২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

দুটি কিডনি নষ্ট, বাঁচতে চায় জসীম উদ্দীন

দুটি কিডনি নষ্ট, বাঁচতে চায় জসীম উদ্দীন - ছবি - নয়া দিগন্ত

পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন জসীম উদ্দীন। তার উপার্জনের টাকায় চলতো পুরো পরিবার। সুস্থ থাকাকালীন প্রাণ কোম্পানীতে ড্রাইভিংয়ের কাজ করতেন। এখন তার শরীরের দুটি কিডনিই বিকল। গত প্রায় এক বছর ধরে বিছানায় শয্যাশায়ী। প্রতিনিয়তই মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন তিনি। সামান্য ভিটেমাটি ছাড়া যেটুকু জমি ও গবাদিপশু ছিলো সব বিক্রি করে এতোদিন চিকিৎসার খরচ চালিয়েছে।

বর্তমানে টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারছে না। দুটি কিডনি নষ্ট হয়ে যাওয়ার ফলে পরিবারটি অসহায় হয়ে পড়েছে। কিডনি রোগাক্রান্ত জসীম উদ্দীন (৪০) সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের গিরিশনগর গ্রামের মৃত হাছান আলীর ছেলে। জসীম উদ্দীনের ৪ সন্তান। বড় মেয়ে সমুজ আলী স্কুল এন্ড কলেজে ইন্টামিডিয়েটে পড়াশোনা করছে, দ্বিতীয় ছেলে টেংরাটিলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ক্লাস এইটে পড়াশোনা করছে। ছোট্ট দুই ছেলে পড়াশোনা করছে প্রাইমারি স্কুলে। পরিবারে কর্মক্ষম কেউ না থাকায় অসুস্থ হওয়ার পর থেকেই তার পরিবারের আয় উপার্জন বন্ধ রয়েছে। ঋণ করে একদিকে চিকিৎসা খরচ অন্যদিকে সাংসারিক খরচ চালাতে গিয়ে এখন দিশেহারা জসীম উদ্দীনের পরিবার।

বুধবার দুপুরে সরেজমিনে গিরিশনগর গ্রামে জসীম উদ্দীনের বাড়িতে গেলে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন তার স্ত্রী-সন্তান ও স্বজনরা। তার স্ত্রী জাহানারা বেগম বলেন, ‘সপ্তাহে দুইদিন নিতে হয় রক্ত। সেখানেও প্রতি সপ্তাহে খরচ হয় ৫ হাজার ৫০০ টাকা। এছাড়া একদিন পর পর ডায়ালাইসিস করাতে হয়। সেখানেও সপ্তাহে খরচ হয় ১১ হাজার টাকা। এতোদিন চিকিৎসা করানো হলেও খরচ ব্যয়বহুল হওয়ায় টাকার অভাবে এখন আর উন্নত চিকিৎসা করানো যাচ্ছেনা। এখন ঢাকায় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে তার চিকিৎসা চলছে। কি করব ভেবে পাচ্ছিনা।'

জসীম উদ্দীনের বড়ভাই মোহাম্মদ রাজু উদ্দিন বলেন, ‘আমরা ড্রাইভারি করতাম। সবকিছু ঠিকঠাক মতোই চলছিল। এক বছর আগে হঠাৎ করে জসীম উদ্দীনের অসুস্থতা দেখা দেয়। হাসপাতালে বিভিন্ন পরীক্ষা নীরীক্ষার পর ধরা পড়ে তার দুটি কিডনি বিকল। সে অসুস্থ হওয়ার পর থেকেই আমরা আমাদের সাধ্যমতো তার সংসারের খরচ ও চিকিৎসা খরচ চালিয়ে গেছি। করোনার কারণে এখন আমার ড্রাইভিংয়ের কাজও বন্ধ। নিজেই চলতে পারছিনা এখন। চোখের সামনে ভাইটা যন্ত্রণা ভোগ করছে, তার স্ত্রী সন্তানরাও কষ্টে আছে। কিছুই করতে পারছিনা। একমাত্র আল্লাহ ছাড আমাদের আর চাওয়ার মতো জায়গা নাই। সমাজের সুহৃদয়বানরা এগিয়ে এলেই আমার ভাই আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরে পাবে।’

সব মিলিয়ে এখন টাকার অভাবেই জীবন প্রদীপ নিভে যেতে বসেছে অসহায় জসীম উদ্দীনের! একমাত্র সমাজের বিত্তবানরা পাশে দাড়ালেই জসীম উদ্দীনের কিডনি প্রতিস্থাপন করা সম্ভব। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন কিডনি প্রতিস্থাপনের জন্য প্রয়োজন প্রায় ২৫ লাখ টাকা। জসীমের পরিবারের পক্ষে এতো টাকা যোগাড় করা কখনোই সম্ভব না। সমাজের বিত্তবানদের কাছে সাহায্যের জন্য আবেদন জানিয়েছে তার পরিবার।


আরো সংবাদ



premium cement