৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫
`


হাতছাড়া হচ্ছে পশ্চিম তীর ও জর্দান ভ্যালি

হাতছাড়া হচ্ছে পশ্চিম তীর ও জর্দান ভ্যালি -

ইসরাইল পশ্চিম তীরের কিছু অংশ, নির্দিষ্টভাবে জর্দান ভ্যালি, জর্দান ভ্যালির ব্লক-সি ও ‘মৃতসাগর’ ইসরাইল রাষ্ট্রে সংযুক্ত করে সার্বভৌম ক্ষমতা প্রয়োগ করার ব্রত নিয়ে বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ও কোয়ালিশন সরকার এগোচ্ছে। ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু নির্বাচনের আগে ভোটের অঙ্ক বাড়ানোর জন্য এগুলোর সংযুক্তির ঘোষণা দিয়েছিলেন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী অবসরপ্রাপ্ত জেনারেল বেঞ্জামিন গান্টজও জর্দান ভ্যালি এবং পশ্চিম তীর সংযুক্তকরণের জন্য নির্বাচনী ইশতেহার দিয়েছিলেন। অর্থাৎ যিনিই সে দেশে ক্ষমতায় আসুন না কেন জর্র্দানের মূল্যবান এলাকা এবার আরবরা হারাতে বাধ্য হচ্ছে।

দখলকৃত এলাকাগুলো বহুদিন ধরে ইসরাইল নিয়ন্ত্রণ করছে। এসব এলাকা ৫৩ বছর আগে ৬৭ সালের যুদ্ধের সময় ইসরাইল দখল করেছিল। সুদীর্ঘ এই সময়ে হৃত এলাকা ফিরে পেতে জর্দানসহ আরব রাষ্ট্রগুলো কোনো পদক্ষেপ নিতে পারেনি। ১৯৬৭ সালের যুদ্ধের ১৪ বছর পর ১৯৮১ সালে ইসরাইল সিনিয়ার গোলান হাইট দখল করে নেয়। ২৫ হাজার ইহুদি পরিবার এখন গোলান হাইটসে বসবাস করছে। অবশ্য একটি প্রতিরোধ সৃষ্টি হয়েছিল সিরিয়া, কাতার, হিজবুল্লাহ ও হামাস মিলে। কেউ গোলান নিয়ে কথা বলেননি। ওই ইস্যুতে একটি বুলেটও তারা ছোড়েননি। এখন মনে হয় সবাই গোলান মালভূমির কথা ভুলে গেছেন। গোলান ইসরাইলের বলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইতঃপূর্বে ‘সিল’ মেরেছেন; এবার পশ্চিম তীর ও জর্দান ভ্যালি ইসরাইলের বলে সিল মারবেন। কিন্তু কী করবে আরব বিশ্ব? শুধু দেখা ও নিন্দা প্রকাশ করা ছাড়া কী করতে পারবে?
জর্দান ভ্যালির বড় সম্পদ অফুরন্ত পানির উৎস। এখানে ১৩৩টি গভীর নলকূপ আছে যা মূলত কৃষিকাজে ব্যবহৃত হচ্ছে।

