২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ফাইনালে যেতে হলে যা করতে হবে মাশরাফিদের

-

দলগত পারফরেমেন্সের নৈপূণ্য বাংলাদেশকে ৭ উইকেটের ব্যবধানে হারিয়ে এশিয়া কাপের ১৪তম আসরের সুপার ফোরে যাত্রা শুরু করলো ভারত। গতরাতে সুপার ফোরে নিজেদের প্রথম ম্যাচে টস হেরে প্রথমে ব্যাটিং করে ১৭৩ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। জবাবে অধিনায়ক রোহিত শর্মা অপরাজিত ৮৩ রানের সুবাদে জয় তুলে নেয় ভারত।

তাই সুপার ফোরের প্রথম ম্যাচ হারের জন্য ব্যাটসম্যানদের দুষলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। ম্যাচ শেষে পুরস্কার বিতরনী অনুষ্ঠানে ম্যাশ বলেন, ‘শুরু থেকেই আমরা উইকেট হারাতে থাকি। আজ আমরা সব দিক থেকেই পিছিয়ে ছিলাম। আমি মনে করি, এখনও ঘুড়ে দাঁড়ানো সম্ভব। এ ম্যাচের উইকেট ব্যাটিংয়ের জন্য খুব একটা খারাপ ছিলো না। ২৫০-২৬০ রান করতে পারতাম কিন্তু আমরা নিয়মিত উইকেট হারাতে থাকি। হয়তো দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিং করা আরও সহজ হতে পারতো। কিন্তু সহজেই ২৬০-২৭০ রান করা যেত। যদি ১৭০ রানের সংগ্রহ হয়, তাহলে বোলারদের কাজটা কঠিন হয়ে পড়ে। ব্যাটসম্যানদের আরও দায়িত্ব নিতে হবে, বিশেষ করে পরপর দুই ম্যাচে বড় স্কোর করতে ব্যর্থ হবার পর। পরের ম্যাচ শক্তিশালী বোলিং আক্রমনের বিপক্ষে খেলতে হবে আমাদের। আমাদের ভালো ব্যাটিং করা প্রয়োজন।’

হার দিয়ে সুপার ফোর শুরু হলেও, এখানো ঘুড়ে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখছেন মাশরাফি। তিনি বলেন, ‘একটি ম্যাচ সবকিছু বদলে দিতে পারে। আমরা এখনো টুর্নামেন্টে টিকে আছি। আফগানিস্তানের বিপক্ষে পরের ম্যাচটি আমাদের জন্য কঠিন। ঐ ম্যাচে ভালো পারফরমেন্স করতে হবে আমাদের। আফগানিস্তানের বোলিং আক্রমন অনেক বেশি শক্তিশালী। আমাদের বোলিং এখনো ভালো হচ্ছে। কিন্ত মূল চিন্তার কারন ব্যাটিং। আশা করছি, আমরা ঘুরে দাঁড়াবো।’

অন্য দিকে ম্যাচ জয়ের জন্য দলের খেলোয়াড়দের প্রশংসা করলেন ভারত অধিনায়ক রোহিত। তিনি বলেন, ‘ম্যাচের শুরু থেকেই দুর্দান্ত পারফরমেন্স করেছে দল। বোলাররা ভালো করেছে। প্রতিপক্ষকে শুরু থেকেই চাপে ফেলতে সক্ষম হয়েছে। বোলাররাই ব্যাটসম্যানদের কাজটা সহজ করে দিয়েছে। তাই সহজেই জয়ের টার্গেট আমরা স্পর্শ করতে পেরেছি। সবাই খুবই ভালো পারফরমেন্স করেছে। এই ধারাবাহিকতাটা ধরে রাখতে হবে আমাদের।’


ভারত-বাংলাদেশ ম্যাচ
বাংলাদেশকে সহজেই হারিয়ে এশিয়া কাপের ১৪তম আসরের সুপার ফোরে যাত্রা শুরু করলো ভারত। সুপার ফোরে নিজেদের প্রথম ম্যাচে ভারত ৭ উইকেটে হারিয়েছে বাংলাদেশকে। টস হেরে প্রথমে ব্যাটিং করে ১৭৩ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। ৮২ বল বাকী রেখে জয় তুলে নেয় ভারত।

গতরাতে দুবাইয়ে টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিং বেছে নেয় ভারত। দুই ওপেনার লিটন দাস ও নাজমুল হোসেন শান্ত বড় ইনিংস খেলতে ব্যর্থ হন। দু’জনই ৭ রান করে ফিরেন। তখন বাংলাদেশের স্কোর ২ উইকেটে ১৬ রান।

