২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

লেনদেন বাড়লেও সূচক কমেছে পুঁজিবাজারে

-

আবারো নেতিবাচক প্রবণতার শিকার হলো পুঁজিবাজার। গতকাল দেশের দুই পুঁজিবাজারই কমবেশি সূচক হারায়। সূচকের উন্নতি দিয়ে দিন শুরু করা পুঁজিবাজারগুলো আধঘণ্টার মাথায় বিক্রয়চাপের মুখে পড়ে। বাকি সময় বাজার আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। দিনশেষে উভয় বাজারেই সূচকের অবনতি ঘটে। তবে এ সময় ঢাকা শেয়ারবাজারে লেনদেনের উন্নতি ঘটে।
প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স গতকাল ১৩ পয়েন্ট হারায়। ৫ হাজার ২৫৮ দশমিক ৫৮ পয়েন্ট থেকে দিন শুরু করা সূচকটি বুধবার দিনশেষে নেমে আসে ৫ হাজার ২৪৫ দশমিক ৫৮ পয়েন্টে। একই সময় ডিএসই-৩০ ও ডিএসই শরিয়াহ সূচকের অবনতি ঘটে যথাক্রমে ৬ দশমিক ৪৯ ও ৬ দশমিক ৩৫ পয়েন্ট।
দেশের দ্বিতীয় পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক ও সিএসসিএক্স সূচকের অবনতি ঘটে যথাক্রমে ২ দশমিক ৬২ ও দশমিক ১৫ পয়েন্ট। এখানে সিএসই-৫০ ও সিএসই শরিয়াহ সূচক হারায় যথাক্রমে ১ দশমিক ০৪ ও ৩ দশমিক ৬৯ পয়েন্ট।
সূচকের অবনতি সত্ত্বেও লেনদেনের উন্নতি ঘটে ঢাকা শেয়ারবাজারে। বুধবার ৬৩১ কোটি টাকার লেনদেন নিষ্পত্তি করে ডিএসই, যা আগের দিন অপেক্ষা ১০০ কোটি টাকা বেশি। মঙ্গলবার বাজারটির লেনদেন ছিল ৫৩১ কোটি টাকা। তবে চট্টগ্রামে আগের দিনের ২৫ কোটিতেই স্থির ছিল লেনদেন। এ নিয়ে টানা তিন দিন একই পরিমাণ লেনদেন করল পুঁজিবাজারটি।
বুধবার সূচকের উন্নতি দিয়েই দিন শুরু করে দুই পুঁজিবাজার। ডিএসইতে ৫ হাজার ২৫৮ দশমিক ৫৮ পয়েন্ট থেকে যাত্রা করে ডিএসইএক্স সূচকটি বেলা ১১টায় পৌঁছে যায় ৫ হাজার ২৭৭ পয়েন্টে। এ সময় ডিএসই সূচকের উন্নতি ঘটে ১৯ পয়েন্ট। সূচকের এ অবস্থান থেকে বিক্রয়চাপ শুরু হয়। দর হারাতে শুরু করে লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর বেশির ভাগ। দিনের বাকি সময় এ চার অব্যাহত থাকলে বেলা সোয় ২টায় সূচক নেমে আসে ৫ হাজার ২৩৬ পয়েন্টে। তবে শেষ মুহূর্তে হারানো সূচকের কিছুটা ফিরে পায় ডিএসই। দিনশেষে ১৩ পয়েন্ট হারিয়ে ৫ হাজার ২৪৫ দশমিক ৫৮ পয়েন্টে স্থির হয় ডিএসই সূচক।
পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা বাজারের সাম্প্রতিক আচরণে হতাশা ব্যক্ত করেছেন। তারা মনে করেন সাম্প্রতিক সময়ে পুঁজিবাজারে ঘন ঘন নতুন কোম্পানি আসছে। আর এসব কোম্পানি বাজারে আসার সাথে সাথে কোম্পানির শেয়ারের একটি বড় অংশ বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। এতে বাজার থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে তারল্য। গত ৫ মাসে সাতটি কোম্পানি তালিকাভুক্ত হয়েছে যা বাজার থেকে তুলে নিয়েছে প্রায় দু’হাজার কোটি টাকা। তা ছাড়া লভ্যাংশ ঘোষণার রেকর্ড-পরবর্তী মূল্যসমন্বয়ে ব্যাপকভাবে দর হারাচ্ছে কোম্পানিগুলো। এটাও সূচকের অবনতি ঘটাচ্ছে। এ মুহূর্তে প্রতিদিনই কিছু না কিছু কোম্পানির মূল্যসমন্বয়ের ঘটনা ঘটছে।
এ দিকে বেমেয়াদি আইসিবি এএমসিএল সেকেন্ড এনআরবি ইউনিট ফান্ডের খসড়া প্রসপেক্টাস অনুমোদন করেছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। মঙ্গলবার ৬৬৫তম কমিশন সভায় এ অনুমোদন দেয়া হয়। কমিশনের নির্বাহী পরিচালক এম হাছান মাহমুদ স্বারিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিএসইসি জানায়, মেয়াদ শেষ হওয়ার পর আইসিবি এএমসিএল সেকেন্ড এনআরবি মিউচুয়াল ফান্ড বেমেয়াদিতে রূপান্তর হয়েছে। কমিশন সভায় এর প্রসপেক্টাস অনুমোদন হয়েছে।
রূপান্তরিত ফান্ডটির সম্পদ ব্যবস্থাপনায় রয়েছে আইসিবি অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি লিমিটেড। ট্রাস্টি ও কাস্টডিয়ান হিসেবে রয়েছে সরকারের বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি)।
গতকাল টানা দ্বিতীয় দিনের মতো ডিএসইর লেনদেনের শীর্ষে ছিল ইউনাইটেড পাওয়ার জেনারেশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন। ৪৭ কোটি ৭৫ লাখ টাকায় কোম্পানিটির ১৫ লাখ ১৫ হাজার শেয়ার হাতবদল হয় গতকাল। ২৭ কোটি ৭ লাখ টাকায় ৩১ লাখ ৯৯ হাজার শেয়ার বেচাকেনা করে খুলনা পাওয়ার ছিল দ্বিতীয় অবস্থানে। ডিএসই’র লেনদেনের শীর্ষ দশ কোম্পানির অন্যগুলো ছিল যথাক্রমে মুন্নু সিরামিকস, ইফাদ অটোস, এসকে ট্রিমস, শেফার্ড ইন্ডাস্ট্রিজ, কাট্টলি টেক্সটাইলস, সায়হাম কটন, অ্যাকটিভ ফাইন কেমিক্যালস ও লিব্রা ইনফিউশন।


আরো সংবাদ



premium cement