ইসরাইলিরা সম্প্রতি আরো ৫০টি নতুন কূপ খনন করেছে এবং আশেপাশে ফিলিস্তিনির যে সব কূপ রয়েছে সেগুলো বন্ধ করে দিয়েছে। এসব কূপ থেকে ইসরাইল প্রতিদিন হাজার হাজার লিটার সুপেয় পানি উত্তোলন করে কনভয় করে নিয়ে যায়। কৃষিজমি থেকে আরবদের আস্তে আস্তে তুলে দেয়া হচ্ছে, যাতে ইহুদিরা সরকারি অর্থ-সাহায্যে আধুনিক কৃষিখামার ও বিপণন পদ্ধতি গড়ে তুলতে পারে।
জর্দানের ওই ভূমি সংযুক্তকরণের জন্য কয়েক দশক ধরে কাজ করছে ইসরাইল। আল খলিল বা হেবরন থেকে অধিকৃত পশ্চিম তীরে ৪২ কিলোমিটার দেয়াল নির্মাণ ইসরাইল শেষ করেছে তিন বছর আগে। দেয়ালটি হেবরনের ১২ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে ফিলিস্তিন শহর থেকে ইসরাইলি বসতি এলাকা মিতার সামরিক চেকপোস্ট পর্যন্ত বিস্তৃত। এতে ইসরাইলে কেউ প্রবেশ করতে পারবে না। দেয়ালে ইলেকট্রনিক মনিটরিং ডিভাইসও লাগানো হয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন স্থান থেকে ইহুদিদের এনে বসতি নির্মাণ করে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। যারা এখানে আসতে চায় না তাদের উল্টো সরকারি প্রণোদনা দেয়া হচ্ছে। আরব বসতিগুলোর জলপাই বাগান কেটে তাদের আয়ের পথ রুদ্ধ করে দেয়া হয়েছে। অনেক স্থান থেকে আরবদের বিতাড়ন করা হয়েছে। বিভিন্ন অজুহাতে তাদের গুলি করে মারা হচ্ছে। নবাগত ইহুদিরাও এলাকায় এসে চড়াও হচ্ছে ফিলিস্তিনিদের ওপর।

দুই দশক ধরে পশ্চিম তীরের জমি, পানির উৎস, কূপ, শিশুপার্ক ও বনজসম্পদ ধ্বংস করা হয়েছে। অধিকৃত পশ্চিম তীরে ইহুদি বসতি স্থাপনের জন্য নতুন করে আরো ছয় হাজার বাড়ি নির্মাণের অনুমোদন দিয়েছে ইসরাইল সরকার, নাম দেয়া হয়েছে ‘এরিয়া সি গৃহায়ণ প্রকল্প’। এরিয়া সি পশ্চিম তীরের প্রায় ৬০ শতাংশ এলাকা। এখানে পশ্চিম তীরের প্রায় সব বসতি। ফিলিস্তিনিরা তাদের রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য পশ্চিম তীরের সম্পূর্ণটাই চায়। পশ্চিম তীরে ছয় লাখ ২০ হাজার ইহুদি বসবাস করছে। এসব বসতি পশ্চিম তীরের ৪৬ শতাংশ ভূখণ্ড গ্রাস করে নিয়েছে।
পশ্চিম তীর ও জর্দান ভ্যালিতে কৃষি ও পর্যটনখাতে হাজার মিলিয়ন শেকেলের প্রকল্প হাতে নিয়েছে ইসরাইল। অথচ জর্দান ভ্যালি অসলো চুক্তি অনুসারে ফিলিস্তিনি ও ইসরাইলি উভয়ের যৌথ নিয়ন্ত্রেণে থাকার চুক্তি রয়েছে। সে অনুসারে ফিলিস্তিনিরা ৮৫ বর্গকিলোমিটার নিয়ন্ত্রণ করে, এটি এলাকার মাত্র ৭.৪ শতাংশ। ইসরাইলের অধীনে এক হাজার ২০ বর্গকিলোমিটার, বা ৮৮.৩ শতাংশ, আর যৌথ নিয়ন্ত্রণে ৫০ বর্গকিলোমিটার যা মাত্র ৪.৩ শতাংশ।

বাস্তবে ইসরাইল পুরোটাই নিয়ন্ত্রণ করছে যাতে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র সরিয়ে জর্দানে ঠেলে দেয়া যায়। ওই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে ফিলিস্তিনিদের পুরো ভ্যালির পশ্চিম তীরের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পথে বসতে হবে।
পশ্চিম তীরের যেকোনো ফিলিস্তিনি জর্দান ভ্যালিতে যেতে হলে ইহুদি প্রশাসন থেকে বিশেষ পারমিট সংগ্রহ করতে হয়। মানে, আরবরা নিজ দেশেই আজ পরবাসী। অবস্থা দেখে মনে হয়, ওই স্থান যুগ যুগ ধরে যেন ইসরাইলের। সবচেয়ে কষ্টে আছে যেসব ফিলিস্তিনির বাড়িঘর জর্দান ভ্যালির বাইরে, কিন্তু চাষের জমিজমা ভ্যালিতে। কারণ তাদের ঢুকতে দেয়া হয় না। ফলে এসব চাষির আয়ের পথ বন্ধ। যে সব পুরুষ পশ্চিম তীরে বিয়ে করেছেন, কিন্তু বাড়িঘর ভ্যালিতে, আইডি কার্ডের ঠিকানাও ভ্যালিতে, তারা একবার এলাকা থেকে বের হলে আর ঢুকতে না দেয়ার ভয়ে পরিবার পরিজন ফেলে সেখানেই রয়ে গেছেন। অনুমান করা যায়, কী পরিমাণ নির্যাতন ফিলিস্তিনিরা ভোগ করছে।

