০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`


দিল্লি রায়ট : পুলিশের তদন্ত নিয়ে জনমনে প্রশ্ন

দিল্লি রায়ট : পুলিশের তদন্ত নিয়ে জনমনে প্রশ্ন - ছবি : নয়া দিগন্ত

আমরা জানি, ভারতের বিপুলসংখ্যক মানুষ মোদি সরকারের ‘সিটিজেনশিপ অ্যামেন্ডমেন্ট অ্যাক্ট (সিএএ), ন্যাশনাল রেজিস্টার অব সিটিজেনস (এনআরসি) ও ন্যাশনাল পপুলেশন রেজিস্টার (এনপিআর)-এর বিরুদ্ধে অব্যাহতভাবে আন্দোলন করে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে এটি ‘অ্যান্টি-সিএএ-এনআরসি-এনপিআর মুভমেন্ট’ নামে পরিচিতি লাভ করেছে। এই আন্দোলনকে কেন্দ্র করে গত ফেব্রুয়ারিতে যখন উত্তর-পূর্ব দিল্লিতে বেশ কয়েক দিন ধরে অব্যাহত বিক্ষোভ চলছিল, তখন সরকার সমর্থকরা সেখানে এক ভয়াবহ সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাধায়। পুলিশকে সেখানে দাঙ্গাকারীদের সহায়তা করতে ও দাঙ্গায় সক্রিয় অংশ নিতে দেখা যায়। এ দাঙ্গায় ৫৩ জন মারা যায়, আহত হয় আরো কয়েক শত যাদের অধিকাংশই সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায়ের লোক। একই সাথে চলে তাদের বাড়িঘর আর দোকানপাট লুটপাট; মসজিদে হামলা ও ভাঙচুর।

এ ঘটনার পর ছয় মাস পেরিয়ে গেছে। এই সময়ে এই প্রতিবাদ-বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারী ও সমর্থকদের বারবার পুলিশ ডেকে নিয়ে হয়রানি করছে, তাদের নানা জেরা করছে। এরই মধ্যে বেশ কিছু আন্দোলনকারী ও আন্দোলনের সমর্থক ছাত্রকে কালাকানুন ‘আনল’ফুল অ্যাকটিভিটিজ প্রিভেনশন অ্যাক্ট’ (ইউএপিএ)-এর আওতায় আটকে রাখা হয়েছে। এই ছয় মাসের মধ্যে তাদের বিরুদ্ধে কোনো আনুষ্ঠানিক চার্জও গঠন করা হচ্ছে না। তা ছাড়া দিল্লি পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে নানা ধরনের ষড়যন্ত্রমূলক অপপ্রচারও অব্যাহত রেখেছে। ভারতীয় পত্রপত্রিকায় এমন অভিযোগের কথা প্রচার করা হচ্ছে।

এমনি প্রেক্ষপটে সম্প্রতি দিল্লিতে সংবাদ সম্মেলন করে কয়েকজন বিশিষ্ট ব্যক্তি দিল্লি পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন, পুলিশ সিএএ-এনআরসি-এনপিআর-বিরোধী আন্দোলনকারীদের লক্ষ নানা ধরনের হয়রানি ও ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর চেষ্টা করছে। আরো অভিযোগ করা হয়, এই ষড়যন্ত্রের সাথে সংশ্লিষ্ট করা হচ্ছে উল্লিখিত আন্দোলনের বিষয়টিকে। সম্মেলনে এ নিয়ে একটি বিবৃতি প্রকাশ করেন অ্যান্টি-সিএএ-এনআরসি-এনপিআর মুভমেন্টের সক্রিয়বাদী অপূর্বানন্দ, হর্ষ মান্দর, যোগেন্দ্র যাদব, কাওয়াল প্রীত ও উমর খালিদ।

