২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

১৯ বছর কারাভোগের পর নির্দোষ প্রমাণিত ১২৭ ভারতীয় মুসলমান

১৯ বছর কারাভোগের পর অভিযোগ থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন ১২৭ ভারতীয় মুসলমান। - প্রতীকী ছবি

সন্ত্রাসবাদে জড়িত থাকার মিথ্যা মামলায় ১৯ বছর কারাভোগের পর অভিযোগ থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন ১২৭ ভারতীয় মুসলমান। তাদের অনেকে আবার এ সময়ের মধ্যে মারাও গেছেন।

২০০১ সালের ২৬ ডিসেম্বর রাতে মোহাম্মদ আব্দুল হাই ভারতের উত্তর-পশ্চিমের রাজ্য রাজস্থানের যোধপুর থেকে একটি ট্রেনে চড়ে গুজরাটের সুরাটে যাচ্ছিলেন ‘মুসলিম শিক্ষা’ বিষয়ক একটি তিন দিনের সেমিনারে অংশ নেয়ার জন্য। ওই সেমিনারটি আয়োজন করেছিল ‘অল ইন্ডিয়া মাইনরিটি এড়ুকেশন বোর্ড’।

তখন মোহাম্মদ আব্দুল হাই যোধপুরের জয় নারায়ণ ভিয়াস বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সহযোগী অধ্যাপক ছিলেন।

পরের দিন এ সেমিনারটি একটি বন্ধ সিনেমা হলে (রাজেশ্রি সিনেমা হল) অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এ অনুষ্ঠানটিতে মোহাম্মদ আব্দুল হাই এবং আরো ১২০ ব্যক্তি অংশগ্রহণ করেছিলেন। পরের দিন সকাল ১১টায় পুলিশ সুরাটের এ বন্ধ সিনেমা হলে উপস্থিত হয়।

পুলিশ অভিযোগ করেছিল, নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন স্টুডেন্টস ইসলামিক মুভমেন্ট অফ ইন্ডিয়া (সিমি) তাদের প্রচার-প্রসারে সেমিনারটির আয়োজন করেছে। এ অভিযোগে সেমিনারে অংশগ্রহণ করা সকল ব্যক্তিকে পুলিশ কড়া সন্ত্রাস বিরোধী আইন- অবৈধ কর্মকাণ্ড (প্রতিরোধ) আইনে (ইউএপিএ) গ্রেফতার করে। তাদেরকে অভিযুক্তও করা হয়।

মোট ১২৭ মুসলিমকে গ্রেফতার করা হয়েছিল
রোববার সুরাট আদালত এ সন্ত্রাস বিরোধী আইনের মামলায় গ্রেফতারকৃত সকল ব্যক্তিকে খালাস দিয়েছে ১৯ বছর পর।
কিন্তু, এ মামলার দীর্ঘ শুনানির মধ্যেই পাঁচ অভিযুক্ত ইন্তেকাল করেছেন।

ভারতীয় কর্তৃপক্ষ সিমিকে (ভারতীয় ইসলামী ছাত্র আন্দোলন) বিভিন্ন বোমা হামলার জন্য দায়ী করেছে এবং তাদের বিরুদ্ধে আরো অভিযোগ তারা পাকিস্তানের বিভিন্ন সংগঠনের সাথে সম্পর্ক রাখে।

কিন্তু বিভিন্ন ইসলামী সংগঠনগুলো বলছে, ‘ভারতের মুসলিমরা শুধুমাত্র তাদের ‘ইসলামী জীবনব্যবস্থার’ তত্ত্ব প্রচার করে। তবুও তাদের শত শত সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’

২০০১ সালে সিমিকে ভারত সরকার নিষিদ্ধ করে যুক্তরাষ্ট্রে ৯/১১-এর হমলার কারণ দেখিয়ে।

৬ মার্চ সুরাট আদালত আদেশ দিয়েছে, প্রসিকিউশনে (মামলার তদন্তে) অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোনো সুনির্দিষ্ট ও সন্তোষজনক প্রমাণ পাওয়া যায়নি। যার মাধ্যমে এটা প্রমাণ হয় না যে, তারা সিমির সদস্য বা তারা সেখানে সমবেত হয়েছিল এ সংগঠনটির কার্যক্রম এগিয়ে নিতে।

গত কয়েক দশকে অনেক ভারতীয় মুসলিম সন্ত্রাসবাদে জড়িত থাকার মিথ্যা মামলায় অভিযুক্ত। এসব মামলায় অভিযুক্তদের বেশির ভাগই খালাস পেয়েছেন। কিন্তু তাদের দীর্ঘদিন ধরে আদালতের শুনানি ও জেলের চক্করের মধ্যে পড়তে হয়েছে।

সূত্র : দ্য ইসলামিক ইনফরমেশন


আরো সংবাদ



premium cement