২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ভারতীয় বোলারদের লিলিপুট বানিয়ে সেঞ্চুরী হাকালেন গালিভার শেহজাদ

ভারতীয় বোলারদের লিলিপুট বানিয়ে সেঞ্চুরী হাকালেন গালিবার শেহজাদ - এএফপি

আফগানিস্তানের অন্য ব্যাটসম্যানরা যখন আসা যাওয়ার প্রতিযোগীতায় মত্ত মোহাম্মদ শেহজাদ তখন গালিবার হয়ে দাড়ালেন ভারতীয় বোলারদের সামনে। বোলারদের একপ্রকার লিলিপুট বানিয়ে নিজের ব্যাক্তিগত সেঞ্চুরী আদায় করে নিলেন আফগান গালিবার।

শেহজাদের ব্যাক্তিগত শতকের সময় আফগানিস্তানের দলীয় স্কোর ১৩১। তাকে সঙ্গ দিচ্ছিলেন মোহাম্মদ নবী (১৫)। এর আগে আউট হয়েছেন, জাবেদ আহমেদী (৫), রহমত শাহ (৩), হাসমতউল্লাহ শাহিদী (০) এবং আজগর আফগান ০ রানে।

শেহজাদ সেঞ্চুরী করতে খরচ করেছেন ৮৯ বল। যার মধ্যে ১৬টি বাউন্ডারি রয়েছে, যেখানে ১০টি চার আর ৬ টি ছক্কার মার রয়েছে।

ভারতের পক্ষে কুলদীপ যাদব এবং রবীন্দ্র জাদেজা ২টি করে উইকেট নিয়েছেন।

৫ ফুট ৮ ইঞ্চি উচ্চতার আফগান উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ শেহজাদ বাইশ গজে মারকাটারি ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি মোটাসোটা গড়নের শরীরটার জন্যও বেশ বিখ্যাত। তার ব্যাটিং নিয়ে কোন প্রশ্ন না উঠলেও স্থুলকায় দেহের ফিটনেস নিয়ে চিন্তিত দেখা যায় ভক্ত-সমর্থকদের। তবে সেসব যেন থোড়াই কেয়ার শেহজাদের। জানিয়েছেন সরাসরিই, খাবারের বেলার কোন আপোষ নয়।

এর আগে মুটিয়ে গেছেন বলে একবার অবশ্য চেষ্টা করেছিলেন নিজের ৯৩ কেজি শরীরটার ওজন কিছুটা কমানোর জন্য। সেই চেষ্টায় সহায়ক ছিল ওষুধ। হাইড্রোক্সিকাট নামের সেই ওষুধই শেষ পর্যন্ত কাল হয়েছিলো শাহজাদের জন্য। ওষুধ নেওয়ার ফলেই কিনা প্রমাণ মেলে ডোপপাপের! সেজন্যই ক্রিকেট থেকে তাকে ১২ মাসের জন্য নিষিদ্ধ করেছিল আইসিসি।

নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে আবার বাইশ গজের খেলা ক্রিকেটে ফিরেছেন আফগানদের হয়ে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ১৩২ স্ট্রাইকরেটে রান তোলা শেহজাদ। তবে এখন আর তোয়াক্কা করেন না নিজের ফিটনেস দিকে। তাকে ওজন কমানোসহ ফিটনেসের দিকে নজর দিতে বলা হয় প্রায়ই। এক্ষেত্রে শেহজাদকে উদাহরণ হিসেবে দেখানো হয় ভারতীয় অধিনায়ক বিরাট কোহলির খাদ্যাভ্যাস এবং অনুশীলনের সূচী।

তবে সেসবে কর্ণপাত নেই শেহজাদের। এই প্রসঙ্গে শেহজাদ বলেন, ‘আমি এখনই কোহলির চেয়ে বড় বড় ছক্কা মারতে পারি। তাহলে কেন অযথাই তার মতো পরিমিত খাদ্যাভাস গড়ে তুলতে হবে? আমি আমার ফিটনেস নিয়ে অনেক কাজ করি। তবে খাবারের বেলায় কোনো আপোষ আমার দ্বারা সম্ভব না।’

আরো পড়ুন : ভারতের মোকাবেলায় আফগানরা
ক্রীড়া প্রতিবেদক ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১৪:২৬

ঢাকায় ২০১৪-এর এশিয়া কাপে সাক্ষাৎ ঘটেছিল দুই দলের। শেরেবাংলায় অনুষ্ঠিত ওই ম্যাচে আট উইকেটে জিতেছিল ভারত। আফগানরা সে সময় অতটা গোছানো ছিল না। যে পারফরম্যান্স এখন তাদের তাতে পেছনের সে রেজাল্ট কোনো প্রভাব বিস্তার করবে বলে মনে হয় না। আজ ভারত মোকাবেলা করবে চমৎকার ও উপভোগ্য পারফরম্যান্স করে চলা আফগানদের। দুবাইয়ের এ ম্যাচটা যে উপভোগ্য হবে তাতে সন্দেহ নেই। যদিও এ ম্যাচের তেমন কোনো গুরুত্বই নেই।

