২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ইংল্যান্ডের পরাজয়ে পয়েন্ট টেবিল জমে ক্ষীর!

ইংল্যান্ডের পরাজয়ে পয়েন্ট টেবিল জমে ক্ষীর! - সংগৃহীত

ইংল্যান্ড এন্ড ওয়েলসে চলমান দ্বাদশ বিশ্বকাপের ফরম্যাটটা খুবই প্রতিদ্বন্দ্বীতাপূর্ণ; টুর্নামেন্ট শুরুর আগে থেকেই এমন কথাই বলে আসছিলেন ক্রিকেট ভক্ত থেকে বোদ্ধারা সবাই। ১০ দলকে কোনো গ্রুপে ভাগ না করে বরং লিগ পদ্ধতিতে সবাই খেলবে সবার সাথেই। তাতে করে ম্যাচের সংখ্যা বাড়লেও মূলত বেড়েছে প্রতিদ্বন্দ্বীতা ও উত্তেজনা।

প্রতিটি দল একে অপরের সাথে ৯টি করে ম্যাচ খেলার পর সেরা চারটি দলই যে সেমিফাইনালে উঠবে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু সেই সেরা চারটি দল যে কারা হচ্ছে তা কিন্তু বিশ্বকাপ অর্ধেকের বেশি পথ পাড়ি দেয়ার পরও নিশ্চিত ভাবে বলা যাচ্ছে না!

এই যেমন ধরেন স্বাগতিক ইংল্যান্ড; কী দুর্দান্ত দল আর তাদের পারফরমেন্স। ব্যাটে-বলে তাদের বিরুদ্ধে মাঠে নামতে যে বুকে কাপন ধরে না, এই বিশ্বকাপে এমন দল নেই। টুর্নামেন্টের শুরু তো এদিন থেকে, কিন্তু তারও অনেক আগে থেকেই দ্বাদশ বিশ্বকাপের অন্যতম দাবিদার বলা হচ্ছিল ইংলিশ দলকে। টুর্নামেন্টর শুরু থেকেই ব্যাট-বলও যেন মরগ্যানের দলের পক্ষেই কথা বলছিল। দাবিদার মানে চ্যাম্পিয়ন। কিন্তু শ্রীলঙ্কার কাছে হেরে সেমিফাইনাল খেলাটাই যেন ফিকে হওয়ার উপক্রম হয়েছে ইংলিশদের।

শুক্রবার লিডসের হেডিংলিতে অপ্রত্যাশিতভাবে টপ ফেবারিট ইংল্যান্ডকে হারিয়ে দিয়ে পয়েন্ট টেবিল-টাই জমিয়ে দিলো শ্রীলঙ্কা। সেরা চারে নিজেদের স্থান নিশ্চিত করার জন্য এখন বাধ্য হয়ে শেষের ম্যাচগুলোতে কোমর বেধেই মাঠে নামতে হবে বিশ্বকাপের স্বাগতিকদের।

শ্রীলঙ্কা এ নিয়ে ৬টি ম্যাচ খেলে ফেলেছে। পয়েন্ট ৬। জিতেছে দুটি, বৃষ্টির কারণে পরিত্যক্ত দুটি এবং বাকি দুটিতে হার। ৬ পয়েন্ট নিয়ে তারা পেছনে ফেলে দিয়েছে বাংলাদেশকে। বাংলাদেশও খেলেছে ৬ ম্যাচ, পয়েন্ট ৫। জিতেছে ২টি, হেরেছে ৩টি এবং বৃষ্টিতে পয়েন্ট ভাগাভাগি হয়েছে একটিতে।