তবে গত বছরের ডিসেম্বরে ঘটে যাওয়া ঘটনায় দেখা গেছে, বিজেপির বিভিন্ন নেতা ও সমর্থক জনতাকে প্ররোচিত করছেন আইন নিজেদের হাতে তুলে নিতে। তারা ‘ঘৃণামিশ্রিত ভাষণে’ এ ধরনের প্ররোচনা চালান। কার্যত দিল্লির রায়ট এসব প্ররোচনারই চরম পরিণতি। কিন্তু এখন যখন পুলিশ দিল্লির রায়টের ঘটনাটির তদন্তে নেমেছে, তখন জনমনে ধারণা জন্মেছে, পুলিশ এই জন্য প্রকৃত দোষীদের দায়ী না করে দায়ী করছে সিএএ-এনআরসি-এনপিআরবিরোধী আন্দোলনকারী ও তাদের সমর্থকদের।

অনেকের হয়তো মনে আছে- ২৫ ফেব্রুয়ারি ভারত সরকারের প্রেস ইনফরমেশন ব্যুরো থেকে একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছিল। বিজ্ঞপ্তিটি প্রকাশিত হয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকের পর। এ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল ও দিল্লির লে. গভর্নর অনিল বাইজাল। এ সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছিল, অমিত শাহ বলেছেন, ‘তাদের পেশাগত মূল্যায়ন হচ্ছে রাজধানীতে সহিংসতা ছিল ‘স্পনটেনিয়াস’। এর অর্থ, এই রায়ট ছিল স্বতঃস্ফূর্ত-কেউ ভেবেচিন্তে পরিকল্পনা করে এটি ঘটায়নি। অনেকটা তাৎক্ষণিকভাবে এটি হঠাৎ করেই ঘটে গেছে।’ কিন্তু এর মাত্র কয়দিন পরেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বললেন এর উল্টো কথা। তিনি লোকসভায় বললেন, এই রায়ট ‘প্রি-প্ল্যান্ড কনস্পিরেসি- পূর্ব-পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র।’ আর তিনি লোকসভায় এ কথা বললেন রায়ট-সম্পর্কিত তদন্ত শুরু হওয়য়ার আগেই। তাই প্রশ্ন জাগে, সরকার কী এই তদন্তকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে চাইছে?

আরেকটি প্রশ্ন হচ্ছে- ঘটনা পরম্পরা সাজাতে পুলিশ কেনো বিক্ষোভকারীদের ওপর দুটি গুলি চালনার ঘটনার ব্যাপারে নীরব থাকল? এর একটি ২৭ জানুযারি ঘটে দিল্লির জামেয়া মিল্লিয়া ইসলামিয়ায় এবং অপরটি ঘটেছে ১ ফেব্রুয়ারি শাহীনবাগে। বিজেপি নেতা অনুরাগ ঠাকুর এই গুলিবর্ষণের ঘটনার মাত্র কয়দিন আগে প্রকাশ্যে বক্তব্য দিয়ে দিল্লির আন্দোলনকারীদের ‘বিশ্বাসঘাতক’ বলে তাদের গুলি করে মারার জন্য তার সমর্থকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন।

এ ছাড়া ডিসেম্বর ও ফেব্রুয়ারির মধ্যবর্তী সময় বিজেপি নেতা কপিল মিশ্র বেশ কয়েকবার উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়েছেন। তিনি ডিসেম্বরে ‘বিশ্বাসঘাতকদের’ গুলি করে হত্যার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, দিল্লির ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি প্রথম সপ্তাহের নির্বাচন হচ্ছে পাকিস্তান বনাম ভারতের মধ্যে নির্বাচনী লড়াই। সেই সাথে তিনি ডিসিপি ফ্রন্টকে হুমকি দেন, তার সমর্থকেরা আইন হাতে তুলে নেবে, যদি পুলিশ বিক্ষোভকারীদের না তাড়ায়।’ এ ধরনের বক্তব্য কি সন্ত্রাস পরিচালনার জন্য সুস্পষ্ট প্ররোচনা নয়? এ ধরনের বক্তব্য কি সাম্প্রদায়িক বিভেদ সৃষ্টির প্ররোচনা নয়?

