১৯ মার্চ ২০২৪, ০৫ চৈত্র ১৪২৯, ০৮ রমজান ১৪৪৫
`

পানি বাড়ে, বুক কাঁপে

পানি বাড়ে, বুক কাঁপে - ছবি : নয়া দিগন্ত

গত কয়েকদিন ধরে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে হঠাৎ করে ধলেশ্বরী নদীর মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া অংশে পানি বৃদ্ধি শুরু হয়েছে। এতে করে এ উপজেলার তিল্লি ও বরাইদ ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলগুলোর আংশিক কিছু এলাকায় পানি প্লাবিত হচ্ছে। ভাঙন আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন নদী তীরের মানুষ।

মানিকগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, যমুনা নদীর পানি গত ২৪ ঘণ্টায় ১৩ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে। আর এক সপ্তাহের ব্যবধানে ৮০ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে। যমুনায় পানি বাড়ার ফলে ধলেশ্বরী নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। আগে যমুনার শাখা নদী ধলেশ্বরী হারিয়ে ধূ-ধূ বালু চরে পরিণত হয়েছিল।

চরাঞ্চল ও নদীর তীরে ভাঙন কবলিতরা জানান, উজানের পাহাড়ি ঢলে ধলেশ্বরী নদীর পানি প্রবাহ বেড়েছে। শুকিয়ে যাওয়া মৃতপ্রায় ধলেশ্বরী নদীতে আবারো ফুলে-ফেঁপে উঠে ফিরে পেয়েছে সেই চিরচেনা রূপ। হেঁটে পাড়ি দেয়া ধলেশ্বরীতে চলতে শুরু করেছে নৌকা। হাঁকডাক বেড়েছে মাঝি-মাল্লাদের। কর্মব্যস্ততা দেখা দিয়েছে ধলেশ্বরীর পাড়ের জেলে পরিবারে।

সরেজমিনে রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) উপজেলার চরাঞ্চল এলাকার গোপালপুর, ছনকা, ঘোনা, বরাইদ, সালুয়াকান্দি, তিল্লিসহ বেশ কয়েকটি গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, নতুন করে পানি বৃদ্ধির ফলে ধলেশ্বরীর বুকে জেগে ওঠা চরে রোপণ করা নানা ধরনের সবজি ও প্রস্তুত ফলসি জমি পানির নিচে তলিয়ে গেছে অনেকাংশ। দেখা দিয়েছে গো-খাদ্যের সংকট। জনদুর্ভোগে পড়েছেন চরাঞ্চলবাসীরা। বিপাকে পড়েছে শিক্ষার্থীরা।

উপজেলার চরাঞ্চল এলাকার বরাইদ গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল খালেক, সালুয়াকান্দি গ্রামের নজরুল ইসলাম ও ইয়াজ উদ্দিন বলেন, ধলেশ্বরী নদীর পানি শুকিয়ে যাওয়ায় চরাঞ্চলের নিচু জমিতে মাষকলাই বপন করেছিলাম। সেই মাষকলাই ক্ষেতে কিছু অংশ নদী ভাঙনে বিলীন হলেও বাকি অংশের মাষকলাই নতুন পানিতে ডুবে গেছে। দ্রুত পানি নেমে গেলে মাষকলাই ক্ষেতের উপকার হবে। কিন্তু বেশি সময় ডুবে থাকলে মাষকলাই চারা পঁচে নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

ওই গ্রামের আব্দুল মালেক বলেন, নদীর পানি শুকিয়ে যাওয়ায় চরাঞ্চলের জমিতে বিভিন্ন সবজি চাষের জন্য জমি তৈরি করে রাখা হয়েছিল। কয়েকদিনের বৃষ্টির কারণে সবজি বীজ বপন করা হয়নি। এরই মধ্যে আবার হঠাৎ করে পানি বৃদ্ধি পেয়ে জমি ডুবে গেছে। তাই ব্যস্ততাও কমে গেছে। পানি নেমে গেলে আবারও জমিতে সবজি বীজ বোপন করা হবে বলেও জানান। নতুন করে ধলেশ্বরী নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় চরাঞ্চলবাসীর বুক কাঁপছে। নতুন করে ভাঙন দেখা দিয়েছে ছনকা ও বরাইদ পয়েন্টে।

মানিকগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মোঃ মামুন হাওলাদার জানান, গত ২৪ ঘন্টায় যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদ সীমার ৩৬ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। যমুনা নদীতে হঠাৎ পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ধলেশ্বরীতে কিছুটা পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে বন্যার আশঙ্কা নেই এবং কয়েকদিনের মধ্যেই পানি কমে যাবে বলে আশা করছি।


আরো সংবাদ



premium cement