২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

রফিকের পাশে নবী

রফিক ও নবী - ছবি : সংগ্রহ

টেস্ট ইতিহাসে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচেই জয়ের দেখা পেল আফগানিস্তান। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সোমবার পাওয়া জয়টি আফগানদের কাছে ঐতিহাসিক বটে। এমন ম্যাচে একটি রেকর্ড গড়েছেন আফগানিস্তানের মোহাম্মদ নবী। আফগানদের হয়ে প্রথম টেস্ট-ওয়ানডে-টি-২০ ফরম্যাটে জয়ের সাক্ষী হলেন নবী। অবশ্য ক্রিকেট বিশ্বের এমন রেকর্ড মাত্র একবার হয়েছে। সেটি করেছেন বাংলাদেশের সাবেক বাঁ-হাতি স্পিনার মোহাম্মদ রফিক। তিনিও বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট-ওয়ানডে-টি-২০ জয়ের ম্যাচে একাদশে ছিলেন।

১৯৯৮ সালে কোকাকোলা কাপে কেনিয়ার বিপক্ষে ওয়ানডেতে ৬ উইকেটে প্রথম জয় পেয়েছিলো বাংলাদেশ। ঐ ম্যাচে খেলেছিলেন রফিক। ম্যাচের সেরা খেলোয়াড়ও ছিলেন তিনি বল হাতে ১০ ওভারে ৫৬ রানে ৩ উইকেট নেন তিনি। এরপর ব্যাট হাতে ওপেনার হিসেবে নেমে তান্ডব চালিয়েছেন রফিক। ১১টি চার ও ১টি ছক্কায় ৮৭ বলে ৭৭ রান করেন তিনি।
২০০০ সালে অভিষেকের পর ২০০৫ সালে প্রথম টেস্ট জয়ের মুখ দেখে বাংলাদেশ। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ২২৬ রানে জয় পায় টাইগাররা। ঐ ম্যাচে বাংলাদেশের একাদশে ছিলেন রফিক। ম্যাচে ব্যাট হাতে প্রথম ইনিংসে ৬৯ রান ও বল হাতে ৫ উইকেট নেন তিনি। দ্বিতীয় ইনিংসে অপরাজিত ১৪ ও বল হাতে উইকেট শূন্য ছিলেন রফিক।

বাংলাদেশ প্রথম টি-২০ ম্যাচ জিতে ২০০৬ সালে। জিম্বাবুয়েকে ৪৩ রানে হারায় তারা। ঐ ম্যাচে ৫ বলে ১৩ রান ও বল হাতে ৪ ওভারে ২২ রানে ১ উইকেট নেন রফিক।

ওয়ানডেতে আফগানিস্তান প্রথম জয় পায় ২০০৯ সালে। বেনোনিতে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে ৮৯ রানে জয় পায়। ঐ ম্যাচে নবী ব্যাট হাতে ৫৮ রান করেন। তবে বল হাতে ছিলেন উইকেট শূন্য। টি-২০ ফরম্যাটে আফগানদের প্রথম জয় ২০১০ সালে। কানাডার বিপক্ষে কলম্বোতে ৫ উইকেটে জিতেছিলো তারা। ম্যাচে নবী বল হাতে ১ উইকেট ও ১২ বলে ২৩ রান করেছিলেন।
তাই নিজ নিজ দেশের প্রথম টেস্ট-ওয়ানডে-টি-২০ জয়ের সাক্ষী ছিলেন রফিক-নবী।

