২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

আটটি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কার পেয়েছে এই ছবি

আটটি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কার পেয়েছে এই ছবি - সংগৃহীত

সমাজের অন্য আট-দশটা ঘটনার মতোই এখন প্রায় প্রতিদিনই গণমাধ্যমে প্রকাশ হয় শিশুদের যৌন নির্যাতনের খবর। এই নির্যাতনের ধরণ সামনে নিয়ে আসে মানব মনের পশুবিত্তকে, বর্বর এই আচরণ বিশ্বাস করতে কষ্ট হলেও বাস্তব। যা ‘অ্যা টয় অপারেশন থিয়েটার’স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রের মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে চমৎকারভাবে। গত ২১ মে এটি ইউটিউবে মুক্তি দেয়া হয়েছে। কিন্তু তার আগেই জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনের বিভিন্ন প্রতিযোগিতা বিভাগ থেকে ৮টি পুরস্কার লাভ করেছে। ১০ মিনিট ৫২ সেকেন্ডের স্বল্পদৈর্ঘ্য ছবিটি নির্মাণ করেছেন তামহিদ উল ইসলাম নাফি।

স্বল্পদৈর্ঘ্য এই চলচ্চিত্রের গল্পটা সাজানো হয়েছে খুবই চমৎকার ভাবে। যেখানে একজন ডাক্তার ও নার্স মিলে একটি হাসপাতাল পরিচালনা করেন। রোজ অসংখ্য রোগী আসে। তবে রোগীরা একা আসতে পারেনা। কারণ তাদের ‘জান-প্রাণ’ কিচ্ছু নেই। তাদের নিয়ে আসে তাদের অভিভাবকরা। অভিভাবকরাও বেশ, কারো বয়সই দশ-বারোর উর্ধ্বে না। রোগীরা সকলেই আবার পুতুল। খেলনা পুতুল। ছবির শুরুতে নার্সের পোশাকে দেখা গেলো সাবিলা নূরকে। রোগীদের সিরিয়াল লিখছেন। ‘রোগীর নাম কী?’ প্রশ্ন করতেই চশমা ঠেলে বেশ ভাব নিয়ে উত্তর দেয় এক ছেলে শিশু। একে একে নানা মজার নাম লিখিয়ে ডাক্তারের জন্য অপেক্ষা করে রোগী নিয়ে আসা শিশুরা। ডাক্তারকে দেখেও বেশ মজা পাবেন আপনি। রোগী নিয়ে অপেক্ষারত শিশুদের মতই তিনি। সিরিয়াল অনুসারে রোগী ডাকছে নার্স, একে একে রোগীর সমস্যা শুনে অপারেশন করা হচ্ছে। ছোট্ট বাচ্চা মেয়ে ডাক্তারের পোশাকে কাজ করে যাচ্ছেন। তার কাজ ওই নষ্ট পুতুলদের ঠিক করা। টেডিবিয়ারটার চোখ সেলাই করে দেয়া, ভাঙ্গা গাড়িটার চাকা ঠিক করে দেয়া।

যে বয়সেরই হোন আপনি, বিষয়টা আপনার খারাপ লাগবে না। কিছু সময়ের জন্য হলেও শৈশবে ফিরবেন, হাসবেন। তবে মানসিক প্রস্তুতি না থাকলে পরের ধাক্কাটা সামলাতে একটু সময় লাগবে। কারণ পরের দৃশ্যটার শুরুটা এভাবে, সকল রোগীর অপারেশন শেষে নার্স এবং ডাক্তার বেড়িয়ে পড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। আরো একজন রোগী হাজির। ছোট্ট ফুটফুটে একজন মেয়ে। তবে তার সাথে কোনো খেলনা নেই। সে নিজের সমস্যা নিয়েই এসেছে নষ্ট খেলনা ঠিক করা ডাক্তারের কাছে। কারণ সে তার চাচ্চুর কাছে জেনেছে সে একটা খেলনা। তার প্রাইভেট টিউটরের থেকেও এটাই শিখেছে। তাকে নিয়ে ওরা সুযোগ পেলেই খেলেছে। গতরাতে খেলার সময় তার অনেক রক্ত পড়েছে। তাকে বলা হয়েছে সে নষ্ট হয়ে গেছে। তবে এটা তার বাবা মাকে জানানো যাবে না। তার বাবা মাকে জানালে বাবা মা তাকে নষ্ট খেলনার মতই ফেলে দেবে। তাই সে নষ্ট খেলনা ঠিক করে দেয়া ডাক্তারের কাছে এসেছে যাতে ডাক্তার টেডিবিয়ারের চোখের মত, ভাঙ্গা গাড়ির চাকার মত, নষ্ট মিনিয়নের হাতের মত নষ্ট হয়ে যাওয়া তাকেও ঠিক করে দেয়।

‘অ্যা টয় অপারেশন থিয়েটার’এর নার্সের চরিত্রে অভিনয় করেছেন সাবিলা নূর। তিনি বলেন, ‘অ্যা টয় অপারেশন থিয়েটার’ শিশুদের নিয়ে একটি জনসচেতনামূলক স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র। এই কাজের অভিজ্ঞতা খুব ভালো, দর্শকরা এর থেকে উপাদেয় একটি মেসেজ পাবেন। আমাদের আশপাশে প্রতিনিয়ত এই ধরণের ঘটনা ঘটছে।’

 


আরো সংবাদ



premium cement