২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

সূর্যোদয় নয়, চন্দ্রের অস্তগমন

- ছবি : সংগৃহীত

আমি ভ্যাক্সোতে। সুইডেনের একটি পৌরসভা। ভ্যাক্সোর পূর্বে বাল্টিক সাগর, পশ্চিমে উত্তর সাগর, উত্তরে ইয়ানশপিং ও দক্ষিণে সুইডেনের তৃতীয় বৃহত্তর শহর মালমো। স্থানের নাম জটিল। ভাষাও জটিল। জীবন-যাপন সরল। সহজ হওয়ার কারণ, মানুষ কম। বিশ্বের বাছাইকৃত নির্ভেজাল খাবার নিয়ে সুপারমল। সুইডেন আয়তনে বাংলাদেশের চেয়ে তিনগুণ বড় হলেও লোকসংখ্যা প্রায় ঢাকা শহরের সমান। আমাদের দূরপাল্লার বাসের চেয়ে দ্বিগুণ লম্বা একেকটি বাস। দু-চারজন যাত্রী নিয়ে রাত-দিন ঘোরাঘুরি করে। রাত-দিন ঘুরলেও ধাক্কা লাগে না। একজন আরেকজনের পা মাড়ায় না। পকেটে পয়সা রাখে না- পয়সার নেশায় ছুটে না অন্ধ হয়ে। জমি ও বাড়ির সীমানা নিয়েও বিরোধ নেই। সব কিছুই সরল। ওয়ার্ল্ড হ্যাপিনেস তালিকায় বারবার শীর্ষে উঠে আসে যে সরল দেশের নাম। দেশটি দেখার ইচ্ছা অনেক দিনের। আমরা জটিল দেশের মানুষ। জটিলতা আমাদের সঙ্গ ছাড়ে না। জটিল মন নিয়ে সরল দেশে ঢুকতে গিয়েও পদে পদে জটিলতা।

লন্ডনের ‘স্ট্যানস্টেড’ থেকে সুইডেনের ‘ভ্যাক্সো’ কী বিদঘুটে নাম। অনিক ও আনিকা আমার দুই নাতি-নাতনী। সুইডেন যাত্রার আগে নানার নিরাপদ ভ্রমণের জন্য ইউটিউব ছেড়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা প্রশিক্ষণ। ‘লন্ডন থেকে সুইডেন’ বিমানের নতুন লাইনের নাম Stansted to Vaxjo. মার্চ ২০২২ থেকে লাইনটি চালু হয়েছে। আন্তর্জাতিক ভ্রমণ এমনিতেই জটিল। সাথে করোনাকালের পর থেকে যোগ হয়েছে করোনা নেগেটিভ প্রত্যয়নপত্রসহ টিকার সার্টিফিকেট। এ অবস্থায় আত্মভোলা ও ইংরেজি না জানা নানাকে নিয়ে নাতি-নাতনীর দুশ্চিন্তার অন্ত নেই। ঢাকা টু হিথ্রো ভ্রমণের বিরূপ অভিজ্ঞতা থেকে ভ্রমণের দুশ্চিন্তাটা আরো বেড়ে যায়। কারো সাহায্য ছাড়া সীমানা পার হওয়ার নাম শুনলেই আমার পিলে চমকে ওঠে। আমার অবস্থা দেখে আনিকা সফরসঙ্গী হতে রাজি হয়। রাজি হয় আমার সাথে নিশীথ সূর্যের দেশ নরওয়ে যেতেও। সময় মতো ছুটি পায়নি। ওই দিকে সুইডেন প্রবাসী মল্লিকা অনলাইনে ১৭ এপ্রিল সুইডেনের টিকিট করে ফেলেছে।

