ভোলায় একটি ফেসবুক স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করে আক্রোশবশত বোরহানউদ্দিন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুবাইয়াত ওয়াদুদ গল্প নামের এক এসএসসি পরীক্ষার্থীর এমসিকিউর উত্তরপত্র টেনে নিয়ে বসিয়ে রাখার অভিযোগ উঠেছে।
রোববার দুপুরে ভোলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ তুলে পরীক্ষার্থী রুবাইয়াত ওয়াদুদ গল্প নির্বাহী কর্মকর্তার বিচার দাবি করেন। পাশাপাশি সে পরবর্তী পরীক্ষাগুলোও বর্জনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে তার বাবা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক শেখ ফরিদ, মা গৃহিনী হুমায়রা সুরভী উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনে রুবাইয়াত অভিযোগ করেন, কয়েক মাস আগে বোরহানউদ্দিন উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত সাহিত্য সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার বিচার কার্যে পক্ষপাতমূলক আচরণের অভিযোগ তুলে রুবাইয়াত তার ফেসবুক পেইজে স্ট্যাটাস দিয়েছিল। ওই স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করে বোরহানউদ্দিন উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল কুদ্দুসের সাথে রুবাইয়াতের ফেসবুকে বাকবিতন্ডা চলে। এর এক পর্যায়ে নির্বাহী কর্মকর্তা রুবাইয়াতকে দেখে দেয়ার হুমকিও প্রদান করেন।
এরপর গত ২ ফেব্রুয়ারি বাংলা প্রথমপত্র পরীক্ষা শুরুর ১০ মিনিট পর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গিয়ে রুবাইয়াত ওয়াদুদ গল্পের পরীক্ষার কক্ষে গিয়ে এমসিকিউ উত্তরপত্র টেনে নিয়ে ১৫ মিনিট বসিয়ে রাখার নির্দেশ দেন কক্ষ পরিদর্শককে। কক্ষ পরিদর্শক ১৫ মিনিট পর তাকে উত্তরপত্র ফেরত দিয়েছেন। কিন্তু ভয়ে ও মানসিক চাপে সে কিছুই লিখতে পারেনি। রুবাইয়াতের অভিযোগ, পরবর্তী পরীক্ষাগুলোতেও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তার ক্ষতি করতে পারেন এই ভয়ে ও আতঙ্কে পরবর্তী পরীক্ষাগুলো বর্জনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এদিকে এ ঘটনায় রুবাইয়াতের বাবা-মাসসহ স্বজনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বিচার দাবি করে জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
গল্পর বাবা শেখ ফরিদ বলেন, আমার ছেলে গল্প যখন পরীক্ষা দিচ্ছে পাশ করার জন্য নয়। ভালো রেজাল্ট করার জন্য। যেহেতু প্রশাসন আমার ছেলের সাথে বৈষ্যমমূলক আচরণ করেছে। যেহেতু প্রশাসন আমার বৈষম্যমূলক আচরণ করে ছেলের ক্ষতি করেছে তার জন্য উপযুক্ত বিচার দাবী করছি।
এদিকে ভোলার জেলা প্রশাসক মো: মাসুদ আলম সিদ্দিক বলেন, তিনি লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন। যথাযথ তদন্ত স্বাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
আজান দেয়ার পর রুম থেকে বের করা হলো মুয়াজ্জিনের ফাঁস দেয়া লাশ
ভোলা সংবাদদাতা
ভোলা সদর উপজেলার ধনিয়া ইউনিয়নের বালিয়াকান্দি জামে মসজিদের মুয়াজ্জিন নুরে আলম (২৮) নামে গলায় ফাঁস অবস্থায় লাশ উদ্ধার করেছে থানা পুলিশ। রোববার দুপুর ২টার দিকে ওই মসজিদের পাশে মুয়াজ্জিনের রুম থেকে এ লাশ উদ্ধার করা হয়।
স্থানীয়রা সূত্রে জানায়, দুপুরের আযান দিয়েছিলেন মুয়াজ্জিন। এরপরে মুসুল্লিরা জামায়াতে নামাজ পড়তে এসে মুয়াজ্জিনকে দেখতে পায়নি, অনেক ডাকাডাকির পরও না পেয়ে মুসুল্লিরা মুয়াজ্জিনের রুমে গিয়ে দেখেন জানালার গ্রিলের সাথে গলায় রশি লাগানো অবস্থায় লাশ ঝুলছে। পরে ভোলা সদর মডেল থানার পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়।
মুয়াজ্জিনের পরিবার সূত্রে জানায়, গত ২ মাস আগে বিবাহ করেন। সুখে শান্তিতে ঘর সংসার করছিলেন। তার স্ত্রীর সাথেও কোনো ঝগড়া বিবাদ হয়নি। পারিবারিকভাবেও কোনো ঝগড়া বিবাদ ছিল না। হঠাৎ করে এমন মৃত্যু মেনে নেয়া যায় না। কেন মারা গেল জানি না। মনে হয় কেউ মেরে এমনভাবে ঝুলিয়ে রেখেছে।