ভারত সুপার ফোরের দুই ম্যাচে জয় লাভ করে ফাইনাল নিশ্চিত করে রেখেছে। আজকে হারলেও তাতে সমস্যা নেই। পক্ষান্তরে আফগানদেরও ফাইনালে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। নিছক আনুষ্ঠানিকতা হলেও আফগানদের জন্য এ ম্যাচের গুরুত্ব অনেক। এ আসরে খেলেছে তারা পাকিস্তান, বাংলাদেশের বিপক্ষেও। তাতে পাকিস্তানের বিপক্ষে হারলেও বাংলাদেশকে গ্রুপ পর্বে একবার হারিয়েছে।


শেষ ম্যাচে বাংলাদেশের বিপক্ষে যে লড়াইটা তারা করেছে তা অসাধারণ। শেষের ওভারে শুধু অভিজ্ঞতার জন্যই হেরেছে তারা। নতুবা ৬ বলে ৮ রান না করার কোনো কারণই ছিল না। মুস্তাফিজের চাতুর্যতাপূর্ণ বোলিংয়ে সেটি আর সম্ভব হয়নি। হারলেও আফগানরা বাহবা কুড়িয়েছে। পরবর্তী বিশ^কাপে তাদের নিয়ে যে প্রতিপক্ষ দলগুলোকে ভাবতে হবে সেটি তারা এ আসরে জানান দিতে সক্ষম হয়েছে। 

আজকের ম্যাচে ভারত যে ফর্মে তাতে আফগানরা মোটেও সুবিধা করতে পারবে না। পাকিস্তান বাংলাদেশের বিপক্ষে যে সুবিধাটা তারা পেয়েছে সেটি ভারত দেবে না। দুর্দান্ত ব্যাটিং লাইন মোটেও রশীদ খান ও মুজিবুর রহমান প্রভাব বিস্তার করতে পারবে বলে মনে হয় না। তবু সমীহ আদায় করবে এটি নিশ্চিত। তবে ভারত সব সময় সলিড ক্রিকেট খেলে। কোন দলের বিপক্ষে কী গেম খেলতে হবে সেটি তারা জানে। এ আসরে এখনো তারা অপরাজিত। গ্রুপ পর্বে পাকিস্তান ও হংকংয়ের বিপক্ষে জিতে সুপার ফোরে উঠে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানকে এরই মধ্যে হারিয়েছে অনায়াসে।

আফগানদের বিপক্ষে জিতলে অপরাজিত থেকেই ফাইনাল খেলবে রুহিত শর্মা,মহেন্দ্র সিং ধোনিদের দল। ভারত দলে সব সময়ই একটা বড় প্রতিযোগিতা থাকে। কে কোন স্থানের জন্য বিবেচ্য হবেন সেটা একটা বড় ফ্যাক্টর। ফলে দলের প্রতিটা ক্রিকেটার সতর্ক। তা ছাড়া টপ অর্ডার দারুণ খেলছে। বিশেষ করে শেখর ধাওয়ান, রুহিত শর্মা, আমবাতি রাইডু, মহেন্দ্র সিং ধোনিরা সুপার ফর্মে।

আজো তারা মূলত ফাইনালের রিহের্সেলটা সেরে নেবে। রবি শাস্ত্রি তার দলের রিজার্ভ বেঞ্চটাও পরখ করে দেখার একটা সুযোগ নিতে পারেন এ ম্যাচে। ইংল্যান্ডে ব্যাস্ততম এক সফর শেষে এশিয়া কাপ খেলতে এসেছে তারা। অধিনায়ক বিরাট কোহলিকে বিশ্রামে রাখা হয়েছে মূূলত পরবর্তীতে ব্যস্ততম কিছু সিডিউলের জন্যই। এ ম্যাচেও বিশ্রামে যেতে পারেন সিনিয়র কেউ কেউ। তবে সেটি নিজেদের সুরক্ষিত রেখেই। 

আফগানরা আসলেই দুর্দান্ত ক্রিকেট খেলছে। যেমন পারফরম্যান্স তাদের ব্যাটিংয়ে। তেমনি বোলিংয়েও। রশীদ খান, মুজিব, আফতাবদের মোকাবেলা করা একেবারেই সহজ সাধ্য না। প্রতিটা ম্যাচেই এ বোলাররা প্রতিপক্ষের ব্যাটসম্যানদের ওপর প্রভাব বিস্তার করে। ভারতীয়রা এখনো এদের পরখ করার সুযোগ পায়নি। আজ তারা কিভাবে মোকাবেলা করবেন সেটি দেখার বিষয়। ব্যাটিংয়েও হাসমতুল্লাহ, রহমত শাহ, সামিউল্লাহ সেনওয়ারী, মোহাম্মাদ নবিরা ভালো করছেন। বিশেষ করে যেকোনো টার্গেটে যেতে তারা যেন একটি ছক সামনে রেখে খেলে যান। এবং সে লক্ষ্যে তারা পৌঁছে যান।

দলের প্রয়োজনে কেউ না কেউ সে দায়িত্বটা পালন করে ফেলেন। দলের প্রতিটা ক্রিকেটারের এমন দৃঢ়তা আফগানদের সামনে এগোতে সহায়তা দিচ্ছে। ভারতের বিপক্ষে একমাত্র ওয়ানডেতে খেলা ম্যাচের সামিউল্লাহ সেনওয়ারী, রহমত শাহ, আসগর আফগান, মোহাম্মাদ শাহজাদ, মোহাম্মদ নবি এ স্কোয়াডেও আছেন। ভারতের পক্ষে খেলা ধাওয়ান, রুহিত শর্মা প্রমুখরা রয়েছেন এ ম্যাচে। 


আরো সংবাদ



premium cement