দুই ঘণ্টার জার্নি। ঢাকা টু কাঠমাণ্ডু কসমেটিক বিমানের মতো ছোট্ট বিমান। বিমানে ফ্রি খানা-পিনার ব্যবস্থা নেই- নেই বেল্টে মালামাল নেয়ার সুযোগও। গলায় ঝুলানো একটা কাঁধব্যাগ, টেনে নেয়া একটা ট্রলিব্যাগ ও শীতবস্ত্রবাহী একটি হাতব্যাগ। ব্যবহৃত ল্যাপটপ সাথে নিয়েছি লেখালেখির জন্য। ল্যাপটপের সাথে বাংলা কি-বোর্ড দরকার, তৎসঙ্গে মাউস, চার্জার লাগবেই। কাঁধব্যাগে থাকবে পাসপোর্ট, টিকিট, টিকার সনদ ও ডলার পাউন্ড। সাবধান, কাঁধব্যাগটি ভুলেও যেন হাতছাড়া না হয়। ট্রলিব্যাগে মল্লিকার জন্য পাঠানো দ্রব্যাদি। খোলার দরকার হবে না ট্রলিব্যাগও। জানতে চাইলে বলবেন, এতে ড্রাইফুডসহ কাপড়-চোপড় ছাড়া অন্য কিছু নেই। সন্দেহের তালিকায় হাতব্যাগ। হাতব্যাগে ল্যাপটপ। ল্যাপটপ ইলেকট্রনিক দ্রব্য, দ্বিতীয়ত, ল্যাপটপের ভেতরে করেই কি-না নিষিদ্ধ আইটেম আনানেয়া হয়। হাতব্যাগে আরো আছে ওষুধের প্যাকেট, ওভার কোট, বই ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি। তিন ব্যাগের সাথে লিখে নিই দুই মেয়ের ঠিকানাসহ ফোন নম্বরও। ঘণ্টা তিনেক প্রশিক্ষণ শেষে চার ঘণ্টা হাতে রেখে রওনা হই বিমানবন্দর। টিকিটসহ সিট নয় হাতে। জেনে গেছি বিমানের জেটি নম্বরও। চিন্তা শেষ। মনে মনে বলি, ‘সব জানাশোনা, তার পরও যেহেতু আমার আই পাসপোর্ট এবং যেহেতু সাবেক পাসপোর্ট ভর্তি নানা দেশের সিল সেহেতু আমাকে আটকায় কোন শালা! এক ঘণ্টা আগেই জেটির মুখে বসে থাকব।’

আমাকে নিয়ে হেনা ও আনিকা দু’জনই বন্দরে প্রবেশ করে। বন্দরে প্রবেশ করেই বন্দরের ওয়াইফাই নম্বর জেনে আমার মোবাইলে সংযোগ করে। যেহেতু টিকিট বোডিংকার্ড আগেই নেয়া ছিল সেহেতু মালামাল স্ক্যান করে এখন শুধু ইমিগ্রেশন পার হওয়া। স্ক্যানিং এলাকায় প্রবেশ পথে আটকে দেয় টার্নস্টাইল গেট। টার্নস্টাইল গেটের বারকোড নম্বরের জন্য লম্বা লাইন।

বারকোড নম্বর নিয়ে আনিকার হাত থেকে নিজের হাতে ট্রলির হ্যান্ডেল ধরেই আমার একলা শুরু। সামনেই স্ক্যানিং। ভিন্ন ভিন্ন বাস্কেটে ব্যাগ, মোবাইল ঘড়ি, চশমা, কোমরের বেল্ট, জুতা, পরিধেয় মোটা বস্ত্র, মানিব্যাগসহ একদিক দিয়ে প্রবেশ করে স্ক্যানিং হয়ে অপর দিক দিয়ে বের হয়। মালামাল স্ক্যানিং মেশিনে দিয়েই দাঁড়াতে হয় বডি স্ক্যানিংয়ের জন্য। মহিলাদের জন্য মহিলা এবং পুরুষদের জন্য পুরুষ স্ক্যানার। শরীরের কোনো অংশই স্ক্যান করতে বাকি রাখেন না। বডি স্ক্যানিং শেষ করে স্ক্যানকৃত মালামাল সংগ্রহ করতে হয়। বডিস্ক্যান শেষ করে ওই পাশে গিয়ে দেখি, আমার মালামাল ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে। মালামালের মধ্যে হাতব্যাগ নেই। যখন হাতব্যাগ খুঁজি, তখন দেখতে পাই, হাতব্যাগের মালামাল খোলা অবস্থায় স্ক্যান মেশিন থেকে বের হয়ে এদিক-ওদিক ছড়িয়ে পড়ছে। হেনা আমাকে আগেই বলে দিয়েছিল, হাতব্যাগ স্ক্যান করার আগে ল্যাপটপ বের করে আলাদা স্ক্যান করাবেন। আমি ঝামেলা মনে করে তা করাইনি। ল্যাপটপসহ হাতব্যাগ স্ক্যানিং হওয়ার পর ‘স্ক্যানিং চালিকা’ হাতব্যাগটি নিয়ে যায়। মালামাল খুলে পুনরায় স্ক্যানিং মেশিনে দেয়ার বিষয়টি আমি জানতাম না। আমি মালামাল কুড়ানোসহ ল্যাপটপটি হাতে নিতে গেলেই মহিলা ল্যাপটপ সম্পর্কে প্রশ্ন করে। আমি বুঝে না বুঝে-
-This is my old Laptop, I am a writer, I have many books.

