১০ জন যুবক মোটরসাইকেলে এসেই পরপর দু’টি হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ত্রাস সৃষ্টি করে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সংবাদদাতা জানান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ (কসবা ও আখাউড়া) আসনে বিএনপি প্রার্থী মুসলিম উদ্দিনের নির্বাচনী পরামর্শ সভায় হামলা ও ভাঙচুর করেছে যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা।
গলাচিপা (পটুয়াখালী) সংবাদদাতা জানান, পটুয়াখালী-৩ (গলাচিপা-দশমিনা)আসনের বিএনপি প্রার্থী গোলাম মাওলা রনির স্ত্রী রুনু বেগমকে বহনকারী গাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর করা হয়েছে। শনিবার গলাচিপা পৌরশহরের মদিনা মসজিদ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ সময়ে গাড়িতে অবস্থানরত প্রবীণ বিএনপি নেতা ও সাবেক পৌর চেয়ারম্যান আবু তালেব মিয়া আহত হন।
মাদারীপুর সংবাদদাতা জানান, মাদারীপুর-৩ আসনের বিএনপির প্রার্থী ও কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহী কমটির সহগণশিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক আনিসুর রহমান খোকন তালুকদারের নির্বাচনী প্রচারণায় বাধা দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ সময় দুর্বৃত্তরা হামলা চালিয়ে প্রচার কার্যক্রমেরত মাইক ও ইজিবাইক ভাঙচুর করে। হামলায় দুই বিএনপি কর্মী আহত হয়েছেন।
সাতক্ষীরা সংবাদদাতা জানান, সাতক্ষীরা সদর আসনে ২০ দলীয় জোট মনোনীত প্রার্থী (জামায়াত) মুহাদ্দিস আব্দুল খালেকের স্ত্রী সাজেদা বেগম অভিযোগ করেছেন, তার স্বামীর ওপর হয়রানিমূলক মামলা দেয়ার প্রতিবাদে শুক্রবার সাতক্ষীরা প্রেস কাবে প্রেস ব্রিফিং করার পর রাতে তাদের বাসায় পুলিশ হামলা চালিয়েছে।
খাগড়াছড়ি সংবাদদাতা জানান, খাগড়াছড়ি জেলার মাটিরাঙ্গার ৩ নম্বর ওয়ার্ড কাজীপাড়া এলাকায় গতকাল বিকেল ৪টায় ধানের শীষ প্রতীকের নির্বাচনী প্রচারণায় হামলার অভিযোগ করেছে বিএনপি।
মণিরামপুর (যশোর) সংবাদদাতা জানান, যশোর-০৫ মণিরামপুর আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী আলহাজ কামরুল হাসান বারীর (আওয়ামী লীগ, বিদ্রোহী) নির্বাচনী কার্যালয় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে দুর্বৃত্তরা। শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে মণিরামপুর পৌরশহরের গরুহাটা মোড়ে অবস্থিত নির্বাচনী কার্যালয়টিতে ১০-১২ জন যুবক হামলা চালায়। তারা অফিসের আসবাবপত্র ভাঙচুর ও পোস্টারে অগ্নিসংযোগ করে।
পটুয়াখালী সংবাদদাতা জানান, পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলায় কালাইয়া ও কাছিপাড়া এ দুই ইনিয়নের বিএনপির সভাপতিসহ ১২ কর্মীকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। এদের মধ্যে কালাইয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মোহাম্মদ আলীকে (৫০) ও মো: আফজাল বয়াতীকে (৫০) বরিশাল শেরেবাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
শরীয়তপুর সংবাদদাতা জানান, শরীয়তপুর-২ আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থীর সমর্থকেরা বিএনপি প্রার্থী শফিকুর রহমান কিরণের শতাধিক ধানের শীষের পোস্টার ছিঁড়ে ফেলেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে বিএনপি নেতাকর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। শনিবার দুপুরে শরীয়তপুর-২ আসনের সখিপুর থানার দক্ষিণ তারাবুনিয়া ইউনিয়নের আফামোল্যার বাজারে ও একই থানার বালারবাজারে চারশতাধিক পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা হয়। আওয়ামী লীগের সমর্থকরা হামলা চালিয়ে সখিপুরের চরসেন্সাস ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতিসহ সাতজনকে বেদম মারধর করে। তাদের স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
খাগড়াছড়ি ও রামগড় সংবাদদাতা জানান, খাগড়াছড়ির রামগড়ে বিএনপি প্রার্থীর নির্বাচনী গণসংযোগকালে আওয়ামী লীগের হামলায় ১৪ জন আহত হয়েছেন। শুক্রবার বিকেলে রামগড় উপজেলার সোনাইপোল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় প্রতিবাদ মিছিল করেছে খাগড়াছড়ি জেলা বিএনপি।
ঝালকাঠি সংবাদদাতা জানান, কাঁঠালিয়া উপজেলার আমুয়া ইউনিয়নে বিএনপি প্রার্থী ব্যারিস্টার এম শাহজাহান ওমরের দু’টি নির্বাচনী কার্যালয় দুর্বৃত্তরা ভেঙে ফেলেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ সময় আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সমর্থকদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়।
এতে পুলিশের এএসআইসহ কমপক্ষে পাঁচ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। গতকাল শনিবার বেলা ২টা থেকে ৩টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
কাঁঠালিয়া থানার ওসি মো: এনামুল হক বলেন, ভোট চাওয়াকে কেন্দ্র করে উভয় গ্রুপ ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এতে চার-পাঁচজন আহত হয়েছেন।
দাউদকান্দি (কুমিল্লা) সংবাদদাতা জানান, মেঘনা উপজেলায় আ’লীগ নেতাকর্মীদের হামলায় উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও বিএনপি নেতাকর্মীদের হামলায় উপজেলা যুবলীগের সাবেক আহ্বায়ক আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। বিএনপি নেতৃবৃন্দ জানান, তারা প্রচারকাজে বের হলে আওয়ামী-যুবলীগের নেতাকর্মীরা তাদের ওপর হামলা চালালে উপজেলা বিএনপি সভাপতি রমিজ উদ্দিন (লন্ডনী) মারাত্মকভাবে আহত হন। অন্য দিকে শুক্রবার রাতে দাউদকান্দির ইলিয়টগঞ্জ টামটায় বিএনপির ডিজিটাল ব্যানার পুড়ে ফেলা ও বৃহস্পতিবার বিকেলে উপজেলা সদর বিএনপি কার্যালয় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সংবাদদাতা জানান, জেলার বিজয়নগরে ধানের শীষের প্রচারণার সময় জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মো: সিরাজুল ইসলামের গাড়িতে হামলা করেছেন নৌকা সমর্থকেরা।


আরো সংবাদ



premium cement