দিল্লির দাঙ্গা চলার সময়ের অনেক ভিডিওতে দেখা গেছে- সরকারের সমর্থক লোকেরা প্রকাশ্যে দাঙ্গা ও ধ্বংসযজ্ঞে অংশ নেয়ার জন্য লোকজনকে প্ররোচিত করেছে। মনিপুর থেকে ফেসবুকে এ ধরনের একটি ভিডিওতে দেখা গেছে- রাগিণী তেওয়ারি নামের এক মহিলা প্রকাশ্যে জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছেন : ‘মারো অথবা মরো- কিল অর ডাই’। দিল্লি পুলিশের তৈরি করা এই ষড়যন্ত্রের ঘটনার ঘটনাপরম্পরায় তার নাম ও ঘটনার উল্লেখ নেই কেনো? বিভিন্ন রিপোর্টে আরো নাম এসেছে সত্যপাল সিং, জগদীশ প্রধান, নন্দকিশোর গুজ্জার, মোহন সিং বিশ প্রমুখ বিজেপি নেতাদের অভিযুক্ত করে। কেনো পুলিশ এসব ব্যাপার এখনো আমলে নিচ্ছে না?

দাঙ্গার দিনে দিল্লি পুলিশের ভূমিকা নিয়ে আছে শত অভিযোগ, কিন্তু পুলিশ সেগুলো আমলে নেয়নি। একটি ভিডিওতে দেখা গেছে- দিল্লির পুলিশ কর্মকর্তারা নির্মমভাবে প্রহার করছেন চারজন মারাত্মক আহত ব্যক্তিকে, তাদের ওপর জোরজবরদস্তি চালানো হচ্ছে জাতীয় সঙ্গীত গাওয়র জন্য। এদেরই একজন ২৩ বছর বয়সী ফাইজান পুলিশের নির্যাতনের শিকার হয়ে শেষ পর্যন্ত মারা যান। প্রশ্ন হচ্ছে, দিল্লি পুলিশ কি সেইসব পুলিশের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিয়েছে, যাদের নির্যাতনে এই ব্যক্তি মারা গেলেন? যাদের পুলিশের হেফাজতে নেয়া হয়েছিল তাদেরই একজন খালেদ সাইফি। তাকে কেনো নির্মম পুলিশি নির্যাতনের শিকার হতে হলো, সে বিষয়টি কি দিল্লি পুলিশ আমলে নিয়েছে? যেখানে অনেক অভিযোগ রয়েছে পুলিশ উগ্র জনতার সাথে মিলে সেদিনের দাঙ্গা ও সন্ত্রাস অংশ নিয়েছে, জনতাকে পুলিশ নির্দেশ দিয়েছে ইটপাটকেল ছুড়তে কিংবা জনতা যখন পুলিশের সামনে লুটপাট আর সন্ত্রাস চালায় তখন পুলিশ অন্য দিকে মুখ ফিরিয়ে রেখেছে- দিল্লি পুলিশ কেনো এ ধরনের অভিযোগ তদন্ত করে দেখেনি? বেশ কয়েকটি ঘটনায় পুলিশকে সিসিটিভি ভাঙতেও দেখা গেছে। এসব অভিযোগ কি ন্যায্যতার সাথে তদন্ত করে দেখা হয়েছে?

