২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

পাকিস্তানের পরাজয়কে যেভাবে দেখছেন আফ্রিদি

দলের পারফরম্যান্সে হতাশ সাবেক অধিনায়ক শহীদ আফ্রিদি। - ছবি: সংগৃহীত

আবুধাবিতে চলতি এশিয়া কাপের অঘোষিত সেমি ফাইনালে পাকিস্তানকে ৩৭ রানে হারিয়ে ফাইনালে উঠায় বাংলাদেশ দলকে অভিনন্দন জানিয়েছেন সেদেশের তারকা ক্রিকেটার শহীদ আফ্রিদি। একই সঙ্গে পাকিস্তানের সামগ্রিক পারফরম্যান্স নিয়ে হতাশা ব্যক্ত করেছেন পাকিস্তানের সাবেক এই অধিনায়ক।

বাংলাদেশের কাছে হারের পর এক টুইট বার্তায় আফ্রিদি বলেন, ‘বাংলাদেশ দলকে অভিনন্দন।আর নিজের দেশের ক্রিকেটের সামগ্রিক পারফরম্যান্স হতাশ হয়ে লিখেন ‘মাঠে তাদের আক্রমণাত্মক ক্রিকেটের অভাব দেখা গেছে। যদিও এই তরুণ দলটিই সর্বশেষ বড় টুর্নামেন্টে দারুণ পারফর্ম করেছিল। তাই এবারও তাদের কাছে বড় প্রত্যাশা ছিল। ভালো প্রত্যাবর্তনের জন্য অনুশীলনের ওপর বেশি জোর দেওয়া দরকার।

আরো পড়ুন: হারের পর যা বললেন পাক অধিনায়ক সরফরাজ

নয়া দিগন্ত অনলাইন, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১২:০২


আরব আমিরাত অনেক দিন ধরে পাকিস্তানের হোম গ্রাউন্ড হিসেবে পরিচিতি লাভ করছে। কন্ডিশনের সঙ্গে সবচেয়ে বেশি পরিচিত তারাই। স্বাভাবিকভাবেই অনেক ক্রিকেট বিশ্লেষক এবারের এশিয়া কাপে পাকিস্তানকে ফেবারিট হিসেবে ধরে নিয়েছিলেন। অথচ ফাইনালেই উঠতে পারেনি পাকিস্তান। আবুধাবিতে বাংলাদেশের কাছে ৩৭ রানে হেরে এশিয়া কাপ থেকে বিদায় সরফরাজদের।

বাংলাদেশের কাছে হেরে পাকিস্তান অধিনায়ক বলেন, ‘একেবারে ভালো লাগছে না। পারফরম্যান্স ভালো ছিল না। অধিনায়ক হিসেবে আমি নিজেই ভালো করতে পারিনি। দল হিসেবে ভালো করিনি। আমি সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে পারিনি।’


অস্ট্রেলিয়া-জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুর্দান্ত খেলা পাকিস্তানের অধিনায়ক বলেন, আমরা ভালো ফিল্ডিং করেনি, ব্যাটিং-বিপর্যয় হয়েছে। দল হিসেবে কোনো বিভাগেই ভালো করিনি। ফখর আমাদের মূল খেলোয়াড় ছিল। শাদাব-নওয়াজের ভালো সুযোগ ছিল। ভালো দলের বিপক্ষে জিততে হলে আমাদের ভালো খেলা দরকার। ব্যাটিং-বিপর্যয় আমাদের অনেক ভুগিয়েছে।’

 

আরো পড়ুন:  বাংলাদেশের জয় নিয়ে কী লিখেছে আন্তর্জাতিক মিডিয়া?

নয়া দিগন্ত অনলাইন, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮


পুরো ম্যাচেই ব্যাটিং, বোলিং ও ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশ দারুণ করেছে - ছবি : এএফপি
এক অঘোষিত সেমিফাইনালে পাকিস্তানকে হারিয়ে এশিয়া কাপের ফাইনালে পৌঁছেছে বাংলাদেশ। এ নিয়ে তৃতীয়বারের মতো এশিয়া কাপের ফাইনালে উঠেছে বাংলাদেশ। এ নিয়ে বাংলাদেশের মিডিয়ায় ফলাও করে খবর প্রকাশের পাশাপাশি হাইলাইটস করেছে আন্তর্জাতিক মিডিয়াও।

বিবিসি লিখেছে, সুপার ফোরের ম্যাচটি যেন অঘোষিত এক সেমি ফাইনাল হয়ে উঠেছিল, যেখানে ৩৭ রানে পাকিস্তানকে হারিয়ে এশিয়া কাপের ফাইনালে পৌঁছেছে বাংলাদেশ। এ নিয়ে তৃতীয়বারের মতো এশিয়া কাপের ফাইনালে উঠেছে বাংলাদেশ।

