০২ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১, ২২ শাওয়াল ১৪৪৫
`


জীবননগরে বারোমাসী থাই আম চাষে চমক সজলের

নিজের বারোমাসী আমের বাগানে সজল : নয়া দিগন্ত -

চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার মানিকপুরের এক সময়ের বেকার যুবক সজল এখন জেলার সাড়া জাগানো বারোমাসী থাই আমচাষি। কঠিন মনোবল আর পরিশ্রম তাকে সাফল্য এনে দিয়েছে। সজলের বারোমাসী আম বাগান আশপাশের জেলাগুলোতে ব্যাপক আলোচিত। অসময়ে ভালো ফলন হওয়ায় তার দেখাদেখি এলাকার অনেকেই বাণিজ্যিকভাবে বারোমাসী থাই আম চাষে ঝুঁকে পড়েছেন।
মানিকপুর গ্রামে সজলের বারোমাসী আম বাগানে গিয়ে দেখা যায়, গাছে গাছে প্রচুর মুকুল এসেছে। আবার কোনো কোনো গাছে আমের গুটিও দেখা যাচ্ছে। বাগানের গাছগুলোর বয়স তিন-চার বছর। সজল নিজের আট বিঘা জমিসহ জীবননগর ও মহেশপুর উপজেলায় ৪৩ বিঘা জমিতে থাই আমের পাশাপাশি মাল্টা, পেয়ারা, থাই কুল ও গোলাপ জামের আবাদ করেছেন। বাগানে আড়াই লাখের বেশি বারোমাসী আমের চারা রয়েছে, যা বিক্রি করে প্রায় পাঁচ কোটি টাকা আয় করা সম্ভব বলে দাবি সজল আহমেদের। তার এ বাগান দেখতে প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে চাষি ও উদ্যোক্তারা আসছেন।
আমচাষি সজল আহমেদ জানান, তিন বছর আগে নিজের আট বিঘা জমিতে বাণিজ্যিকভাবে বারোমাসী থাই আমের বাগান গড়ে তোলেন তিনি। পাশাপাশি একই জমিতে গড়ে ওঠা নার্সারিতে উৎপাদিত ফলজ, বনজ, ঔষধি গাছের চারা বিক্রি করে বাড়তি সাফল্য পান। ওই সময় এলাকায় ফুল বাবু নামে পরিচিত এক ব্যক্তির আম বাগান থেকে বারোমাসী আম চাষে আরও বেশি উদ্বুদ্ধ হন তিনি। তার কাছ থেকেই তিনি আম চাষের পদ্ধতি শিখে বাগান তৈরি করেন। চারা লাগানোর এক বছরের মাথায় গাছে গাছে আমের মুকুল আসে এবং আম ধরে। বারোমাসী আম কাঁচা ও পাকা দুই অবস্থায়ই খেতে খুব সুস্বাদু। দেখতে বাহারি ও সুমিষ্টি হওয়ায় তা ক্রেতাদের নজর কাড়ে মুহূর্তেই।
নিজের বেশি জমি না থাকায় সজল তার উপজেলা জীবননগর ও পাশের মহেশপুর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের কৃষকদের জমি লিজ নিয়ে দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনায় বাগানটি গড়ে তুলেছেন। তার বাগানে গাছে গাছে ঝুলছে বারোমাসী থাই জাতের আম। কিছু কিছু গাছের থোকায় থোকায় মুকুল ও গুটি দেখা যাচ্ছে।
সজল তার আম চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে জানান, ভালোভাবে জমি চাষ ও সার প্রয়োগের মাধ্যমে জমি প্রস্তুত করে তোলার পর প্রতিবিঘা জমিতে ১০০টি করে চারা রোপণ করা যায়। চারা রোপণের দুই মাসের মধ্যে গাছে মুকুল দেখা যায় এবং চার মাসের মধ্যে আম পাওয়া যায়। প্রতিটি গাছ থেকে ১৫ কেজি হারে বছরে তিন দফায় আম সংগ্রহ করা যায়। বর্তমানে রাজধানী ঢাকার বাজারে প্রতি কেজি আম ৪০০-৫০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। জমি তৈরি থেকে আম সংগ্রহ করা পর্যন্ত প্রতিবিঘা জমিতে এক লাখ টাকা খরচ হয় এবং তা থেকে প্রায় তিন লাখ টাকা আয় করা সম্ভব। প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আম চাষিরা তার বাগান দেখতে আসেন এবং চারা কিনে নিয়ে যান। তার বাগান দেখে এলাকার অনেক বেকার যুবক বাণিজ্যিকভিত্তিতে থাই আমের বাগান গড়ে তুলছেন। তাদেরকে নানাভাবে পরামর্শ দিয়ে সাহায্য করছেন সজল।
থাই আমের বৈশিষ্ট্য হলো পাকার পরও তা ২০ দিন পর্যন্ত রাখা যায় এবং মিষ্টির পরিমাণ ২৭ গ্রেড। সব সময় পাওয়া যায় বলে একে বারোমাসী আম বলে। চারা লাগানোর পর এক বছরের মধ্যেই পরিপূর্ণভাবে আম পাওয়া যাবে। একবার বাগান করতে পারলে তা থেকে টানা ২০-৩০ বছর ফলন পাওয়া যায়। বর্তমানে সজলের বাগানে ৬০-৭০ হাজার থাই আমের চারা রয়েছে এবং তা বিক্রি করে আয় হবে ৬০-৭০ লাখ টাকা। প্রতিটি চারা ১০০-১৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। বাগানে আমের পাশাপাশি নার্সারিতেও বড় অঙ্কের টাকা আয় হয়।
জীবননগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মুন্সী আব্দুস সালেক বলেন, সজল আহমেদের বাগানে যে জাতের আম উৎপন্ন হচ্ছে তা আমাদের দেশে নতুন। এটি দ্রুত সম্প্রসারণযোগ্য জাতের আম। এ আম খেতে অত্যন্ত সুস্বাদু এবং অনেক দিন রেখে খাওয়া যায়। সজল আহমেদের বাগান দেখে অনেকেই উদ্বুদ্ধ হয়ে নতুন নতুন বাগান গড়ে তুলছেন। আমরা তাদের নানাভাবে সহযোগিতা ও পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি।


আরো সংবাদ



premium cement
বাংলাদেশ-সৌদি আরবের যৌথ উদ্যোগে ইউরিয়া সার কারখানার সম্ভাব্যতা সমীক্ষা সম্পন্ন আগামী ২ বছর উন্নয়নশীল এশীয় অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি ৪.৯ শতাংশ থাকার আশা এডিবি প্রেসিডেন্টের চুয়াডাঙ্গায় আগুনে পুড়ে পানবরজ ছাই মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ, রিমান্ডে নেয়া হবে : ডিবি বৃহস্পতিবার সারা দেশের স্কুল-কলেজ বন্ধ ভূরুঙ্গামারীতে চিকিৎসকের কপাল ফাটিয়ে দিলেন ইউপি সদস্য ‘পঞ্চপল্লীর ঘটনা পাশবিক, এমন যেন আর না ঘটে’ টি২০ বিশ্বকাপের পিচ পৌঁছেছে নিউইয়র্কের নাসাউ কাউন্টি স্টেডিয়ামে হাসপাতালে ভর্তি খালেদা জিয়া কমলাপুর স্টেশনে ট্রেন থেকে লাশ উদ্ধার মোরেলগঞ্জে বৃদ্ধের ফাঁস লাগানো লাশ উদ্ধার

সকল