নেতানিয়াহু মনে করেন, যদি কখনো ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা হয়ও, সেটি মৃতসাগরের এলাকায় এমনভাবে স্থাপন করা হবে যেন অন্য কোনো আরব দেশের সাথে সংযুক্ত না থাকে।
জর্দানের বাদশাহ আবদুল্লাহর হুঁশিয়ারি এ যাবৎকালের সবচেয়ে বড় সাবধান বাণী। সংযুক্তির বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র এখনো নীরব। ওয়াশিংটনের এটি একটি কৌশল। নেতানিয়াহু দুটি স্তরে সংযুক্তিকরণ নিয়ে এগোতে চান। প্রথমত পশ্চিম তীরে অবস্থিত শুধু ইহুদি বসতিতে সার্বভৌমত্ব প্রয়োগ, যা আগামী জুলাই মাসে এবং সেপ্টেম্বরের আগে সম্পন্ন করা হবে, দ্বিতীয়টি চলমান- জর্দান ভ্যালি সংযুক্তকরণ। ভ্যালি পুরো পশ্চিম তীরের ৩০ শতাংশ। দ্বিতীয় ধাপটি জর্দানের জন্য চ্যালেঞ্জ ও মারাত্মক পরিণতি বয়ে আনবে। এটা কার্যকর হলে ‘দুই রাষ্ট্র থিওরি’র মৃত্যু হবে। ইসরাইল চাইবে জর্দানে ফিলিস্তিনিদের পাঠিয়ে দিতে। যদি ইসরাইল পশ্চিম তীরে অবস্থিত, জর্দান ভ্যালির সন্নিকটে জুদিয়া ও সামারিয়ায় নিজেদের সার্বভৌমত্ব কায়েম করে তবে জর্দান নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক চুক্তিগুলো আর মানবে না মর্মে ঘোষণা দিয়েছে। এতদিন এই দুটি বিষয়ে জর্দান ইসরাইলকে চুক্তি অনুসারে সুযোগ দিয়ে আসছিল। একটি হলো তথ্যপ্রবাহ ও ইন্টেলিজেন্স শেয়ার করা। তা ছাড়া রয়েছে অর্থনৈতিক সহায়তা। এই গ্রীষ্মে যদি ইসরাইল সংযুক্তকরণ কাজে এগিয়ে যায় তবে জর্দানের সাথে সংঘর্ষ এড়ানো যাবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বাদশাহ।

দুটি আরব দেশ জর্দান ও মিসর ইসরাইলের সাথে শান্তি চুক্তি করেছে। তবে জর্দানের বেশির ভাগ নাগরিক ইসরাইলকে শত্রু মনে করে। তা ছাড়া পার্লামেন্টে বেশির ভাগ সদস্য ইসলামপন্থী। তারা কয়েকবার ডাক দিয়েছেন শান্তি চুক্তি বাতিল করার জন্য। মার্কিন ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী জো বাইডেন পশ্চিম তীরের অধিকৃত এলাকা সংযুক্তকরণ সমর্থন করেন না বলে জানিয়েছেন। তার ‘সাফ কথা’।
একই বছরে চতুর্থবার নির্বাচন থেকে বেঁচে গেছেন নেতানিয়াহু। কোয়ালিশনে গান্টজ রাজি হওয়ায় নেতানিয়াহু আরো ১৮ মাসের জন্য প্রধানমন্ত্রী হিসেবে কাজ করবেন। পশ্চিম তীরের বড় একটি অংশ ও প্রায় দখলে নেয়া জর্দান ভ্যালি জুলাই মাসের মধ্যে মূল ইসরাইলি ভূখণ্ডের সাথে সংযুক্ত করার ঘোষণা দেয়া হয়েছে। এটি ট্রাম্পের ‘শান্তি পরিকল্পনা’রও একটি অংশ। নেতানিয়াহু যেসব পদক্ষেপ নেবেন তাতে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনের কথা উল্লেখ করেছেন। সংযুক্তিকরণ পরিকল্পনায় ইসরাইলের অবসরপ্রাপ্ত সামরিক কর্মকর্তারা অনেকেই বিরোধিতা এবং হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন।