প্রথমিকভাবে যাদের বিভিন্ন এফআইআরের মাধ্যমে আটক করা হয়েছিল, জামিনের পর তাদের কেনো পুলিশ ‘ইউএপিএ-র আওতায় ষড়যন্ত্রে জড়িত’ দেখিয়েছে? এটি কি বিক্ষোভকারীদের দীর্ঘদিন কারাগারে আটকে রাখার ষড়যন্ত্রের কোনো অংশ? আরো গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হচ্ছে, দিল্লির দাঙ্গার ঘটনা তদন্তে কেনো ইউএপিএ নামের ‘ড্রাকোনিয়ান’ আইনকে টেনে আনা হচ্ছে? তা ছাড়া ভারতীয় জনগণের নজরে এসেছে, পুলিশ তদন্তের নামে সাধারণ মানুষকে ডেকে এনে মিথ্যা বিবৃতি দেয়ার জন্য দমন-পীড়ন চালাচ্ছে। ভারতীয় জনগণ প্রশ্ন তুলছে- এটি কি তাহলে সত্যিকারের বিশ্বাসযোগ্য সাক্ষ্যপ্রমাণের বদলে একটি ষড়যন্ত্র তত্ত্ব প্রতিষ্ঠা করার জন্য পুলিশের চরম প্রচেষ্টা?

ভারতীয় আইনে পুলিশের হেফাজতে থাকা অবস্থায় প্রদত্ত ‘কনফেশন’ বা দোষ-স্বীকৃতির কোনো মূল্য নেই অপরাধী সাব্যস্ত করায়। কিন্তু দেখা গেছে, একজন অভিযুক্তের ব্যাপারে হাইকোর্র্টের রুলিং থাকা সত্ত্বেও আটক ব্যক্তিদের স্বীকারোক্তি গণমাধ্যমে চলে যাচ্ছে। প্রশ্ন হচ্ছে, পুলিশ কেনো আটক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে বিচার-পূর্ব সময়ে, এমনকি চার্জ গঠন-পূর্ব সময়ে, এসব ব্যক্তির বিরুদ্ধে জনমত গঠনের চেষ্টা করছে?
আসলে দিল্লির ঘটনায় সরকার-সমর্থকদের যে ধরনের দণ্ডমুক্তি বা ইমপিউনিটি দেয়া হয়েছিল, পুলিশ এ ঘটনার তদন্তেও তাদের ব্যাপারে সে ধরনের ইমপিউনিটির অনুশীলন করেছে। একই ধরনের চর্চা ভারতীয় জনগণ প্রত্যক্ষ করেছে ১৯৮৪ সালের শিখবিরোধী হত্যাযজ্ঞেও। তবে এবারে দিল্লির ঘটনায় মনে হয়, পুলিশ আরো এক ধাপ এগিয়ে গেছে। এ ক্ষেত্রে পুলিশ বিজেপিনেতাদের ইমপিউনিটি দেয়ার সাথে সাথে সরকারের সমালোচক নেতা ও সক্রিয়বাদীদের টার্গেটে পরিণত করেছে। অথচ সারা ভারতের মানুষ প্রত্যক্ষ করেছে, বৈষম্যমূলক সিএএ-এনআরসি-এনপিআর-বিরোধী প্রবল প্রতিবাদ-বিক্ষোভ। বিক্ষোভকারীরা বারবার বলেছে সংবিধানের সুপ্রিমেসি এবং বৈচিত্র্যময় বহু সম্প্রদায়ের মানুষের সমন্বয়ে গঠিত ভারত জাতির কথা। দিল্লির প্রতিবাদ-বিক্ষোভে প্রাধান্য ছিল নারী নেতৃত্বের। আর এতে অংশগ্রহণ ছিল সর্বস্তরের মানুষের। কিন্তু বর্তমানে সিএএ-এআরসি-এনপিআর সম্পর্কে ভিন্নমতাবলম্বীদের মধ্য থেকে বেছে বেছে ‘কতিপয়’কে দিল্লি রায়টের জন্য দায়ী করার কাজটিই চলছে। বিষয়টি সরকারের প্রতি জনআস্থা কমিয়ে দিয়েছে। সেই সাথে জনমনে দিল্লি রায়ট প্রশ্নে পুলিশি তদন্ত নিয়ে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