আফগানিস্তানের প্রথম টেস্ট জয়

ঐতিহাসিক প্রথম টেস্ট জয়ের স্বাদ পেল আফগানিস্তান। দেরাদুনে সিরিজের একমাত্র টেস্টে আয়ারল্যান্ডকে ৭ উইকেটে হারিয়েছে আফগানরা। এক ম্যাচের টেস্ট সিরিজটি ১-০ ব্যবধানে জিতে নিলো আফগানিস্তান। টেস্ট ইতিহাসে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচেই জয় তুলে নিলো আফগানরা।
নিজেদের টেস্ট ইতিহাসে প্রথম টেস্ট জয়ের মঞ্চ গতকালই তৈরি করে রেখেছিলো আফগানিস্তান। তৃতীয় দিন শেষে আফগানদের সামনে ম্যাচ জয়ের সমীকরন ছিলো ৯ উইকেট হাতে নিয়ে আরও ১১৮ রান। জয়ের জন্য ১৪৭ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে তৃতীয় দিন ১ উইকেটে ২৯ রান করেছিলো আফগানিস্তান। এহসানউল্লাহ ১৬ ও রহমত শাহ ১১ রান নিয়ে অপরাজিত ছিলেন।

চতুর্থ দিনও ব্যাট হাতে অবিচল ছিলেন এহসানউল্লাহ ও রহমত। প্রথম টেস্ট জয়ের আশায় উন্মুখ হয়ে ছিলেন তারা। তাই বড় জুটির প্রত্যাশায় সর্তকতার সাথে নিজেদের উইকেটে টিকিয়ে রেখেছিলেন এহসানউল্লাহ ও রহমত। সেই সাথে রানের চাকাও সচল রেখেছিলেন এই দুই ব্যাটসম্যান। ফলে দলের স্কোর শতরানের কোটা পেরিয়েও যায়। তারপরও বিচ্ছিন্ন হননি তারা। ধীরে ধীরে দলের লক্ষ্য পূরণের পথেই হাটতে থাকেন এ জুটি। এরমধ্যে দু’জনই তুলে নেন হাফ-সেঞ্চুরি। এহসানউল্লাহ’র প্রথম হলেও রহমতের ছিলো এটি দ্বিতীয় অর্ধশতক।
তবে দলীয় ১৪৪ রানে বিচ্ছিন্ন হন এহসানউল্লাহ ও রহমত। ৭২ রান করা রহমতকে শিকার করেন আয়ারল্যান্ডের বাঁ-হাতি স্পিনার ক্যামেরন ডউ। ১২১ বল মোকাবেলা করে ১২টি চার মারেন তিনি। এরপর উইকেটে গিয়ে ১ বলে ১ রানের বেশি করতে পারেননি মোহাম্মদ নবী। ১ রানের ব্যবধানে দুই ব্যাটসম্যানকে হারিয়েও চিন্তায় পড়তে হয়নি আফগানিস্তানকে। কারন জয় থেকে তখন মাত্র ২ রান দূরে দাঁড়িয়ে আফগানিস্তান। দলের প্রয়োজন মিটিয়ে আফগানিস্তানকে ঐতিহাসিক জয়ের স্বাদ দেন রহমত ও হাসমতুল্লাহ শাহিদি। রহমত ৮টি চার ও ২টি ছক্কায় ১২৯ বলে অপরাজিত ৬৫ ও শাহিদি ৮ রানে অপরাজিত থাকেন। ম্যাচ সেরা হয়েছেন আফগানিস্তানের রহমত।
এই সফরে তিন ম্যাচের টি-২০ সিরিজ ৩-০ ব্যবধানে জিতে আফগানিস্তান। পাঁচ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ ২-২ ব্যবধানে ড্র হয়।

সংক্ষিপ্ত স্কোর :
আয়ারল্যান্ড : ১৭২ ও ২৮৮ (বলব্রিনি ৮২, কেভিন ৫৬, রশিদ ৫/৮২)।
আফগানিস্তান : ৩১৪ ও ১৪৯/৩, ৪৭.৫ ওভার (রহমত ৭২, এহসানউল্লাহ ৬৫*, ডউ ১/২৪)।
ফল : আফগানিস্তান ৭ উইকেটে জয়ী।
ম্যাচ সেরা : রহমত শাহ (আফগানিস্তান)।

সিরিজ : এক ম্যাচের সিরিজ ১-০ ব্যবধানে জিতে নিলো আফগানিস্তান।
সূত্র : বাসস


আরো সংবাদ



premium cement