২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

কক্সবাজার সৈকতে প্রাণ হারালেন টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র

-

কক্সবাজার সুমদ্র সৈকতে আবার প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে আজ শুক্রবার সকালে। গোসল করতে নেমে এবার প্রাণ হারালেন যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশি ছাত্র মোহাম্মদ আলী আরফাত (২২)। তার বাবার নাম আলহাজ্ব মোহাম্মদ আলী আল কারাছ।
চট্টগ্রামের হালিশহরের ২৫ নং রামপুর ওয়ার্ডে তাদের বাড়ি হলেও পরিবারের প্রায় সকলেই থাকেন যুক্তরাষ্ট্রে। গ্রাজুয়েশনের পর সদ্য অ্যাওয়ার্ড পেয়ে আরাফাত এবং চার বোন আট ভাই সকলে মিলে চলতি মাসের ৩ জুন (২০১৮ইং) বাংলাদেশে আসেন।
গত বুধবার তারা সকলেই কক্সবাজার বেড়াতে এসে সৈকতের হোয়াইট অর্কিড হোটেলে উঠেন। এসময় তারা সমুদ্র সৈকতে ঘুরে বেড়ালেও গোসল করতে নামেন আজ শুক্রবার সকাল ১১টার দিকে সৈকতের সী গাল হোটেল পয়েন্টে। আরাফাতের ভাই এম এ নেওয়াজ বলেন, চোখের সামনে আরাফাত ভেসে যেতে থাকলেও কেউ উদ্ধার করতে আসেনি। প্রায় ২০ মিনিট পর পর্যটকদের সহযোগিতায় তাকে আমরা উদ্ধার করি। পরে উদ্ধারকর্মীরা ছুটে আসলে তাদের সহযোগিতায় কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে নেয়ার পথে মারা যান আরাফাত। অভিযোগ উঠেছে,
কক্সবাজার সৈকতে পর্যটকদের নিরাপত্তায় টুরিষ্ট পুলিশ ছাড়াও রয়েছে তিনটি বেসরকারি উদ্ধারকারী দল কিন্তু কোন দলকে আজ আরফাতের তাৎক্ষণিক উদ্ধার কাজে পাওয়া যায়নি। সৈকতে উদ্ধারকারী দল সী সেইফ এর ব্যবস্থাপক ইমতিয়াজ আহমদ জানান, সৈকত এমনিতে খুব উত্তাল রয়েছে। সাথে আছে ঘুর্ণি¯্রােত। সী সেইফ দল দায়িত্ব পালন করছে সৈকতের কলাতলি,সুগন্ধা ও লাবনি পয়েন্টে। সী গাল পয়েন্টে দায়িত্ব পালন করেন অন্য একটি উদ্ধারকারী দল।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সী গাল পয়েন্টে একটি উদ্ধারকারি দলের ওয়াচ টাওয়ার থাকলেও ঘটনার সময় তাদের কাউকে দেখা যায়নি পরে কান্নার আওয়াজ শুনে অন্য পয়েন্ট থেকে উদ্ধারকারী দল ঘটনাস্থলে ছুটে আসে। কিন্তু ততক্ষণে আরাফাতকে চরম সংকটাপন্ন অবস্থায় পর্যটকরাই উদ্ধার করে নিয়ে আসে। এম এ নেওয়াজ আরও বলেন বীচের কাছে কোন হাসপাতাল না থাকায় আরফাতকে দ্রুত কোন চিকিৎসা দেয়া সম্ভব হয়নি। তাৎক্ষণিক চিকিৎসা পেলে হয়তো তাকে বাঁচানো যেত। কক্সবাজার টুরিষ্ট পুলিশের সুপার জিল্লুর রহমান জানান, টুরিষ্ট পুলিশের পক্ষ থেকে ভাটার সময় সৈকতে না নামতে মাইকিং করা হয় কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে পর্যটকেরা এগুলো শুনতে চায় না। ফলে অনেক সময় দূর্ঘটনা ঘটে যায়।
আরাফাতের ভাই বোনের করুণ বিলাপের সুরে কক্সবাজার সৈকতের আকাশ আজ অন্যরকম ভারী হয়ে উঠেছিল। কলাতলি থেকে লাবনী পয়েন্ট পর্যন্ত ভেসে আসছিল স্বজন হারানোর কান্নার সুর। তাদের কান্নায় হাজার হাজার পর্যটকের চোখে পানি এসেছে।


আরো সংবাদ



premium cement