২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

স্বামী জাকারিয়ার লাশ নিয়ে মঙ্গলবার দেশে ফিরছেন স্ত্রী রীনা আক্তার

নিউজিল্যান্ডের ক্রাইষ্টচার্চে মসজিদে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত জাকারিয়া ভূইয়া - নয়া দিগন্ত

নিউজিল্যান্ডের ক্রাইষ্টচার্চে মসজিদে বন্দুকধারী শেতাঙ্গ সন্ত্রাসীর গুলিতে নিহত নরসিংদীর পলাশের জাকারিয়া ভূইয়ার লাশ মঙ্গলবার বাংলাদেশে আসছে। জাকারিয়া ভূইয়ার বড় ভাই আলমগীর ভূইয়া এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

নয়াদিগন্ত অনলাইনকে তিনি জানান, মঙ্গলবার নিউজিল্যান্ড থেকে দুপুর ১২টায় সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্স একটি ফ্লাইট জাকারিয়ার লাশ নিয়ে রাত ১০টা ৪০ মিনিটে ঢাকা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছবে।

এর আগে গত ২০ মার্চ জাকারিয়ার স্ত্রী রীনা আক্তার বন্দুকধারীর গুলিতে নিহত স্বামীর লাশ আনতে নিউজিল্যান্ডে যান। সেখানে সকল আনুষ্ঠানিকতা শেষে মঙ্গলবার রাতে স্বামী জাকারিয়া ভূইয়ার লাশ নিয়ে দেশে ফিরছেন তিনি।

পলাশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুমানা ইয়াসমিন জানান, নিহত জাকারিয়ার পরিবারকে প্রশাসনিকভাবে সকল ধরণের সহযোগিতা করা হচ্ছে এবং লাশ আনার জন্য তার পরিবারের সাথে উপজেলা প্রশাসনের লোকজনও বিমানবন্দরে যাবে।

এদিকে জাকারিয়ার বাড়িতে লাশ আসার খবর শুনে এলাকার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লোকজন জাকারিয়ার বাড়িতে ভিড় জমাচ্ছেন। জাকারিয়ার ভাই আলমগীর ভূইয়া জানান, বুধবার সকাল ১১টায় গজারিয়ার জয়পুরা ঈদগাহ মাঠে জানাযা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তার লাশ দাফন করা হবে।

উল্লেখ্য, গত ১৫ মার্চ শুক্রবার নিউজিল্যান্ডের ক্রাইষ্টচার্চে মসজিদে বন্দুকধারী শেতাঙ্গ সন্ত্রাসীর গুলিতে ৫০জন মুসল্লি নিহত হয়। নিহতদের মাঝে জাকারিয়া ভূইয়াও ছিলেন।

আরো পড়ুন : নিউজিল্যান্ডে মসজিদে হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৪৯
নয়া দিগন্ত অনলাইন, (১৫ মার্চ ২০১৯)

নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে দুইটি মসজিদে জুমার নামাজের সময় বন্দুকধারীদের গুলিতে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৯ জনে। পুলিশ কমিশনার মাইক বুশ নিহতের সংখ্যা ৪৯ জন হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন বলে জানিয়েছে বিবিসি ও নিউজিল্যান্ড হেরাল্ড। নিহতদের মধ্যে একজন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন বলে জানান পুলিশ কমিশনার মাইক বুশ।

এর আগে মসজিদে নামাজরত মুসল্লিদের ওপর হামলায় ৪০ জন নিহত হওয়ার খবর দিয়েছিলেন নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা অডুর্ন। তখন তিনি বলেন, মসজিদ আল নুর-এ ৩০ জন এবং লিনউড মসজিদে ১০ জন নিহত হয়েছে।

এদিকে হামলায় আহত আরো অন্তত ৪৮ জন ক্রাইস্টচার্চ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন বলে নিশ্চিত করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। আহতদের মধ্যে শিশুরাও রয়েছে।

সংবাদ সম্মেলন শেষ হতে দেরি হওয়ায় বেঁচে যান তামিমরা

কথা ছিল, সংবাদ সম্মেলনটা শেষ করে জুমা আদায় করতে ঠিক দেড়টা নাগাদ পার্শ্ববর্তী আল নুর মসজিদে যাবেন বাংলাদেশী ক্রিকেটাররা। কিন্তু সংবাদ সম্মেলনটা দীর্ঘায়িত হয়েছিল বেলা ১টা ৪০ পর্যন্ত। হয়তো সেটাই রক্ষা করেছে বাংলাদেশের জাতীয় ক্রিকেট দলকে।

সংবাদ সম্মেলন শেষ করেই জুমা ধরতে বাসে উঠেছিলেন বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা। বাসটি পৌঁছে গিয়েছিল যথাসময়েই। টিম টাইগারের সদস্যরা তখন মসজিদের সামনে পৌঁছেও গিয়েছিলেন। মসজিদে প্রবেশ করবেন, ঠিক সেই মুহূর্তে মসজিদের ভিতর থেকে মধ্য বয়সের এক নারী রক্তাক্ত অবস্থায় টলোমলো পায়ে বেরিয়ে এসে রাস্তায় হুমড়ি খেয়ে পড়ে যান। তামিমরা তখনো বুঝতে পারেননি, আসলে কী ঘটছে ভিতরে। এরপরই ভেসে আসে সতর্কবাণী। একজন চিৎকার করে বলে ওঠেন, মসজিদের ভিতর গুলি চলছে।

অবস্থা দেখে তামিম, তাইজুল, মিরাজরা দ্রুত হেঁটে এসে বাসে উঠে পড়েন। এ সময় পুলিশ ওই রাস্তা বন্ধ করে দেয়। ফলে বেশ কিছুক্ষণ বাসেই বসে থাকতে হয় তামিম, মুশফিকদের। তবে গুলির শব্দ ও আতঙ্কে তারা অনেকটা সময় বাসের ভেতর মাথা নিচু করে বসে ছিলেন। এ ভাবে বেশ কিছুক্ষণ থাকার পর নিরাপদে মাঠে ফিরে আসেন তাঁরা।

সংবাদ সম্মেলন অনেক ক্রিকেটারের কাছেই একটি অস্বস্তিকর একটি বিষয়। বিশেষ করে দল হারতে থাকলে অস্বস্তি আরো বাড়িয়ে তোলে এসব অনুষ্ঠান। ফলে অনেকে এসব সংবাদ সম্মেলন এড়িয়ে যেতে পারলে বা তাড়াতাড়ি তা শেষ করে দিয়ে আসতে পারলে হাঁফ ছেড়ে বাঁচেন। কিন্তু শুক্রবার এ ঘটনার পর তামিমদের কাছে ওই সংবাদ সম্মেলনটি অনেক নিশ্চয়ই অনেক মধুর বলে মনে হচ্ছে। কারণ ওই সংবাদ সম্মেলন না থাকলে হয়তো তারা আরো আগেই মসজিদে পৌঁছে যেতেন। এমনকি ঠিক সময়মতো শেষ হলেও হয়তো হামলার মুখে পড়তে হতো বাংলাদেশ টিমকে।

দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়, শুক্রবার সকালে লিটন দাস ও নাঈম হাসান ছাড়া দলের সবাই ক্রাইস্টচার্চের হ্যাগলে ওভাল মাঠে অনুশীলনে করেন। সেখান থেকেই আল নুর মসজিদে যাচ্ছিলেন জুমার নামাজে যোগ দিতে। এ দিনের হামলার পরই টুইট করেন তামিম ইকবাল। এ ঘটনাকে ‘ভয়ের অভিজ্ঞতা’ বলে উল্লেখ করে তিনি লেখেন, পুরো দলই বন্দুকধারীর হামলা থেকে রক্ষা পেয়েছে। সবাই আমাদের জন্য প্রার্থনা করবেন।

চোখের সামনে এমন ঘটনা দেখে কেঁদে ফেলেন দলের অন্যতম সদস্য মুশফিকুর রহিম। মাঠে ফিরেও আতঙ্ক কাটছিল না তাঁর। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের মুখপাত্র জালাল ইউনুস জানিয়েছেন, দলের বেশির ভাগ সদস্য মসজিদে যাওয়ার জন্য বাসে ছিলেন। মসজিদে ঢোকার মুহূর্তে হামলার ঘটনাটি ঘটে। আল্লাহর রহমতে সবাই ভাল আছেন। 

এদিকে নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চেই শনিবার শুরু হওয়ার কথা ছিল সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টেস্ট। কিন্তু এ হামলার ঘটনার পর সফর বাতিলের কথা ঘোষণা করে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। শীঘ্রই নিরাপদে জাতীয় ক্রিকেটারদের দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলেও জানানো হয়েছে বিসিবির পক্ষ থেকে।


আরো সংবাদ



premium cement