জনমনে এ নিয়ে যে প্রশ্ন উঠছে, তার একটি উদাহরণ হচ্ছে- সম্প্রতি দিল্লিতে অপূর্বানন্দ, হর্ষ মান্দর, কাওয়ালপ্রীত, যোগেন্দ্র যাদব ও উমর খালিদের আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন। এ সম্মেলনে তারা এ ধরনের নানা প্রশ্ন তুলে ধরেন এবং উপসংহারে বলেন : আমরা দৃঢ়তার সাথে সিএএ-এনআরসি-এনপিআরের বিরোধিতা পুনর্ব্যক্ত করছি এবং এ ধরনের জনবিরোধী আইনের বিরুদ্ধে আমাদের শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ অব্যাহত রাখব। আমরা দাবি জানাই আদালতের নজরদারিত্বে এ ঘটনার তদন্ত পরিচালনার অথবা ‘কমিশন অব ইনকোয়ারি অ্যাক্ট ১৯৫২’-এর অধীনে এর তদন্ত চলুক।

এদিকে ঘটনাটির পুলিশি তদন্তের প্রতি অসন্তুষ্টি প্রকাশ করে এক হাজারেরও বেশি বিশিষ্ট ভারতীয় নাগরিক দিল্লি পুলিশের উদ্দেশে ‘উই দ্য সিটিজেনস অবজেক্ট টু দ্য ম্যানার অব দ্য দিল্লি রায়ট প্রোব’ শীর্ষক একটি বিবৃতিপত্র প্রকাশ করেছেন। তারা বলেন- ‘আমরা এই জরুরি বিবৃতি প্রকাশ করলাম দিল্লি রায়ট প্রশ্ন পুলিশের তদন্ত প্রক্রিয়ার ধরনের জোরালো প্রতিবাদ জানিয়ে। আমরা আহ্বান জানাই, তদন্ত প্রশ্নে জনআস্থা পুনরুদ্ধার করা হোক। জোরপূর্বক স্বীকারোক্তি নিয়ে নকল সাক্ষ্যপ্রমাণ তৈরি করা বন্ধ হোক। অমরা চাই- খালিদ ও অন্যদের এ ঘটনা সাথে জড়িত করা হবে না; ঘটনাটিকে রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্র হিসেবে চিহ্নিত করার অপচেষ্টায় ইউএপিএ আইন এ ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা হবে না।’

তারা বিবৃতিতে আরো উল্লেখ করেন- আমরা গত ১ সেপ্টেম্বরে প্রকাশিত খবর সম্পর্কে সতর্ক। উমর খালিদ দিল্লি পুলিশ কমিশনারের কাছে চিঠি দিয়ে উল্লেখ করেছেন, বলপূর্বক হুমকি প্রদর্শনের মাধ্যমে আদায় করে নেয়া বিবৃতির মাধ্যমে তার বিরুদ্ধে নকল সাক্ষ্যপ্রমাণ তৈরি করা হচ্ছে। চিঠিতে উল্লিখিত তথ্যমতে, দিল্লি পুলিশের বিশেষ সেল তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে এবং দিল্লি রায়ট সম্পর্কে তার বিরুদ্ধে জোর করে স্বীকারোক্তি নেয়া হয়েছে। পুলিশ তাকে হুমকি দেয়, যদি তিনি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী না দেন, তবে তার বিরুদ্ধে ইউএপিএ’র আওতায় মামলা দেয়া হবে।

