২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`
৫ ঘন্টা পর অবরোধ প্রত্যাহার

সিলেটে শ্রমিক নেতা খুনের ঘটনায় দুই জন গ্রেফতার

সিলেটে শ্রমিক নেতা খুনের ঘটনায় দুই জন গ্রেফতার - প্রতীকী

সিলেটে শ্রমিক নেতা ইকবাল আহমদ রিপন হত্যার ঘটনায় পাঁচঘন্ট সড়ক অবরোধের পর অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নিয়েছেন ট্যাংকলরী শ্রমিকরা। এ ঘটনায় দক্ষিণ সুরমা থানায় ২০ জনকে আসামি করে মামলা করেছেন নিহতের স্ত্রী ফারজানা আক্তার। পুলিশ নোমান ও সাদ্দাম নামের দুইজনকে গ্রেপ্তারও করেছে ।
শুক্রবার রাতে দক্ষিণ সুরমার বাবনা পয়েন্ট এলাকায় ট্যাংক লরি শ্রমিক ইউনিয়ন সিলেট বিভাগীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন রিপনকে খুন করে দুর্বৃত্তরা।

রিপনের খুনিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে শনিবার সকাল থেকে নগরীর বিভিন্ন পয়েন্টে ট্রাক ও ট্যাংক লরি রেখে সড়ক অবরোধ করেন বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা। এ সময় সিলেট থেকে বিভিন্ন রুটে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। দেখা দেয় তীব্র যানজট। টায়ার জ্বালিয়ে ও মিছিল করে দোষীদের গ্রেপ্তার দাবি করেন তারা।

শনিবার দুপুর দেড়টার দিকে সিলেট মহানগর পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক নেতাদের আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে শ্রমিকরা অবরোধ প্রত্যাহার করে নেন। ট্যাংকলরী শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি শাহজাহান ভূঁইয়া জানান, সিলেট জেলা ট্যাংকলরী শ্রমিক ইউনিয়ন সেক্রেটারি ইকবাল হোসেন রিপন হত্যার ঘটনায় আজ রোববার (১২ জুলাই) সারাদেশে শ্রমিকরা কর্মবিরতি পালন করবেন। এছাড়া ৪৮ ঘণ্টা সিলেটে কর্মসূচি পালন করা হবে।

হত্যাকান্ডের নেপথ্যে বাবনা পয়েন্টস্থ রেলওয়ের সাধুরবাজার সংলগ্ন যমুনা ওয়েল ডিপোর পাশে রয়েছে ট্যাংকলরির সদস্য মো. ইউনুস মিয়ার তেল বিক্রির একটি দোকান। গত ২৭ রমজান তেলের লরি থেকে দ্বিতীয় দফা তেল বিক্রিকালে বরইকান্দি এলাকার এজাজুল, রিমু, মুন্নার নেতেৃত্বে ৭/৮জন সন্ত্রাসী অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে প্রথমে টাকা দাবি করে। টাকা না দেওয়ায় তারা ইউনুস মিয়া ও তার শ্রমিকদের উপর হামলা চালায়। এক পর্যায়ে দোকানের ক্যাশে থাকা তেল বিক্রির প্রায় ৩ লক্ষ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় ইউনুস মিয়া বাদি হয়ে দক্ষিণ সুরমা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। উক্ত ঘটনায় বিভাগীয় ট্যাংক লরি শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল আহমদ রিপন জোরালো পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। তিনি আসামীদের গ্রেফতার করতে পুলিশ প্রশাসনকে বার বার অনুরোধ করলেও আসামীদেরকে গ্রেফতার করা হয়নি। এনিয়ে শ্রমিকদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিলে ঈদ ও করোনার জন্য আন্দোলনের কোন কর্মসূচি দেওয়া হয়নি। শ্রমিক নেতারা অভিযোগ করে বলেন, আসামীরা প্রকাশ্যে ঘুরাফেরা করলেও পুলিশকে অবগত করার পরও কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। শুক্রবার রাতে এজাজুল, রিমু, মুন্নার নেতেৃত্বে ১০/১২জন সন্ত্রাসী রিপনের উপর হামলা করে। ধারালো চাকুর আঘাতে গুরুতর আহত হয়ে রিপন মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। তার সাথে থাকা বাবলা এগিয়ে এলে তিনিও গুরুতর আহত হন। তাদের আর্তচিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে তাদেরকে উদ্ধার করে তাৎক্ষনিক ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে যাওয়া মাত্র কর্তব্যরত ডাক্তার রিপনকে মৃত ঘোষণা করেন। শ্রমিক নেতা রিপন নিহত হওয়ার সংবাদ শুনে শ্রমিকরা রাতেই উত্তেজিত হয়ে প্রথমে বাবনা পয়েন্টে সড়ক অবরোধ করেন। পরে রাত প্রায় ১১টার দিকে চন্ডিপুল পয়েন্টে গিয়ে সিলেট-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন।

বিভাগীয় ট্যাংক লরি শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. মনির হোসেন ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক আমির আলীসহ শ্রমিক নেতারা অভিযোগ করে বলেন, ছিনতাইয়ের ঘটনার পর যদি সন্ত্রাসীদেরকে পুলিশ গ্রেফতার করতো তাহলে আজ এই খুনের ঘটনা ঘটতোনা। দক্ষিণ সুরমা থানার অফিসার ইনচার্জ খাইরুল ফজলকে বার বার বলার পরও তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়নি। পুলিশের সহযোগিতায় সেই ছিনতাইকারীরা নানা অপকর্ম করছে প্রতিদিন।

 


আরো সংবাদ



premium cement