২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

যে কারণে আসিফ নজরুলকে দেখে কান্নায় ভেঙে পড়লেন আখতার

আসিফ নজরুল স্যারকে দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন আখতার হোসেন। - ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের ‘ঘ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা বাতিলের দাবিতে আমরণ অনশন করছে একই বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আখতার হোসেন। অনশনের তিন দিন পার হলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে তার সাথে কোনো যোগাযোগ করা হয়নি।

এদিকে তৃতীয় দিনে শারিরীক অবস্থায় অবনতি ঘটে এই শিক্ষর্থীর। তাকে দেখতে আসা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক আসিফ নজরুলের বুকে কান্নায় ভেঙে পড়েন।

আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০.৪০ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যে এই দৃশ্য দেখা যায়।

এই সময় আইন বিভাগের অধ্যাপক আসিফ নজরুল তার শারিরীক অবস্থার খোঁজ-খবর নেন। কথা বলার এক পর্যায়ে অসুস্থ আখতার কান্না করতে থাকেন। আসিফ নজরুল এই সময় তাকে বুকে জড়িয়ে নেন। তার পাশে থাকবেন বলে জানান।

মানববন্ধনে সংহতি প্রকাশ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেন, আমি তার সাথে যখন কথা বলছি তখন মনে হলো আখতার কাদঁছে কেন? আসলে তার শিক্ষকরা অর্থাৎ আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন সার্বিকভাবে আমরা কতটা অমানুষ হয়ে গিয়েছি কতটা অসংদেনশীল হয়ে গেছি আমরা কতটা অনাচারী হয়ে গেছি এটা রিয়ালাইজ করে কাদঁছে আখতার হোসেন।

তাকে কেউ দেখতে আসেনি উল্লেখ করে তিনি বলেন, একটা প্রশ্নপত্র ফাসঁ হয়েছে এটার প্রতিবাদে একটা ছেলে বসে আছে কেউ তাকে দেখতে আসেনি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এই দায়িত্ব অনুভব করছেনা। এর চেয়ে দুর্ভাগ্যজনক, দুঃখজনক আর কি হতে পারে। আখতার এই ইউনিভার্সিটির ছাত্র। এই ইউনিভার্সিটির প্রতিটি ছাত্রের দেখাশুনা করা, নিরাপত্তা দেওয়া ভালো-মন্দ দেখা এই বিশ্ববিদ্যালয়েরই দায়িত্ব। এটা প্রতিটি শিক্ষকের দায়িত্ব। আমরা এই দায়িত্ব পালন করতে ব্যার্থ হয়েছি।

এর আগে বুধবার ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীও আখতারের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করেন।

কোটা সংস্কারের আন্দোলনের প্ল্যাটফর্ম বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের নেতারাও বুধবার আখতারের দাবির প্রতি একাত্মতা ঘোষণা করেন। এছাড়া দাবি আদায়ে আজ সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে বিশ্ববিদ্যালয়ে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। দুপুর ১২টায় এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকার পরও বিপুল সংখ্যক উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে।

 

আরো পড়ুন: আরো পড়ুন: ঢাবি ‘ঘ’ ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষার ফলফেল করা ছাত্র রেকর্ড নম্বর পেয়ে প্রথম 

নয়া দিগন্ত অনলাইন, ১৭ অক্টোবর ২০১৮, ১৯:১৭


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষে ১ম বর্ষ স্নাতক (সম্মান) শ্রেণির ভর্তি পরীক্ষায় ‘ঘ’ ইউনিটে রেকর্ড নম্বার পেয়ে প্রথম হয়েছেন জাহিদ হাসান আকাশ। কিন্তু ‘গ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় ফেল করেছেন তিনি।

জাহিদ হাসান আকাশ উচ্চ মাধ্যমিক পড়েছেন রাজউক উত্তরা মডেল কলেজ থেকে। এছাড়া এই পরীক্ষার্থী ঢালিউড নায়িকা শবনম ইয়াসমিন বুবলির ভাই বলে জানা গেছে। সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠিত ঢাবির ‘গ’ ইউনিটের পরীক্ষায় এই শিক্ষার্থী বাংলায় পেয়েছেন ১০.৮ ও ইংরেজিতে ২.৪০ নম্বার। ১২০ নম্বরের মধ্যে মোট পেয়েছেন মাত্র ৩৪.৩২।

অথচ গত মঙ্গলবার বিকালে প্রকাশিত ‘ঘ’ ইউনিটের ফলাফলে সে বাংলায় ৩০ এর মধ্যে ৩০, ইংরেজিতে ৩০ এর মধ্যে ২৭.৩০ নম্বর পেয়েছেন। এমনকি, সর্বমোট ১২০ এর মধ্যে ১১৪.৩০ পেয়েছেন, যা ঢাবির ২০ বছরের ইতিহাসে কেউ পায়নি!

এক ইউনিটের ফেল করা শিক্ষার্থী আরেক ইউনিটে রেকর্ড গড়ে প্রথম হয়েছেন বিষয়টিকে ঘিরে ঢাবি শিক্ষার্থীদের ফেসবুক গ্রুপ ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারে’ সমালোচনার ঝড় ওঠেছে। গ্রুপের অনেকের দাবি, এবার ‘ঘ’ ইউনিটের প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে, যা দিবালোকের ন্যায় পরিষ্কার। আর, এই ছেলেও হয়তো প্রশ্ন আগেই পেয়েছিল। ফলে তার এই রেকর্ড মার্কস উঠেছে।

এ বিষয়ে ‘ঘ’ ইউনিট পরীক্ষার প্রধান সমন্বয়কারী সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক সাদেকা হালিম সাংবাদিকদের বলেন, ‘ভাইভাতে ভর্তি কমিটির লোক থাকবে, বিভাগের লোক থাকবে। সবাই মিলে আমরা যাচাই-বাছাই করব। অস্বাভাবিক কোনো কিছু পেলে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান বলেন, ‘জালিয়াতি করে রেহাই পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আমরা এ ব্যাপারে কাজ করছি। কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ পেলে আমরা সাথে সাথে ব্যবস্থা নেব।’

উল্লেখ্য, গত শুক্রবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যলয়ের ‘ঘ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ ওঠে। অনুষ্ঠিত এই পরীক্ষায় ফাঁস হওয়া প্রশ্নের সাথে পরীক্ষার ৭২টি প্রশ্নের হুবহু মিল পাওয়া যায়। যার প্রমাণ সাংবাদিকদের কাছে রয়েছে।

তবে, এ অভিযোগ প্রাথমিকভাবে সরাসরি অস্বীকার করেছিল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। পরে তারা বিষয়টি তদন্তের জন্য কমিটি গঠন করে। তদন্ত শেষ না হতেই মঙ্গলবার বিকালে ফলাফল প্রকাশ করা হয়। এ নিয়ে চারিদিকে তীব্র সমালোচনা চলছে।


আরো সংবাদ



premium cement