তৃতীয় উইকেট মুশফিকুরকে নিয়ে শুরুর পরিস্থিতি ভুলিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেন সাকিব। কিন্তু দু’জনের কেউই বড় ইনিংস খেলতে পারেননি। ভারতের বাঁ-হাতি স্পিনার রবীন্দ্র জাদেজার শিকার হন তারা। সাকিব ১৭ ও মুশফিকুর ২১ রান করেন।
হার্ডিক পান্ডিয়ার পরিবর্তে দলে সুযোগ পাওয়া জাদেজা পরে আরও দু’টি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট শিকার করেন। মোহাম্মদ মিথুন ৯ ও মোসাদ্দেক হোসেন ১২ রান করে জাদেজার বলে আউট হন। মাঝে মাহমুদুল্লাহ’র উইকেট শিকার করেছেন ভারতের পেসার ভুবেনশ্বর। ভালো শুরু করেও ২৫ রানে থেমে যান মাহমুদুল্লাহ।

১০১ রানে সপ্তম উইকেট হারিয়ে দ্রুত গুটিয়ে যাবার শংকায় পড়ে বাংলাদেশ। কিন্তু অষ্টম উইকেটে ব্যাট হাতে ভারতীয় বোলারদের সামনে প্রতিরোধ গড়ে তুলেন অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা ও মেহেদি হাসান মিরাজ। ফলে সম্মানজনক স্কোরের পথে হাটতে থাকে বাংলাদেশ। শেষ পর্যন্ত অষ্টম উইকেটে ৭৯ বলে ৬৬ রানের জুটি গড়েন তারা। মাশরাফিকে ২৬ রানে থামিয়ে দিয়ে এই জুটি ভাঙ্গেন ভারতের ভুবেনশ্বর।

মাশরাফির বিদায়ের কিছুক্ষণ পর থামেন মিরাজও। ২টি করে চার ও ছক্কায় ৫০ বলে ৪২ রান করেন তিনি। শেষ পর্যন্ত ইনিংসের ৫ বল বাকী থাকতে ১৭৩ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। ভারতের জাদেজা ৪টি, ভুবেনশ্বর-বুমরাহ ৩টি করে উইকেট নেন।

জয়ের জন্য ১৭৪ রানের টার্গেটে ভারতের ইনিংস শুরু করেন অধিনায়ক রোহিত শর্মা ও শিখর ধাওয়ান। ব্যাট হাতে শুরুটা ভালোই করেন রোহিত ও ধাওয়ান। তবে সেটি ছিলো ধীরলয়ে। ৮৬ বলে ৬১ রান যোগ করেন তারা। ৪৭ বলে ৪০ রান করা ধাওয়ানকে শিকার করে ভারতীয় শিবিরে প্রথম আঘাত হানেন বাংলাদেশের সাকিব আল হাসান। নিজের ইনিংসে ৪টি চার ও ১টি ছক্কা মারেন ধাওয়ান।

এরপর আম্বাতি রাইদুকে নিয়ে রানের চাকা সচল রেখেছিলেন রোহিত। ফলে জয়ের পথে বেশ ভালোভাবেই টিকে ছিলো ভারত। তবে তিন নম্বরে নেমে ১৩ রানের বেশি করতে পারেননি রাইদু। বাংলাদেশের পেসার রুবেল হোসেনের শিকার হন তিনি। দ্বিতীয় উইকেটে রোহিতের সাথে ৪৫ রান যোগ করেন রাইদু।

১০৬ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারানোর পর ক্রিজে রোহিতের সঙ্গী হন সাবেক অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি। ম্যাচ জয়ের জন্য আসল কাজটা সেরেছেন এ জুটিই। তৃতীয় উইকেটে ৭০ বল মোকাবেলা করে ৬৪ রান যোগ করেন রোহিত-ধোনি।

জয় থেকে ৪ রান দূরে থাকতে ধোনি আউট হলেও ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ৩৬তম হাফ-সেঞ্চুরি তুলে দলের জয় নিশ্চিত করেন রোহিত। ১০৪ বলে ৫টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৮৩ রানে অপরাজিত থাকেন রোহিত। বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক মাশরাফির বলে আউট হলে ৩৩ রানে থামেন ে ধোনি। বাংলাদেশের মাশরাফি-সাকিব-রুবেল ১টি করে উইকেট নেন। ম্যাচ সেরা হয়েছেন ভারতের রবীন্দ্র জাদেজা।

 


আরো সংবাদ



premium cement