এটুকু বলার পরই আমার ইংরেজি ভাষার চালান ফুরিয়ে যায়। এরপর মহিলার একটা প্রশ্নও বুঝিনি, উত্তরও দিইনি। পরে মহিলা আমার পাসপোর্ট চায়। পাসপোর্ট হাতে করে কোথায় যেন চলে যায়। মিনিট ১৫ পরে মহিলা একজন পুরুষ অফিসার সাথে নিয়ে আসেন। অফিসার চারটি পাসপোর্ট হাতে করে আমাকে ইন্টারোগেশন শুরু করেন।

আমার নতুন-পুরাতন পাসপোর্টের মধ্যে যে কয়েকটা গরমিল ছিল সে কয়েকটার মধ্যে বয়স, নাম-ঠিকানা ও মেয়াদকাল। ভার্চুয়াল বিশ্বে একজন মানুষ থেকে আরেকজন মানুষকে আলাদা করার জন্য যে কয়টা পৃথক বৈশিষ্ট্য রয়েছে সে কয়টির মধ্যে জন্ম তারিখ, আঙুলের ছাপ ও নাম-ঠিকানা অন্যতম। আমাদের যে সময়ে ও পরিবেশে জন্ম সে সময়ে ও পরিবেশে বয়স লিখে রাখার নিয়ম ছিল না। আধুনিক শিক্ষা নেয়ার পর সন্তানদের বেলায় নিয়ম রক্ষা করতে পারিনি আমিও। স্কুলে ভর্তি হওয়ার সময় শিক্ষক অনুমান করে যা লিখতেন সেটাই আমাদের বয়স। প্রথম পাসপোর্ট করার সময় ভুলে গিয়েছিলাম সেই বয়সটাও। নামের আগে ‘মোহাম্মদ’ শব্দটি কখনো লিখেছি, কখনো লেখা হয়নি। স্থায়ী ঠিকানায় একবার নিজের, আবার বাপ-দাদার বাড়ির ঠিকানা লেখা রয়েছে। ইন্টারোগেশনকালে গরমিলের বিষয়গুলো মাথায় ঢুকতে শুরু করে।

ইংরেজিতে আমার যে মূলধন আছে সে মূলধন দিয়ে গরমিলের বিষয়গুলো উত্তরণের চেষ্টা করি। বলি-
-My old and expired passport.

এ কথা বলার পর, ইন্সপেক্টর আমার সামনে তৃতীয় পাসপোর্টটি মেলে ধরেন। চোখের সামনে দেখতে পাই তৃতীয় পাসপোর্টের তৃতীয় পৃষ্ঠায় ‘expired date 26 JUN 2023.’ লা-জবাব। আগের পাসপোর্টের মেয়াদ থাকতেই তা বাতিল না করে নতুন পাসপোর্ট ইস্যু করার কারণ কী? এর ব্যাখ্যা আমার জানা নেই। নিরুপায় হয়ে হেনার কাছে ফোন করি। ফোন ইন্সপেক্টরের হাতে ধরিয়ে দিই। এসব ভুলের বিষয় হেনাও জানে। ইন্সপেক্টরের সাথে যখন হেনার কথা হয় তখন আমি পাথরের মূর্তির মতো দাঁড়িয়ে রই। মিনিট পাঁচেক কথোপকথনের পর সহাস্যে ‘Sorry’ বলে পাসপোর্ট ফিরিয়ে দিয়ে পথ দেখিয়ে দেয়।

এসব করতে গিয়ে গলা শুকিয়ে যায়। প্রচণ্ড পিপাসা। গলা ভিজানো ছাড়া কথা বলাই মুশকিল। ৮৫ নং জেটির সন্ধানে ট্রলি টানতে টানতে এক বৃদ্ধ পুলিশের কাছে যাই। কাছে গিয়ে আমাদের চিরাচরিত ইংরেজিতে-
- Excuse me, where is 85 number gate?
উত্তর দুর্বোধ্য। দুর্বোধ্য উত্তরের কিছুই না বুঝে হেনাকে ফোন করে
- বুড়া পুলিশটায় কি বলে, বুঝে আমাকে বুঝিয়ে দাও।
- আব্বা, পুলিশ বুড়া নয়, ব্রিটিশদের চেহারাই এমন। পুলিশ বলছে, ‘গেট বন্ধ। বিমান আসতে দেরি হবে।’ আপনি ইচ্ছে করলে কিছু খেয়ে নিতে পারেন।

এয়ারপোর্টে কয়েক শ’ দোকান। আমার দরকার পানি। ইমিগ্রেশন পার হওয়ার পর রঙিন পানীয় পাওয়া যত সহজ সাদা পানি পাওয়া তত সহজ নয়। অনেক চেষ্টার পর পাই বরফমিশ্রিত পানি যা আমার জন্য বারণ। শুধু গলা ভিজিয়ে বসে থাকি। নির্ধারিত সময়ের দুই ঘণ্টা পর জেটির দরজা খোলে। বিমান ভূমি ত্যাগ করার কিছুক্ষণ পরই নানা রকম মুখরোচক খাবারসহ ড্রিংকস বিক্রি শুরু করে। লেনদেন সব কার্ডে। ইচ্ছা করছিল কোক পান করে পিপাসা দূর করতে। পকেটে ছিল ডলার ও পাউন্ড। কার্ড না থাকায় পানের ইচ্ছাও পূরণ হয়নি।

ভ্যাক্সো ছোট্ট এয়ারপোর্ট। মাঠেই থামে বিমান। বিমানের গেট খোলার পর খাড়া সিঁড়ি বেয়ে নিচে নামতে হয়। সিঁড়ির হাতলে না ধরে নামতে গেলে পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা। ট্রলিব্যাগ সিঁড়ি দিয়ে টেনে নামানো যায় না। দুই ব্যাগ এক হাতে নেয়াও সম্ভব নয়। পেছনের যাত্রীরা নামার জন্য তাগিদ দিচ্ছে। কী করি! মরিয়া হয়ে দুই ব্যাগ ডান হাতে নিয়ে বাম হাতে সিঁড়ির হাতল ধরে নামতে নামতে ভাবি, এই বুঝি হুড়মুড় করে পড়লাম।

মল্লিকার পরামর্শে পুরনো তিনটি পাসপোর্ট আলাদা রেখেছিলাম। ইমিগ্রেশন অফিসারের হাতে latest passport-টি দিয়ে দাঁড়িয়ে রই। মহিলা ইমিগ্রেশন অফিসার। মহিলাও আটকে দেয় latest passport। পাসপোর্ট খুলে একবার আমার দিকে চায়, আবার কম্পিউটারের দিকে চায়। সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে পাসপোর্টের স্বাক্ষরের সাথে মিলায়। মনে মনে বলি, ‘আমরা জটিল দেশের মানুষ। আগের ডাটার সাথে নতুন ডাটা মিলবে না। ভিসা সঠিক। প্রয়োজনে বাংলাদেশের সুইডেন এম্বাসিতে ফোন করতে পারেন।’ মহিলা অফিসার সাহায্য চায় পাশের অফিসারের কাছে। বিলম্ব দেখে ম্যাডামের কাছে জানতে চাই, ‘Any problem? ‘No problem, problem is in our computer’ বলেই passport-এর উপর ‘VAXJO FLYGPLATS’ সিল বসিয়ে বহির্গমন দরজা দেখিয়ে দেয়।

ভাক্সজু বিমানবন্দরে অবতরণ করার আগেই দিনের আলো শেষ। ইমিগ্রেশনের বাইরে এসে বুঝতে পারি শীতের দেশ। মল্লিকা ও নাঈম বাইরে প্রস্তুত। রাস্তা পার হতে গিয়ে দ্বন্দ্বে পড়ে যাই। আমাকে ধরে ফেলে মল্লিকা-
-আব্বা ডানদিক নয়, বামদিক দেখে রাস্তা পার হোন।
-কারণ?
-এ দেশ ব্রিটিশশাসিত নয়। ব্রিটিশশাসিত দেশ ছাড়া সবাই রাস্তার ডান পাশ দিয়ে গাড়ি চালায়।
ছিমছাম রাস্তা। মানুষ নেই, নেই যানবাহনও। বৃষ্টির পর রাস্তা যেরকম পরিচ্ছন্ন হয় সেরকম পরিচ্ছন্ন রাস্তা। কিছুক্ষণ পরপর দু’য়েকটা বাড়ি। মহল্লার নাম টেলিবরি। যেখানে এসে গাড়ি থামে সেটা বাড়ি নয়, অ্যাপার্টমেন্ট। চার তলায় দুই বেড, কিচেন, ডাইনিং, ড্রয়িং, বারান্দা, বাথরুম, ড্রেসিংসহ অত্যাধুনিক ফিটিংস। বাসায় প্রবেশ করতেই ডাক পড়ে ডাইনিং টেবিলে। আমার পছন্দের সব্জি করলা ভাজি, কচুর মুখি দিয়ে চিংড়ি, গোশত ও ডাল দিয়ে খাওয়া শেষ করতেই ঘুমের ঘর দেখিয়ে দেয়। যখন ঘুম ভাঙে তখন ভোর ৬টা। বাংলাদেশ সময় সকাল ১০টা। ভাবছিলাম, সময়ের ব্যবধান বাড়বে। বাড়েনি, কমেছে এক ঘণ্টা। কারণ, লন্ডন থেকে সুইডেন গ্রিনউইচ মানের এক ঘণ্টা এগিয়ে। বারান্দায় দাঁড়িয়ে সুইডেনের আকাশের দিকে তাকাই। মেঘমুক্ত নীল আকাশ। বনের ভেতর থেকে সোনার থালার মতো সূর্যোদয় দেখে-
- মল্লিকা দেখে যাও, সুইডেনের পূর্বাকাশে আমার দেখা প্রথম সূর্যোদয়।
- আব্বা ভুল করছেন, এটা সূর্যোদয় নয়, চন্দ্রের অস্তগমন এবং পূর্বাকাশও নয় পশ্চিমাকাশ।
বিস্ময়পূর্ণ দৃষ্টি নিয়ে দেখতে না দেখতেই বনের আড়ালে হারিয়ে যায় চাঁদটি।

ঘরের বাইরে বেশ শীত। শীতের কাপড় পরে বসতেই দুঃস্বপ্নের মতো সামনে ভেসে ওঠে স্ট্যানস্টেডের অফিসারের ভয়াল চেহারাসহ আমার অসহায় অবস্থার কথা। পাসপোর্টের সমস্যার যে সমাধান সিনিয়র আইনজীবী হয়ে দিতে পারিনি সে সমাধান হেনা কিভাবে দিয়েছিল জানতে ইচ্ছে করে। ফোন করে জানতে পারি তাদের নিম্নরূপ কথোপকথনও।
IO : Hi! Your father is with us. He has four passports with him and we would like to know, why?
Hena : Hi! One is his latest passport and others are his old passports.
IO : But why he has his old passports with him?
Hena : My father came to England two times before. But because he has changed some informations in his new passport, so that old information may not match with the information in your system. He have all the passports, just in case if you want to see the old VISAs.
IO : I see. But one of his old passports is still valid for another one year. So, why he has another new passport?
Hena : His latest passport is e-passport and the authority did not cancel the old on. So, my father thought it’s better to keep all the passports together, just in case it is necessary.
IO : Allright, I understand now. Thank you.
Hena : You are welcome.

লেখক : আইনজীবী ও কথাসাহিত্যিক
E-mail : adv.zainulabedin@gmail.com


আরো সংবাদ



premium cement