২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

কৃষকদের দিল্লি চলো অভিযানে পুলিশের টিয়ার গ্যাস

কৃষকদের দিল্লি চলো অভিযানে পুলিশের টিয়ার গ্যাস - ছবি : সংগৃহীত

দিল্লি পুলিশের ধমকে-চমকে পিছু না হটে দিল্লি অভিমুখে রওনা দিয়েছেন পঞ্জাবের প্রতিবাদী কৃষকেরা। ১৪৪ ধারা, জল কামান, টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ। কোনো কিছু করেই ‘দিল্লি চলো’ অভিযান থেকে কৃষকদের বিরত করতে পারেনি পুলিশ। দিল্লি পুলিশের পাশাপাশি হরিয়ানা প্রশাসন নানা ভাবে চেষ্টা করছে দানা বাঁধা কৃষক বিক্ষোভকে প্রতিহত করতে। কিন্তু, এখনও পর্যন্ত সবরকম চেষ্টাই ব্যার্থ। হরিয়ানা পুলিশের বাধায় বৃহস্পতিবার রাতে জাতীয় সড়কের উপর পানিপথ টোলপ্লাজার সামনে অবস্থান করেন কয়েক হাজার কৃষক। শুক্রবার সকালের আলো ফুটতেই ফের তারা সব বাধা উপেক্ষা করে দিল্লি অভিমুখে রওনা দিয়েছেন।

প্রতিবাদী কৃষকদের মরিয়া মনোভাবে শুক্রবার সকালে নিরাপত্তা আরো জোরদার করা হয়েছে। হরিয়ানা ও উত্তরপ্রদেশের সাথে দিল্লির একাধিক সীমানায় (রোহতক-ঝজ্জর বর্ডার, দিল্লি-হরিয়ানার সীমানা সিঙ্ঘউ বর্ডার), দিল্লি-গুরুগ্রাম ও দিল্লি-জম্মু হাইওয়ের করনালে, কর্ণ লেকের কাছে প্রচুর পরিমাণে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। দিল্লি পুলিশের খবর অনুযায়ী, শুক্রবার ৫০ হাজারের উপর কৃষক রাজধানীতে ঢোকার চেষ্টা করবে।

বৃহস্পতিবার দিল্লি অভিযানের প্রথম দিনে হরিয়ানা পুলিশের সাথে খণ্ডযুদ্ধে একাধিক প্রতিবাদী জখম হয়েছেন। বেশ কয়েক জন পুলিশকর্মীও জখম হন। পঞ্জাবের পটিয়ালা ও হরিয়ানার আম্বালার সংযোগস্থলে, পঞ্জাব-হরিয়ানা সীমানায় বৃহস্পতিবার ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। ব্রিজের উপর দেওয়া ব্যারিকেড ভেঙে প্রতিবাদীরা এগোনোর চেষ্টা করলে হরিয়ানা পুলিশ বাধা দেয়ে। ব্রিজ থেকে ব্যারিকেড তুলে নীচে ফেলে দেন কৃষকরা। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার চরম উত্তজেনার আবহ তৈরি হয়। হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রীর সাথে বাকযুদ্ধে জড়িয়ে পড়েন পঞ্জবের মুখ্যমন্ত্রী। অরবিন্দ কেজরিওয়াল, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের অনেকেই হরিয়ানা পুলিশের ভূমিকার নিন্দা করেন।

দিল্লি পুলিশের নির্দেশের প্রেক্ষিতে মেট্রো পরিষেবা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। দিল্লি মেট্রো রেল করপোরেশন জানিয়েছে, এনসিআর থেকে দিল্লির সর্বত্র শুক্রবার মেট্রো পরিষেবা বন্ধ থাকবে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত মেট্রো চলবে না। মেট্রো কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, দিল্লি পুলিশের পরামর্শেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শনিবার এনসিআর থেকে দিল্লির সর্বত্র মেট্রো পরিষেবা স্বাভাবিক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। মেট্রো কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, নিরাপত্তার কারণেই এই সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে।

প্রতিবাদীদের ছত্রভঙ্গ করতে শুক্রবার সকালে হরিয়ানা-দিল্লি সীমানা সিঙ্ঘুতে টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে পুলিশ। দেখুন সে ছবি।

বৃহস্পতিবারের মতোই শুক্রবার সকাল থেকে দিল্লি-গুরুগ্রাম সীমানায় প্রতিটি গাড়ি দাঁড় করিয়ে তল্লাশি চলছে। যার জেরে ব্যাপক যানজট সৃষ্টি হয়। দিল্লি পুলিশের পাশাপাশি দিল্লি-গুরুগ্রাম সীমানায় সিআইএসএফও নিয়োগ করা হয়েছে।

কৃষকদের দিল্লি চলো অভিযানকে কেন্দ্র করে বাকযুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছেন পঞ্জাব ও হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী। হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী মনোহর লাল খট্টরের সমালোচনা করে পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিং বলেন, দিল্লি অভিমুখী কৃষকদের যে ভাবে থামানো হয়েছে, তা সম্পূর্ণ অগণতান্ত্রিক এবং সংবিধান বিরোধী।

ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের নতুন কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে অল ইন্ডিয়া কিষান সঙ্ঘ কোঅর্ডিনেশন কমিটি, রাষ্ট্রীয় কিষান মহাসঙ্ঘ, ভারতীয় কিষান ইউনিয়নের একাধিক শাখা মিলিত ভাবে সংযুক্ত কিষান জোট গড়ে তুলেছে। এই দাবি নিয়েই পঞ্জাবের কৃষকরা দিল্লি অভিযানের ডাক দিয়েছেন।


আরো সংবাদ



premium cement