নতুন বিতর্ক সৃষ্টি করা কার স্বার্থে?
- ১৯ আগস্ট ২০১৮, ০০:০০
বাংলাদেশে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করার ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) ওপর তাগিদের পর তাগিদ এসেছে এবং এখনো আসছে। কিন্তু সেই দাবি মেটাতে ইসি বারবার ব্যর্থ হচ্ছে। একের পর এক বিতর্কিত নির্বাচন আয়োজন করে চলেছে নির্বাচন কমিশন। দলনিরপেক্ষ সাধারণ মানুষ ও সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দল এবং আন্তর্জাতিক মহল ক্রমেই এসব নির্বাচন প্রশ্নে জোরালো আপত্তি তুলছে। তাদের দাবি, ইসিকে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে অন্তত অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করতে হবে। এই অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করতে ইসিকে পক্ষপাতদুষ্টতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। নির্বাচনে সব পক্ষের জন্য একটি লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড সৃষ্টি করতে হবে। নির্বাচনের আগে জাতীয় সংসদ ভেঙে দিতে হবে। একটি নির্বাচনকালীন সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন করতে হবে। অতি সম্প্রতি সরকারবিরোধী ২০ দলীয় জোট ও এর বাইরে থাকা আরো বেশ কিছু দল মিলে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিতে যে বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার কথা শোনা যাচ্ছে, সেখানে দাবি তোলা হবে নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার করা যাবে না। এরপরও বিদ্যমান নানা নির্বাচনী বিতর্কের অবসান ঘটানোর কোনো উদ্যোগ না নিয়ে নির্বাচন কমিশন বলছে, তারা জাতীয় নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত। তা ছাড়া ইসি একটি নতুন বিতর্ক সৃষ্টি করতে যাচ্ছে আগামী নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের পদক্ষেপ নিয়ে; যেখানে ইতোমধ্যে একটি জাতীয় ঐকমত্য রয়েছে জাতীয় নির্বাচনে কোনো ইভিএম ব্যবহার না করার ব্যাপারে।
আমাদের মনে হয়েছে, এ নির্বাচন কমিশন শুধু সেসব কাজেই অতি আগ্রহী হয়ে উঠেছে, যা সরকারের চাওয়া-পাওয়ারই অংশ। গতকালের একটি জাতীয় দৈনিক শীর্ষ সংবাদে জানিয়েছেÑ নির্বাচন কমিশন জরুরি ভিত্তিতে দেড় লাখ ইভিএম (ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন) কিনতে যাচ্ছে। আগামী জাতীয় নির্বাচনে কিছু ভোটকেন্দ্রে এসব মেশিন ব্যবহার করা হবে। আসন্ন জাতীয় সংসদে ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ৪৪ হাজার। মেশিনগুলো কেনার লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশন গত সপ্তাহে একটি প্রকল্প অনুমোদন করে পরিকল্পনা কমিশনে পাঠিয়েছে। ‘নির্বাচন ব্যবস্থাপনায় অধিকতর স্বচ্ছতা আনার লক্ষ্যে ইভিএম ক্রয়, সংরক্ষণ ও ব্যবহার’ শীর্ষক এ প্রকল্পে ব্যয়ের পরিমাণ ধরা হয়েছে তিন হাজার ৮২১ কোটি ৪০ লাখ ৬০ হাজার টাকা। এর বেশির ভাগই খরচ হবে ইভিএম কেনার খাতে। প্রতি ইউনিট ইভিএমের দাম পড়ছে দুই লাখ টাকা। তা ছাড়া ইভিএম জনপ্রিয় করে তুলতে শিগগিরই ইভিএম মেলার আয়োজন করবে বলেও জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। কিন্তু আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে অনুষ্ঠিত ইসির সংলাপে বিএনপিসহ বেশির ভাগ রাজনৈতিক দল ইভিএম ব্যবহারের বিপক্ষে অভিমত দেয়। তবে সরকারি দল আওয়ামী লীগ ও সরকার সমর্থিত কিছু দল ইভিএম ব্যবহারের পক্ষে। কিছু স্থানীয় নির্বাচনে আংশিকভাবে ইভিএম ব্যবহার হলেও দেশে ও বিদেশে ইভিএম ব্যবহারে প্রচুর বিতর্ক রয়েছে। কোনো উন্নত দেশও আজ পর্যন্ত এই বিতর্ক থেকে বাদ যায়নি। এখন স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্নÑ প্রবল বিতর্কিত এই ইভিএম ব্যবহারে কেন ইসি গোঁ ধরেছে।
আমরা বলব, এমনিতেই জাতীয় নির্বাচন প্রশ্নে বিতর্কের শেষ নেই, তার ওপর ইসির ইভিএম ব্যবহার নিয়ে নতুন বিতর্কের জন্ম দেয়া হবে চরম বোকামি। আশা করি, ইসি জাতিকে এই নতুন বিতর্ক থেকে দূরে রাখবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা