০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`


এমপি ও পুত্রের বিরুদ্ধে জুতা মিছিল, অগ্নিসংযোগ, কুশপুত্তলিকা দাহ

এমপি ও পুত্রের বিরুদ্ধে জুতা মিছিল, অগ্নিসংযোগ, কুশপুত্তলিকা দাহ - ছবি : সংগৃহীত

টাঙ্গাইলের গোপালপুরের হেমনগর ডিগ্রী কলেজ মাঠে আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পররাষ্ট্র মন্ত্রী ডা. দীপু মনির জনসভা অবশেষে পণ্ড হয়ে গেছে। তিন দফা পিছিয়ে শনিবার এ জনসভারর তারিখ নির্ধারণ করা হলেও দলীয় কোন্দলের কারণে তা আর করা সম্ভব হয়নি। পরে আয়োজকরা নিজেই জনসভার মঞ্চ ভেঙে নিয়ে যায়।

জনসভাকে কেন্দ্র করে বেশ কয়েক দিন ধরেই চলছিল মাইকিং। সড়কগুলোতে তৈরি করা হয়েছিল দীপু মনির আগমনী বার্তার গেট। আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী স্থানীয় এমপি খন্দকার আসাদুজ্জামানের ছেলে খন্দকার মশিউজ্জামান রোমেল এ জনসভার আয়োজন করেন। প্রায় এক লাখ টাকা ব্যয়ে তৈরি করা হয়েছিল নৌকাকৃতির মঞ্চ।

কিন্তু শুক্রবার হঠাৎ করেই পাল্টে যায় দৃশ্যপট। জনসভাকে কেন্দ্র করে ক্ষুব্ধ হন আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী তানভীর হাসান ছোটমনি, ইউনুছ ইসলাম তালুকদার ঠান্ডু ও খন্দকার আশরাফউজ্জামান স্মৃতির লোকজন। তারা স্থানীয় এমপি খন্দকার আসাদুজ্জামান ও তার ছেলে খন্দকার মশিউজ্জামান রোমেলের বিরুদ্ধে শুক্রবার সন্ধ্যায় গোপালপুর পৌর শহরে জুতা মিছিল বের করেন। এছাড়াও গোপালপুর ও ভূঞাপুরে নির্মিত তোরণ ও বিলবোর্ড ভেঙে তাতে আগুন ধরিয়ে দেন। পরে কুশপুত্তলিকা দাহ করা হয় এমপি খন্দকার আসাদুজ্জামান ও তার ছেলে খন্দকার মশিউজ্জামান রোমেলের। সংঘর্ষের আশঙ্কায় শুক্রবার মধ্যরাতে বন্ধ হয়ে যায় দীপু মনির জনসভা। পরে সকাল থেকেই মঞ্চের জিনিসপত্র আয়োজকরা সরিয়ে নেন।

জানা যায়, গোপালপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের নামে গত ১৩ অক্টোবর উপজেলার হেমনগর কলেজ মাঠে এক নির্বাচনী জনসভা আহবান করা হয়। এতে প্রধান অতিথি করা হয় আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সম্পাদক ও সাবেক পররাষ্ট্র মন্ত্রী ডা. দীপু মনিকে। কিন্তু আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য খন্দকার আসাদুজ্জামান তার পুত্র খন্দকার মশিউজ্জামান রোমেলকে ওই জনসভায় দলীয় প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দেবে- এমন খবর ছড়িয়ে পড়ে দুই উপজেলাতেই। তখন থেকেই ক্ষোভ বাঁধতে থাকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মাঝে। এতে পিছিয়ে জনসভা। পরে আরো দুই দফা পিছিয়ে শনিবার বিকেলে জনসভার সময় নির্ধারণ করা হয়।

আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী গোপালপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ইউনুস ইসলাম তালুকদার ঠান্ডু সাংবাদিকদের জানান, জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগকে বাদ দিয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য খন্দকার আসাদুজ্জামান নিজ পুত্র মশিউজ্জামান রোমেলকে দলীয় প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দেয়ার জন্য কৌশলে এ জনসভার আয়োজন করে। জনগণ এ ষড়যন্ত্র মেনে নেবে না। তাই এ জনসভাকে দলীয় নেতাকর্মীরা প্রত্যাখান করেছে।

গোপালপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হালিমুজ্জামান তালুকদার সাংবাদিকদের জানান, স্থানীয় সংসদ সদস্য এ জনসভা চাপিয়ে দেয়। তাই দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে অসন্তোষ ও চাপা উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। সন্ধ্যায় তারা সংসদ সদস্য ও তার পুত্রের বিরুদ্ধে জুতা মিছিল করে বলে জানান।

গোপালপুর থানার ওসি হাসান আল মামুন বলেন, জনসভার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে সব ধরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছিল। কিন্তু আয়োজকরা স্বেচ্ছায় তাদের কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নিয়েছে। পরে সকাল থেকে তারাই মঞ্চের জিনিসপত্র খুলে নেন। তবে এখনো বিভিন্ন এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েত রাখা হয়েছে।

জনসভা পণ্ডের বিষয়ে কথা বলতে খন্দকার মশিউজ্জামান রোমেলের সেলফোনে বার বার কল দেয়া হলেও তিনি তা রিসিভ করেননি।


আরো সংবাদ



premium cement