বিবৃতিতে এসব বিশিষ্ট নাগরিক উল্লেখ করেন, তরুণ বিদ্বজ্জন ব্যক্তিত্ব ড. উমর খালিদের বিরুদ্ধে ভারতের এক শ্রেণীর গণমাধ্যম অনবরত কুৎসা রটনা করে চলেছে। এখন তাকে দিল্লি রায়ট মামলার আসামি করা হচ্ছে। অন্যান্য ব্যক্তির কাছ থেকেও এ ধরনের স্বীকারোক্তি জোর করে নেয়া হচ্ছে। এ ব্যাপারে এই বিবৃতিদাতারা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তা ছাড়া তারা এসব জোরপূর্বক স্বীকারোক্তি আদায় বন্ধের নিশ্চয়তা দাবি করেছেন দিল্লি পুলিশ কমিশনের কাছে।

এই সহস্রাধিক বিশিষ্ট বিবৃতিদাতার মধ্যে রয়েছেন : চলচ্চিত্র নির্মাতা অপর্ণা সেন, সাবেক সংস্কৃতি সচিব জওহর সরকার, ইতিহাসবিদ রামচন্দ্র গুহ, দিল্লি মাইনোরিটি কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ড. জাফরুল ইসলাম খান, দিল্লির সাবেক গভর্নর মার্গারেট আলভা, শিক্ষাবিদ জয়া হাসান, পার্থ চাটার্জি, জয়তী ঘোষ, পুনম বাত্রা, নিবেদিতা মেনন, সুচিত্রা সেন; সাবেক জ্যেষ্ঠ সরকারি কর্মকর্তা ওয়াজাহাত হাবিবুল্লাহ, মধু ভাদুড়ী, দেব মুখার্জি, অমিতাভ পান্ডে, সুন্দর বুরড়া, অদিতি মেহতা; নারীবাদী আন্দোলনকারী মীরা সঙ্ঘমিত্রা, বাণী সুব্রামানিয়াম, চয়নিকা সাহা, হাসিনা খান; সাংবাদিক- বিদ্যা সুব্রামানিয়াম, গীতা সেশু, মনোজ মিত্র, অঞ্জলী মোদি, অন্তরা দেবসেন, প্রিয়াঙ্কা বরপুজারী; রাজনৈতিক নেতা- বৃন্দা কারাট, অ্যানি রাজা, কবিতা কৃষ্ণান; শিল্পী- কিরণ সেহগাল, শুদ্ধব্রত সেনগুপ্তা; লেখিকা- অরুণা বাসুদেব, সমাজকর্মী- ম্যাগসাসে পুরস্কার বিজয়ী অরুণা রায় ও সন্দ্বীপ পান্ডে; গণতান্ত্রিক অধিকার কর্মী- জগদ্বীপ ছোকার, হেনরি টাইফেনি, তিস্তা শীতলবেদ, জন দয়াল, লুরা জেসানি; নৌ-বাহিনীর সাবেক চিফ অব স্টাফ অ্যাডমিরাল রামদাস, বিজ্ঞানী অমিতাভ বসু, প্রমুখ।

 


আরো সংবাদ



premium cement
রামুতে ৬০ লাখ টাকার ইয়াবাসহ ২ কারবারী আটক ৪০ ডিগ্রির নিচে নামল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা তিন দিন ৩ ঘণ্টা করে শাহজালালে বন্ধ থাকবে ফ্লাইট ওঠানামা ‘২০৩০ সালের মধ্যে ১০০ বিলিয়ন ডলার রফতানি আয় করবে পোশাক শিল্প’ প্যারিসে গুলিতে একজন নিহত, বেশ ক’জন আহত ভৌগোলিক কারণে সিঙ্গাপুরের জন্য চট্টগ্রাম খুবই গুরুত্বপূর্ণ : হাই কমিশনার গাজীপুরে ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে কলেজছাত্র নিহত শ্রদ্ধা-ভালোবাসায় বিদায় নিলেন সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ জে মোহাম্মদ আলী ফেনীতে চাঁদা না পেয়ে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়, গ্রেফতার ৪ বর্তমান সরকার অন্যের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত : কর্নেল অলি গণতান্ত্রিক বিষয়কে বিএনপি ফাঁদ মনে করে : ওবায়দুল কাদের

সকল