২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

চীনের সামরিক শক্তি নিয়ে উদ্বেগে নিজের প্রতিরক্ষা বাড়াচ্ছে জাপান

জাপানের তৈরি হেলিকপ্টারবাহী রণতরী ইজুমু। জাপান তাদের এমন দু’টি হেলিকপ্টারবাহী রণতরীকে বিমানবাহী যুদ্ধজাহাজে রূপান্তরিত করছে - ছবি : এএফপি

জাপানের মন্ত্রিসভা তাদের যুদ্ধজাহাজগুলোকে বিমানবাহী যুদ্ধজাহাজে রূপান্তরিত করা এবং ৪৫টি নতুন স্টিলথ বিমান কেনার পরিকল্পনা অনুমোদন করেছে। সদ্য প্রকাশিত প্রতিরক্ষা দিকনির্দেশনায় জানা গেছে, দেশটি বিমান ও নৌ-প্রতিরক্ষা শক্তিশালী করবে। এই অঞ্চলে চীনের বিমান ও নৌ তৎপরতা বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে ‘গভীর উদ্বেগ’ দেখা দেয়ার মধ্যে টোকিও এ পদক্ষেপ নিচ্ছে।
গতকাল মঙ্গলবার এই দিকনির্দেশনা মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত হয়। এতে বিদ্যমান দু’টি হেলিকপ্টারবাহী যুদ্ধজাহাজকে জঙ্গিবিমান ওঠানামার উপযোগী করার কথা এই পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এতে জাহাজ দু’টি কার্যত বিমানবাহী যুদ্ধজাহাজে রূপান্তরিত হবে।

জাপান দশ বছরের পরিকল্পনায় এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপগুলোর আশপাশের প্রতিরক্ষাকে শক্তিশালী করবে। এই অঞ্চলে চীন সামরিক শক্তির সম্প্রসারণ ঘটিয়েছে। এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান মিত্র হিসেবে জাপানকে তার নিজের নিরাপত্তার দায়িত্ব আরো অধিকতর গ্রহণ করতে ট্রাম্প প্রশাসন টোকিওকে চাপ দিচ্ছে।

একই দিন মন্ত্রিসভা যে পাঁচটি পৃথক পরিকল্পনা অনুমোদন করেছে তার মধ্যে জাপান ইতোমধ্যে অর্ডার দেয়া ৪২টি জঙ্গিবিমানের অতিরিক্ত ৪৫টি এফ-৩৫ স্টিলথ বিমান কেনার বিষয় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এ ছাড়া দেশটি যুক্তরাষ্ট্রের স্থলভিত্তিক দু’টি পুরনো ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থাও কিনবে এবং যুক্তরাষ্ট্রের অন্যান্য ক্ষেপণাস্ত্র বাধাদানকারী ক্ষেপণাস্ত্রও সংগ্রহ করবে। এসব সামরিক সরঞ্জাম সংগ্রহে জাপান আগামী পাঁচ বছরে মোট ২৭ দশমিক ৫ ট্রিলিয়ন ইয়েন (২৪ হাজার ৩০০ কোটি ডলার) ব্যয় করবে।

২০১২ সালে শিনজো আবে জাপানের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর দেশটিতে দ্রুত প্রতিরক্ষা ব্যয় বেড়ে যায়। তিনি জাপানকে সামরিক সক্ষম দেশে পরিণত করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। আবে একে ‘স্বাভাবিক রাষ্ট্র’ বলে বর্ণনা করেন। প্রতিরক্ষা দিকনির্দেশনায় বলা হয়, এখনো যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিধর দেশ হিসেবে বহাল রয়েছে। তবে বিভিন্ন জাতির মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা শুরু হয়েছে এবং চীন ও রাশিয়া উভয় আঞ্চলিক ভারসাম্যকে চ্যালেঞ্জ করেছে। আমরা তাদের কৌশলগত প্রতিযোগিতার গুরুত্বকে স্বীকৃতি দিচ্ছি।

২৪৮ মিটার দীর্ঘ হেলিকপ্টারবাহী জাহাজকে বিমানবাহী যুদ্ধজাহাজে রূপান্তরিত করার মাধ্যমে জাপান দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর প্রথম বিমানবাহী যুদ্ধজাহাজ চালু করছে। জাপানে যুদ্ধোত্তর সংবিধানে কেবল আত্মরক্ষামূলক সামরিক বাহিনী রাখার যে প্রতিশ্রুতি ছিল, তা ভঙ্গ করছে বলে সমালোচনা করা হয়েছে। এ ছাড়া জাপান শত্রুর লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার জন্য ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র সংগ্রহ করারও পরিকল্পনা করেছে।


আরো সংবাদ



premium cement