কিন্তু নেতানিয়াহু এসব মোটেই আমলে নিচ্ছেন না। জেরুসালেম পোস্ট পত্রিকা খবর দিয়েছে, কোনো চুক্তি বা আন্তর্জাতিক চাপে তিনি ইহুদি বসতির কোনো পরিবারকে স্থানচ্যুত করবেন না।
ইসরাইলের সাথে সম্পাদিত চুক্তির আওতায় ২৫ বছর মেয়াদি ভূমি চুক্তি নবায়ন না করার ঘোষণা দিয়েছে জর্দান। চুক্তি অনুসারে পানিসমৃদ্ধ এবং চাষাবাদ উপযোগী ওই জমি ২৫ বছরের জন্য ইজারা নিয়েছিল ইসরাইল, যেখানে বর্তমানে সে দেশের কৃষকরা চাষাবাদ করছে। এই চুক্তির মেয়াদ গত বছরের অক্টোবরে ২৫ বছর পূর্ণ হয়েছে। চুক্তির একটি বিশেষ ধারার আওতায়, ইসরাইলিদের সেখানে ভূমির ব্যক্তিগত মালিকানার অধিকারের পাশাপাশি অবাধ চলাচল করতে দেয়া হয়েছে। ১৯৯৪ সালের ‘শান্তি চুক্তি’ অনুসারে, ইসরাইল তাদের দক্ষিণ সীমান্তবর্তী জর্দানের ‘আল গুমার’ নামের ৪০৫ হেক্টর আবাদি জমি ইজারা নেয়।

পাশাপাশি জর্দান ও ইয়ারমুক নদীর মিলনস্থল সংলগ্ন সীমান্তবর্তী ‘আল বাকুরা’ অঞ্চলও ইজারা দেয়া হয়। ১৯৯৪ সালে চুক্তি হলেও ১৯৪৮ সালের আরব-ইসরাইল যুদ্ধের পর থেকে ভূখণ্ড দুটি দখলে রেখেছে ইসরাইল। জনগণের তরফ থেকে প্রতিবাদের কারণে জর্র্দানের বাদশাহ সে চুক্তি নবায়ন করতে চাচ্ছেন না। বাদশাহ দ্বিতীয় আবদুল্লাহ বলেছেন, ‘এগুলো জর্দানের ভূমি। আর তাই থাকবে’। এখন এই চুক্তি নবায়ন হওয়ার আশা ক্ষীণ। কিন্তু তাতে কি, ইসরাইল তার আগেই ঘোষণা দিয়েছে- আম্মানের পর জর্দানের দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় ইসরাইলি ‘সার্বভৌমত্ব’ কায়েম করার।
জর্দান নদীর পশ্চিম তীরে বসতি নির্মাণ না করা এবং ঘরবাড়ি না ভাঙার জন্য রাশিয়া জাতিসঙ্ঘে সোচ্চার। শান্তি ও উন্নয়ন চাইলে এই পদক্ষেপ বন্ধ করতে হবে। সিরিয়ার গোলান মালভূমির ওপর ইসরাইলি কর্তৃত্ব সব আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থী, বিশেষ করে নিরাপত্তা পরিষদের ৪৯৭ নং সিদ্ধান্তের। ফিলিস্তিন-ইসরাইল শান্তি আলোচনা ২০১৪ সাল থেকে ‘হিমায়িত’। ফিলিস্তিনি প্রশাসন প্রধান মাহমুদ আব্বাস সব কূল হারিয়ে মাত্র চলতি সপ্তাহে সব ধরনের সম্পর্ক ছিন্ন করলেন ইসরাইলের সাথে। অনেক দেরি করেছেন এই পদক্ষেপের। তিনি কি যুদ্ধ করতে প্রস্তুত? আব্বাসের কোনো যুদ্ধ করার সুযোগ নেই।

কোনো আলোচনা চালাতে মিসরের মধ্যস্থতা চলছে। মিসরীয় শাসক জে. সিসি ট্রাম্পের প্রিয়পাত্র, ইসরাইলেরও। অধিকৃত জর্দান নদীর পশ্চিম তীরের একাংশ ইসরাইলের অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ১৯ মে, যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলের সাথে এ যাবৎ করা সব চুক্তি বাতিল করে দিয়েছেন ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট আব্বাস। সৌদি আরবের প্রিন্স মোহাম্মদ বলেছেন, আরব শান্তি প্রচেষ্টার মূলত মৃত্যু হয়েছে। তাই এখন বি-পরিকল্পনা অনুসারে চলতে হবে, যা গাজা উপত্যাকায় ফিলিস্তিনিদের জন্য একটি আবাসস্থল। মোহাম্মদের সাথে বৈঠকে মাহমুদ আব্বাস পূর্ব জেরুসালেম ও পশ্চিম তীরের কথা উঠালে ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বলেন, ‘আমরা আলোচনা অব্যাহত রাখব’। তিনি মাহমুদ আব্বাসকে ১০ বিলিয়ন ডলার দেয়ার প্রস্তাবও করেন। আব্বাস এমন এক সঙ্কটে পড়েছেন যে, তিনি হ্যাঁ বা না কিছুই বলতে পারছেন না।

মাহমুদ আব্বাস ফি বছর ওয়াশিংটন থেকে প্রচুর অনুদান পেয়ে থাকেন। এসব আয়োজনের পেছনে রয়েছেন ট্রাম্প-জামাতা কুশনার। নিউ ইয়র্ক টাইমস জানায়, আব্বাস এই অর্থ গ্রহণে অসম্মতি জানান। তবে ফিলিস্তিনিদের মাধ্যমে এই অর্থ হস্তান্তর করা হতে পারে বলে জানা যায়। এই পরিকল্পনায় পশ্চিম তীরের বিরাট এলাকা ইসরাইলের হাতে পড়বে।
বিশ্বের বেশির ভাগ দেশ পশ্চিম তীরে ইসরাইলের বসতিকে অবৈধ ও বেআইনি বলেছে। জর্দানের সাথে আমেরিকার ভালো সম্পর্ক রয়েছে। জর্দান মধ্যপ্রাচ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বিষয়ে। আমেরিকা এ দেশে সরাসরি কোনো পদক্ষেপ না করলেও আহলাম আল তামিমি, যাকে ২০০১ সালে জেরুসালেমে বোমা হামলার জন্য দোষী সাব্যস্ত করা হয়, তাকে নিয়ে জর্দান আমেরিকার সহায়তা থেকে বঞ্চিত হতে পারে এবং বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ওপর অবরোধ পড়তে পারে। বাদশাহ সবচেয়ে বেশি যা ভয় করছেন, তা হলো- তাকে ক্ষমতাচ্যুত করার কোনো পদক্ষেপ।

ইসরাইল পশ্চিম তীর দখল নিয়ে কিছুটা চাপে থাকায় পূর্ব জেরুসালেমে মুসলিম এলাকায় নতুন করে ২০০ বাড়িঘর ভেঙে ফেলা হচ্ছে। ইসরাইলের হাতে আছে নির্যাতনের অনেক চাবিকাঠি। মুসলমানদের এসব সামাল দিতেই দিন শেষ হয়ে যাচ্ছে। বহু বছর ধরে ফিলিস্তিনি আরবরা কোনো ‘অফেনসিভ’ অবস্থানে যেতে পারছে না।

লেখক : অবসরপ্রাপ্ত যুগ্ম সচিব ও গ্রন্থকার


আরো সংবাদ



premium cement