অন্যদিকে টুর্নামেন্টের টপ ফেবারিট ইংল্যান্ড হেরে গেছে পাকিস্তান এবং শ্রীলঙ্কার কাছে। এই দুই ম্যাচ হেরে ইংল্যান্ড ৬ ম্যাচে মোট ৮ পয়েন্ট নিয়ে রয়েছে টেবিলের তিন নম্বর স্থানে। ৬ ম্যাচে ১০ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে রয়েছে অস্ট্রেলিয়া। কোনো ম্যাচ না হারা নিউজিল্যান্ডের ৫ ম্যাচে অর্জন ৯ পয়েন্ট। তারা দ্বিতীয় স্থানে।

এখনও পর্যন্ত মাত্র ৪ ম্যাচ খেলেছে ভারত। কোনো পরাজয় নেই। একটি বৃষ্টিতে ভেসে গেছে। ৭ পয়েন্ট নিয়ে তারা রয়েছে চার নম্বরে। এরপরই রয়েছে শ্রীলঙ্কা এবং বাংলাদেশ যথাক্রমে ৬ এবং ৫ পয়েন্ট নিয়ে।

ইংল্যান্ডের সামনের তিন ম্যাচে প্রতিপক্ষ অস্ট্রেলিয়া, ভারত এবং নিউজিল্যান্ড। তিন ম্যাচেই হারের দারুণ সম্ভাবনা রয়েছে ইংলিশদের। যদি তেমনটাই হয়, তাহলে তো টুর্নামেন্ট থেকে ইংল্যান্ডেরই বাদ পড়ার সম্ভাবনা বেশি। কারণ ১৯৯২ সালের বিশ্বকাপ থেকে শুরু করে গত ২৯ বছরে বিশ্বকাপ আসরে ইংল্যান্ড এই তিন দলকে কখনোই হারাতে পারেনি।

যদি শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ইংল্যান্ড জিততে পারতো, তাহলে তাদের পয়েন্ট হতো ১০, শ্রীলঙ্কার থেকে যেতো ৪। তাতে, পয়েন্ট টেবিলে শেষ পর্যন্ত এতটা ওলট-পালট হওয়ার শঙ্কা তৈরি হতো না। শ্রীলঙ্কার সামনের তিন প্রতিপক্ষ দক্ষিণ আফ্রিকা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবং ভারত। এই তিন ম্যাচের যে কোনো একটিতেও যদি লঙ্কানরা জিতে যায়, তাহলে তাদের পয়েন্ট হয়ে যাবে ৮, দুটিতে জিতলে হবে ১০। আর যদি কোনোটাতেই না জিততে পারে, তাহলে থেকে যাবে ৬ পয়েন্টে।

৯ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে থাকা নিউজিল্যান্ডের আগামী তিন ম্যাচ পাকিস্তান, ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবং অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে। কোনো একটিতেও তারা যদি জিতে যায়, তাহলে সেমিফাইনাল নিশ্চিত ধরে নেয়া যায় তাদের। যদি তিনটিতেই হেরে যায়, তাহলে কিউইদের জন্যও শেষ পর্যন্ত শঙ্কা রয়েছে সেমিতে ওঠার। অস্ট্রেলিয়া এবং ভারতের সেমিতে ওঠা হয়তো ‘নিশ্চিত’। তবুও ক্রিকেট বলে কথা! শেষ পর্যন্ত দেখা যাক, কি হয়!

সেমিফাইনাল খেলার স্বপ্ন নিয়েই ইংল্যান্ডে যাওয়া বাংলাদেশ দলের হাতে আছে ৩ ম্যাচ। প্রতিপক্ষ আফগানিস্তান, পাকিস্তান এবং ভারত।

এর মধ্যে অন্তত ২টিতে জিততে হবে বাংলাদেশকে। তাহলে পয়েন্ট হয়ে যাবে ৯। যদি ৯ পয়েন্টই হয় টাইগারদের এবং রান রেট ভালো থাকে, তাহলে শেষ পর্যন্ত সেমিফাইনাল ভাগ্যের সিকে ছিঁড়তেও পারে তামিম-সাকিবদের।


আরো সংবাদ



premium cement