২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`


ল্যাবএইড হাসপাতাল মালিকের স্বেচ্ছাচারী আচরণ

আতঙ্কে ধানমন্ডির কনকর্ড শপিংমলের ব্যবসায়ীরা

-

রাজধানীর ধানমন্ডি কনকর্ড আর্কেডিয়া শপিংমলের ব্যবসায়ীরা আতঙ্কে রয়েছেন। মার্কেটের বৈশিষ্ট্য নষ্ট করে ইতঃপূর্বে হাসপাতাল তৈরি করা ল্যাবএইড কর্তৃপক্ষ তাদের দোকানের পেছন দিকে গেট তৈরি করায় এ আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। দোকানমালিকরা তাদের মালামাল চুরি ও নাশকতার আশঙ্কায় গত ১৭ জানুয়ারি ধানমন্ডি মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন।
কনকর্ড আর্কেডিয়া শপিংমল ওনার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের লিখিত অভিযোগ থেকে জানা যায়, জাতীয় নির্বাচনের জন্য গত ২৮ থেকে ৩০ ডিসেম্বর মার্কেট বন্ধ থাকার সুযোগে দ্বিতীয় তলার ২০৮ নম্বর দোকানের পেছন দিকের দেয়াল ভেঙে সেখানে জালি গেট তৈরি করে ল্যাবএইড কর্তৃপক্ষ। দোকানের পেছনের অংশে ল্যাবএইড আগেই হাসপাতাল নির্মাণ করেছে। ফলে দোকানটি তাদের হওয়ায় তারা এখন হাসপাতাল থেকে মার্কেটের মধ্যে অনাসেই ঢুকতে পারবেন। এতে সামগ্রিকভাবে মার্কেট বন্ধ রাখলেও ল্যাবএইড কর্তৃপক্ষ যেকোনো সময় মার্কেটে ঢুকতে ও বের হতে পারবে। এতে অন্য দোকানমালিকেরা আতঙ্কে রয়েছেন। তাদের সম্পদ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা করছেন।
আরো অভিযোগ করা হয়, ল্যাবএইড হাসপাতালের মূল ভবন রয়েছে উত্তর দিকে। এরপর তারা কনকর্ড শপিংমলের তৃতীয় ও চতুর্থ চলার ১০২টি দোকান কিনে নিয়ে সেগুলো ভেঙে হাসপাতাল বর্ধিত করেছে। এরপর তারা মার্কেট থেকে তাদের হাসপাতালের অংশ আলাদা করে নিয়েছে। বর্তমানে শপিংমল মালিক সমিতির সাথে কোনো সম্পর্ক নেই তাদের। বরং ইতঃপূর্বে মার্কেট মালিক সমিতি তাদের কাছে চার কোটি ৮৮ লাখ ৪৯ হাজার টাকা বিদ্যুৎ বিল বাবদ পাওনা থাকলেও তা পরিশোধ করেনি ল্যাবএইড।
কনকর্ড আর্কেডিয়া শপিংমল ওনার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোক্তার হোসেন নয়া দিগন্তকে বলেন, মার্কেটে ল্যাবএইড মালিক গোপনে দোকান কিনেছে কিন্তু তারা সমিতির কোনো নিয়মকানুন মানছেন না। বরং নকশা পরিবর্তন করে মার্কেটকে হাসপাতাল বানানো হয়েছে। এখন তাদের আরেকটি দোকানের উত্তর অংশে (হাসপাতাল সংলগ্ন) রাতের আঁধারে দেয়াল ভেঙে গেট তৈরি করা হয়েছে। তাদের ওই দোকানের দক্ষিণ দিকেও গেট রয়েছে। এ গেট খুলে তারা যেকোনো সময় মার্কেটে প্রবেশ করতে পারবে। এ কারণে মার্কেটের অন্য ব্যবসায়ীরা আতঙ্কে রয়েছেন।
অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সানাউল হক নীরু নয়া দিগন্তকে বলেন, ল্যাবএইড কর্তৃপক্ষ দীর্ঘদিন ধরে রাজউকের নিয়মকানুন ভেঙে মার্কেটের দোকান কিনে সেখানে হাসপাতাল বানিয়েছে। এরপর একের পর এক বেআইনি কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। এ ব্যাপারে রাজউকে অভিযোগ দিলেও কাজ হচ্ছে না। এ ব্যাপারে হাইকোর্টে রিট পিটিশন দায়ের করলে সেখান থেকে রাজউককে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিলেও অজ্ঞাত কারণে তারা কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। এ কারণে ল্যাবএইড কর্তৃপক্ষ ক্রমেই বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। সর্বশেষ তারা দোকানের পেছনের দেয়াল ভেঙে সেখানে প্রবেশপথ তৈরি করেছে। এতে মার্কেটটি সম্পূর্ণ অরক্ষিত হয়ে পড়েছে। ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। এ বিষয়ে ল্যাবএইডের হেড অব অপারেশনস আলমগীর হোসেন নয়া দিগন্তকে বলেন, মার্কেটে আমাদের অফিস রয়েছে, সেখানে মার্কেট বন্ধের দিনে আমাদের চলাচল করতে হয়। এ জন্য আমাদের দোকানে আমরা গেট তৈরি করেছি। একইভাবে আমাদের তৃতীয় ও চতুর্থ তলাতেও পথ রয়েছে। কনকর্ড আর্কেডিয়া শপিংমল ওনার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের নিরাপত্তা সঙ্কটের বিষয়ে তিনি বলেন, মার্কেটে আমাদের দোকান ও অফিস রয়েছে। এ জন্য আমরাই বরং নিরাপত্তা সঙ্কটে রয়েছি।

 


আরো সংবাদ



premium cement