ক্রিকেটের সর্বাধিক জনপ্রিয় ওয়েবসাইট ইএসপিএনক্রিকইনফো লিখেছে, মুশফিকুর রহিম ও মোস্তাফিজুর রহমান বাংলাদেশকে তুলে নিয়ে গেল ফাইনালে।

রিপোর্টে বলা হয়েছে, পূর্ণ শক্তিশালী দল না হয়েও বাংলাদেশ হিসাব, ক্রিকেটীয় বুদ্ধিমত্তা ও বোঝাপড়ার মাধ্যমে শক্তিগুলোকে কাজে লাগিয়েছে।

‘পাকিস্তানকে হারিয়ে এশিয়া কাপের ফাইনালে বাংলাদেশ’ শিরোনামের খবরে জি নিউজ লিখেছে, তামিম ইকবাল না থাকায় এমনিতেই টালমাটাল অবস্থা দলের। ম্যাচের আগে সাকিব আল হাসানকে হারিয়ে আরো বড় ধাক্কা খায় বাংলাদেশ। পাঁজরের ব্যথা আর ক্র্যাম্প নিয়ে মুশফিকুর রহিম খেললেন আর একটি অসাধারণ ইনিংস। অতিমানবীয় ক্যাচ নিয়ে দলকে তাতিয়ে দিলেন অধিনায়ক মাশরাফি বিন মোর্তজা। সঙ্গে মুস্তাফিজুরের আগুনে বোলিং আর মিঠুনের ব্যাটে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বুক চিতিয়ে লড়াই এগারো বাঙালির। সব প্রতিকূলতা পেরিয়ে পাকিস্তানকে ৩৭ রানে হারিয়ে এশিয়া কাপের ফাইনালে উঠল বাংলাদেশ।

আনন্দবাজারের শিরোনাম ছিল- ‘বিদায় পাকিস্তান, ফাইনালে বাংলার বাঘেরা’। খবরটির একটি অংশে লেখা হয়েছে - শেখ জাইদ স্টেডিয়ামের প্রেস বক্সে ঢুকে ওয়াকার ইউনিস যেন আরো বেশি অবাক হয়ে গেলেন। ঘরভর্তি সাংবাদিকদের দিকে তাকিয়ে বলে উঠলেন, ‘কী ব্যাপার, আজ এখানে এত লোক! বাংলাদেশ কি ধরেই নিয়েছে পাকিস্তানকে হারিয়ে দেবে?’ ঠিক পিছনেই ছিলেন বাংলাদেশের প্রাক্তন ক্রিকেটার আতাহার আলি। তার দিকে ফিরে হেসে বলে উঠলেন, ‘কী ব্যাপার, তোমরাই জিতবে, ধরে নিয়েছ নাকি?’ কেউ ধরে না নিলেও ওয়াকার ঠাট্টাচ্ছলে যা বলেছিলেন, দেখা গেল সেটাই সত্যি হল দিনের শেষে।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস লিখেছে- দৃঢ়চিত বাংলাদেশ পাকিস্তানকে ৩৭ রানে হারিয়ে ফাইনালে। মুশফিকুর রহিমের এক রানের জন্য সেঞ্চুরি না হওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তার এ স্কোর বাংলাদেশের জয়ে বিশেষ অনুসঙ্গ হয়েছে।

টাইমস অব ইন্ডিয়া গ্রুপের সহযোগী প্রকাশনা এই সময় লিখেছে- বোলাররা বাংলাদেশে অল্প রানে বেঁধে রাখলেও, ব্যাটিং ব্যর্থতার কারণে ফের ডুবল পাকিস্তান। ইমাম-উল-হকের ৮৩ ও আসিফ আলির ৩১ রান ছাড়া উল্লেখযোগ্য কারো রান নেই।

পাকিস্তানের ডন পত্রিকার শিরোনাম- দুর্ভাগ্যেই পাকিস্তান ক্রিকেট দল, এশিয়া কাপ থেকে বিদায়।

পাকিস্তানের এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের শিরোনাম- উদ্দীপ্ত বাংলাদেশ এশিয়া কাপ থেকে বিদায় করে দিল পাকিস্তানকে।

আবুধাবিতে এশিয়া কাপের সুপার ফোরের এই ম্যাচে শুরুতে ব্যাট করে ৪৮.৫ ওভারে ২৩৯ রানে অলআউট হয়ে যায় বাংলাদেশ।

জবাবে ৫০ ওভার খেলে ৯ উইকেটে ২০২ রান করে পাকিস্তান। ওয়ানডেতে পাকিস্তানের বিপক্ষে এটি বাংলাদেশের টানা চতুর্থ জয়।