মুয়াজ্জিন নুরে আলম বাপ্তা ইউনিয়নের বাসিন্দা মোসলেহ উদ্দিনের ছেলে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে কেউ হত্যা করে এমনভাবে ঝুলিয়ে রাখছে। যেহেতু পাশে একটি খাট, জানালা এবং পা দুটি সম্পূর্ণ মাটিতে রয়েছে।
এবিষয়ে ধনিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ এমদাদ হোসেন কবীর জানান, দুপুরের দিকে খবর শুনে দৌড়ে এসে দেখি মুয়াজ্জিনের রুমের জানালার সাথে লাশ ঝুলছে। তারপর থানা পুলিশকে খবরে দেই। মুয়াজ্জিন অত্যন্ত একজন ভালো মানুষ ছিলেন। দীর্ঘ ৮ বছর এই মসজিদে নামাজ পড়িয়েছেন। তার মৃত্যু কোনোভাবেই মেনে নেয়া যাচ্ছে না।
ভোলা সদর মডেল থানার পুলিশ উপ-পরিদর্শক ছগির জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য ভোলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। মর্গের রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত বলা যাবেনা। তবে মৃত্যুটি মনে হচ্ছে রহস্যজনক।
বেতন থেকে অতিরিক্ত টাকা কর্তন
ভোলা সংবাদদাতা
বেসরকারি শিক্ষকদের বেতন থেকে কল্যাণ ট্রাস্ট ও অবসর তহবিলে আগের ৬ শতাংশের সাথে অতিরিক্ত ৪ শতাংশ চাঁদা কর্তনের প্রজ্ঞাপন স্থায়ীভাবে বাতিল ও চলতি বছরের জানুয়ারি মাস থেকেই অতিরিক্ত কর্তনের আদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারী ফোরাম ভোলা সদর উপজেলা শাখা। রোববার বিকেল ৫টার দিকে ভোলা প্রেসক্লাবের সামনে ঘন্টাব্যাপী এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারী। এর আগে তারা শহরের বাংলা স্কুল মাঠ থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। মিছিলটি শহরের সদর রোড হয়ে প্রেসক্লাবের সামনে গিয়ে শেষ হয়।
প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারী ফোরামের কেন্দ্রীয় সভাপতি মো. সাইদুল হাসান সেলিম, যুগ্ম মহাসচিব অধ্যক্ষ মো. রফিকুল ইসলাম, সংগঠনের জেলা সহসভাপতি হুমায়ুন কবির, মাইনুল ইসলাম জুয়েল, যুগ্ম সম্পাদক মেহেদী হাসান, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুর রহমান রিপন, সদর উপজেলা সহসভাপতি আবি আব্দুল্লাহ, মনেজা খাতুন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাহানুর বেগম, মাসুমা খানম বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. ইব্রাহীম, ইলিশা ইউসি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মনির উদ্দিন, রাজাপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কবির উদ্দিন খান, সহকারি প্রধান শিক্ষক রিয়াজ উদ্দিন রাজু প্রমুখ।
এসময় বক্তারা বলেন, দীর্ঘ দিন ধরে বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীরা শিক্ষা জাতীয় করণের দাবিতে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছে। তাদেরকে জাতীয় করণ না করায় সরকারি বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত রয়েছে পাঁচ লক্ষ এমপিওভুক্ত শিক্ষক। যাদের হাতে সারাদেশের মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষার ৯৭ শতাংশ দায়িত্ব। তাদেরকে জাতীয় করণ না করে উল্টো বর্তমান বেতন থেকে অতিরিক্ত চাঁদা আরোপ ‘মরার উপর খাঁড়ার ঘা’ স্বরূপ।
তারা আরো বলেন, গত এক মাস আগে শিক্ষা সচিব এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন যে অতিরিক্ত চাঁদা কার্যকর করা হবে না। একটি কুচক্রি মহল আমাদের বেতন থেকে অতিরিক্ত ৪ শতাংশ কর্তনের ব্যাপারে উঠে পরে লেগেছে। তাই আমরা শিক্ষামন্ত্রী, শিক্ষা উপ-মন্ত্রী, শিক্ষা সচিবসহ সংশ্লিষ্ট সকলের কাছে উক্ত আদেশ প্রত্যাহার করে অতিরিক্ত চাঁদার প্রজ্ঞাপন স্থায়ীভাবে বাতিলের জোর দাবি জানাচ্ছি।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা