২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

এমন ভুল!

সাব্বির
যখন স্ট্যাম্প ভাঙা হচ্ছিল, তখন সাব্বিরের পা ছিল উইকেটের ওপরই - সংগৃহীত

স্কোরবোর্ডে ১ রান যোগ হওয়ার পরই যখন সাজঘরে ফিরলেন এনামুল হক বিজয়, তখন হতাশায় ডুবে গিয়েছিল টাইগার সমর্থকরা। টেস্টের মতোই কী হাল হবে বাংলাদেশের? না, তেমনটা হতে দেননি তামিম ইকবাল ও সাকিব আল হাসান। দুইপ্রান্ত আগলে রেখে দেখে-শুনে চালিয়েছেন ব্যাট, যার ফল ২০৭ রানের অনবদ্য জুটি। এটি ওয়ানডেতে যে কোনো উইকেটে বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংগ্রহ। তবে সেঞ্চুরি থেকে ৩ রান দুরে থাকতেই আফসোস নিয়ে বিদায় নেন সাকিব। ক্রিজে আসেন সাব্বির। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে মাত্র তিন রান করেই সাজঘরে ফিরতে হলো তাকে, তাও আম্পায়ারের ভুল সিদ্ধান্তে!

৪৭ ওভারের খেলা চলছিল। ক্রিজে ছিলেন সাব্বির। ওভারের তৃতীয় বলটি করতে দৌড়ে এসেছিলেন দেবেন্দ্র বিশু। একটু এগিয়ে এসে খেলতে চেয়েছিলেন সাব্বির। কিন্তু মিস করেন। ব্যাটে-বলে হলো না। বল চলে যায় উইকেটের পেছনে উইকেটরক্ষক সাই হোপের হাতে।

দ্রুত স্ট্যাম্প ভেঙে দেন উইকেটরক্ষক। আবেদন উঠতেই নন স্ট্রাইকে থাকা আম্পায়ার উইলসন আঙ্গুল তুলে দিলেন। সাব্বির কিছু না বুঝেই সোজা হাঁটা ধরলেন। রিভিউ নিলেও হয়তো বেঁচে যেতেন তিনি। কিন্তু রিভিউ না নিয়ে চলে গেলেন ড্রেসিংরুমে।

পরে টিভি রিপ্লেতে দেখা যায়, সাব্বির আউট ছিলেন না। যখন স্ট্যাম্প ভাঙা হচ্ছিল, তখন তার পা ছিল উইকেটের ওপরই। অথচ, আম্পায়ারের ভুলে উইকেট দিয়ে আসতে হলো সাব্বিরকে।

যদি কাল ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে বাংলাদেশ না জিতত তাহলে এই ভুলের জন্যই আফসোস করতে হতো বাংলাদেশকে।

 

আরো পড়ুন : 'পরিকল্পনা ছিল স্কোরবোর্ডের দিকে না তাকিয়ে খেলে যাওয়া'

এভাবে ঘুরে দাড়াবে বাংলাদেশ- সেটা হয়ত অনেকে ভাবেননি। কারণ টেস্টে হতাশাজনক পারফরমেন্স ছিল বাংলাদেশের। কিন্তু কাল যেভাবে ধীর-স্থির ব্যাটিং করেছেন তামিম-সাকিব, তাতে ম্যাচজয়ের আভাস পাওয়া যাচ্ছিল। তবে দুর্ভাগ্যজনকভাবে সেঞ্চুরি থেকে মাত্র ৩ রান দুরে থেকে সাকিবের সাজঘরে ফেরাটা মেনে নেয়ার মতো ছিল না। কিন্তু তামিম ধীরতার পরিচয় দিয়ে তুলে নিয়েছেন ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ১০ম সেঞ্চুরি। ১৬০ বলে করেছেন ১৩০ রান।

নান্দনিক এই ইনিংস নিয়ে খুব বেশি কথা বলেননি তামিম। শুধু বলেন, 'যখন একটি ইনিংস দলের জয়ে অবদান রাখে, তখন সেটা সবসময়ই স্পেশাল কিছু।'

তবে এই উইকেটে রান তোলা যে মোটেই সহজ ছিল না সেটাও জানিয়েছেন তামিম। বলেছেন, 'আমরা যখন ব্যাটিং করতে আসি, এটা মোটেই সহজ উইকেট ছিল না। আমাদের শক্তিশালী অবস্থানে যেতে কঠোর পরিশ্রম করতে হয়েছে। আমার মনে হয়, প্রথম ২৫ ওভার সত্যিই অনেক কঠিন ছিল। বল টার্ন করছিল এবং ফাস্ট বোলাররাও সাহায্য পাচ্ছিল। তাই আমাদের প্রাথমিক পরিকল্পনা ছিল যতটা সম্ভব সময় খেলে যাওয়া, স্কোরবোর্ডের দিকে না তাকিয়ে। আমাদের মনে মনে একটা লক্ষ্য ছিল, যেটা আমরা মুশফিকের ব্যাটিংয়ে পেয়ে যাই। আমরা আসলে লক্ষ্যটা পার করে ২০ রান বেশি করতে পেরেছি।'

 

আরো পড়ুন : দুর্দান্ত জয় বাংলাদেশের

ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে প্রথম ওডিআই ম্যাচেই দুর্দান্ত জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। রোববার গায়ানায় অনুষ্ঠিত ম্যাচে তামিম-সাকিবের দুর্দান্ত জুটি আর শেষ দিকে মুশফিকুর রহীমের ঝড়ো ইনিংসে বাংলাদেশ করেছিল ৪ উইকেটে ২৭৯ রান। জবাবে ওয়েস্ট ইন্জিজ শেষ পর্যন্ত করে ৯ উইকেটে ২৩১ রান। বাংলাদেশ ৪৮ রানে জিতে তিন ম্যাচ ওডিআই সিরিজে ১-০-এ এগিয়ে গেল।

তামিম-সাকিবদের পর আবারো সত্যিকারের অধিনায়ক হিসেবে আবির্ভূত হন মাশরাফি মর্তুজা। বল হাতে তাকে দেখা যায় আসল রয়েল বেঙ্গল টাইগারের মতোই। ৪টি উইকেট নিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের লড়াই করার সম্ভাবনাই গুঁড়িয়ে দেন। অধিনায়ক হিসেবে দলকে উজ্জীবিত করার ক্ষমতা তার অসাধারণ। সেই কাজটি করার পাশাপাশি তিনি বল হাতেও দলকে নেতৃত্ব দিয়ে এই জয়টি ছিনিয়ে আনেন।
অথচ তার এই সিরিজে খেলা নিয়েই ছিল অনিশ্চিত। স্ত্রীর অসুস্থতার কারণে তিনি ওয়েস্ট ইন্ডিজে যাবেন না বলেও শোনা গিয়েছিল। সেই তিনিই মহানায়ক বনে গেলেন।

তবে ম্যান অব দি ম্যাচ হয়েছেন তামিম ইকবাল। তিনি তার ১০ ওডিআই শতক করার পাশাপাশি সাকিব আল হাসানের (৯৭) সাথে ২০৭ রানের একটি গুরুত্বপূর্ণ পার্টনারশিপ গড়েন।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে হেটমার সর্বোচ্চ ৫২ রান করেছিলেন। এছাড়া ক্রিস গেইল করেন ৪০ রান।


আরো সংবাদ



premium cement