এদিকে, বাংলাদেশের দুই নির্ভরযোগ্য খেলোয়াড় তামিম এবং সাকিব না থাকায় বাংলাদেশ নিজেদের পূর্ণ শক্তি ছাড়াই খেলতে নামে।

তারপরেও ১৮ রানে পাকিস্তানের তিনটি উইকেট শিকার করে শুরুতেই তাদের চাপের মধ্যে ফেলে দেয় বাংলাদেশ।

পুরো ম্যাচেই ব্যাটিং, বোলিং ও ফিল্ডিং এ বাংলাদেশ দারুণ করেছে বলে প্রশংসা করছে ক্রিকইনফো।

আরো পড়ুন : বাংলাদেশের প্রথম এশিয়া কাপ ফাইনালে কী ঘটেছিল?

বিবিসি

বাংলাদেশ এর আগে দুইবার এশিয়া কাপের ফাইনালে ওঠে। একবার ২০১২ সালে ওয়ানডে ফর‍ম্যাটে আরেকবার ২০১৬ সালে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে।

২০১২ সালের ওয়ানডে ফরম্যাটের এশিয়া কাপে বাংলাদেশ প্রথম পর্বে ভারত ও শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে ফাইনালে ওঠে।

ফাইনালে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ ছিল পাকিস্তান।

ভারত ও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে রান তাড়া করে জেতে বাংলাদেশ তাই পাকিস্তানের বিপক্ষে টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশের অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম।

মিরপুরের শের-ই-বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শুরুতে ব্যাট করতে নেমে পাকিস্তান ১৯ রানেই দুটি উইকেট হারায়।

দলীয় ৫৫ রানে অধিনায়ক মিসবাহ উল হককে রান আউট করেন নাসির হোসেন।

মোহাম্মদ হাফিজও দলীয় ৭০ রানে আব্দুর রাজ্জাকের বলে আউট হয়ে যাওয়ার পর পাকিস্তানের মিডল অর্ডার ও লোয়ার মিডল অর্ডারের ব্যাটসম্যানরা হাল ধরেন।

উমর আকমল ও হাম্মাদ আজম উভয়েই ৩০ রান করে করেন।

শহীদ আফ্রিদি স্বভাবসুলভ ২২ বলে ৩২ রানের ইনিংস খেলেন।

আর পাকিস্তানের বর্তমান অধিনায়ক সরফরাজ আহমেদ ৪৬ রানে অপরাজিত থাকেন।

শেষ পর্যন্ত পাকিস্তানের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ২৩৬ রান।

জবাব দিতে নেমে বাংলাদেশের তামিম ইকবাল ও নাজিমুদ্দিন ৬৮ রানের উদ্বোধনী জুটি গড়েন।

এরপর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারায় বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। দলীয় ৮১ রানে তামিম ব্যক্তিগত ৬০ রান করে উমর গুলের বলে আউট হন।

নাজিমু্দ্দিন ৫২ বল খেলে করেন ১৬ রান এবং নাসির হোসেন ৬৩ বল খেলে ২৮ রান করেন।

সাকিব আল হাসান ৭২ বলে ৬৮ রানের ইনিংস খেলে আউট হন।

শেষ পাঁচ ওভারে যখন ৪৭ রান প্রয়োজন তখন আউট হন মুশফিকুর রহিম।

মাশরাফি বিন মর্তুজা ৩টি চার মেরে ব্যবধান কমিয়ে আনেন তবে তিনিও আটচল্লিশতম ওভারে আউট হয়ে যান।

শেষ দুই ওভারে প্রয়োজন ছিলো ১৯ রান। মাহমুদুল্লাহ ও আব্দুর রাজ্জাক ৪৯তম ওভারে তোলেন ১০।

শেষ ওভারে লক্ষ্য দাঁড়ায় ৯ রান। পাকিস্তানের হয়ে বল করেন আইজাজ চিমা।

প্রথম চার বলে পাঁচ রান নেন ব্যাটসম্যানরা। শেষ দুই বলে প্রয়োজন ছিলো চার রান।

পঞ্চম বলে আব্দুর রাজ্জাক আউট হয়ে যান, শেষ বলে একটি লেগ-বাই রান আসে।

বাংলাদেশ ২ রানে হেরে যায়।

এই ম্যাচ হারের পর বাংলাদেশের সাকিব, মুশফিক, নাসির হোসেনরা মাঠেই কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।

সেই টুর্নামেন্টে সিরিজের সেরা ক্রিকেটার হন সাকিব আল হাসান।

 


আরো সংবাদ



premium cement