২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

হঠাৎ বন্যায়

হঠাৎ বন্যায় -

পানি বেড়েই চলছে নদীতে। বেড়ে বেড়ে একবার নদী ছেড়ে লোকালয়ে এলো পানি। ভয়ঙ্করভাবে পানি বাড়ছে। মুহূর্তের মধ্যেই রাস্তাঘাট তলিয়ে যেতে লাগল। অমিতের মা অমিতকে রাস্তার ধারে উঁচু ঢিবিতে বসিয়ে দিয়ে বলল, বাবা এখান থেকে কোথাও যেয়ো না। আমি বাড়িতে ছাগল আর গরু দু’টি নিয়ে আসি।
অমিতের মা আবারো বাবা, তুমি কিন্তু এখান থেকে কোথাও যাবে না। অমিত মাথা নাড়ল কোথাও যাবে না।
অমিতের মা বাড়িতে গিয়ে বাড়ির দরকারি জিনিসপত্র যাতে ভেসে না যায় তাই সেগুলো বড় বড় গাছের সাথে বেঁধে রেখে এলো। অমিতের মাও জানে এভাবে এগুলো থাকবে না। অনেক কষ্ট করে গড়া সংসার। মায়া ছাড়তে পারে না। তাই থাকবে না জেনেও সেগুলো গুছিয়ে রাখে। গরু আর ছাগল নিয়ে অমিতের মা রাস্তার ধারে আসে।
অমিতকে যেখানে বসিয়ে রেখে গিয়েছিল সেই ঢিবিটা পানিতে তলিয়ে গেছে।
তাহলে অমিত গেল কই? অমিতের মা পাগলের মতো এদিক-সেদিক খুঁজতে থাকে। অমিতকে কোথাও পাওয়া যায় না।
অমিতের মা কাঁদতে থাকে। অঝোর ধারায় কান্না। অমিতের মা কী করবে, কোথায় খুঁজবে বুঝে উঠছে না। শুধু অমিত অমিত বলে কেঁদেই যাচ্ছে। অমিতের বাবা মধ্যপ্রাচ্যে থাকে। বছর দুই হলো গেছে। অমিত, অমিতের বাবার প্রাণের টুকরা। অমিতের বাবাকেই কি বলবে আর না বলবে ভেবে কূল পাচ্ছে না অমিতের মা।
অমিতের মা আরো জোরেশোরে কাঁদতে থাকে। ধীরে ধীরে অনেক লোক সমবেত হয়েছে। যেখানে অমিত বসে ছিল, গ্রামের লোকজন তার চারপাশে পানির ভেতর ডুবিয়ে ডুবিয়ে খুঁজতে থাকে। কিন্তু অমিতকে কোনোভাবেই পাওয়া যাচ্ছে না। অমিতের মাও পানিতে ডুবে ডুবে খুঁজে যাচ্ছিল অমিতকে। কোনোভাবেই অমিতের সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না।
যখন রাস্তায় অমিতকে রেখে গেছে তখন রাস্তায় স্রোত ছিল না। এখন স্রোত আছে। স্রোত ক্রমেই বাড়ছে। অমিতকে স্রোতে ভাসিয়ে নিয়ে গেল না তো। অমিতের মা ভাবে আর চিৎকার করে উঠে মাঝে মধ্যেই।
অমিতের মা এদিক-সেদিক পাগলের মতো ছোটাছুটি করছে। কোথায় অমিতকে পাবে? কোথায় গেল অমিত।
মানুষ যে যার মতো চলে যেতে লাগল। অমিতের মাকেও সান্ত¡না দিতে লাগল কেউ কেউ। দেখো তোমার ছেলে আল্লাহই রক্ষা করবে। যে হারে পানি বাড়ছে তুমি এখানে থাকলে তুমিও বাঁচবে না। অমিতের মা নাছোড়বান্দা। অমিতকে না নিয়ে যাবে না। সে বলে আমার অমিত এখানেই আছে।
এই দুঃসময়ে সবাই কোনো না কোনো বিপদে আছে। সবাই যার যার মতো ব্যস্ত। কী করবে, কোথায় যাবে কী খাবে? নানাবিধ প্রশ্ন সবার মাথায়। যার মতো পাগলের মতো ছুটে যাচ্ছে গন্তব্যহীন অনিশ্চিত আশ্রয়ের খোঁজে।
অমিতের মা একাই ছেলেকে খুঁজছে। অমিতের মা পানির ভেতর আর পেরে উঠছে না। কতক্ষণ আর ডুব দেয়া যায়। ক্লান্ত শরীর আর কাজ করছে না। তবু অমিতের মা পানির মধ্যে হাতড়িয়ে যাচ্ছে পানিতে অমিতকে পাওয়ার জন্য। অমিত পানিতে পড়ে গেলে এতক্ষণে বেঁচে থাকার কথা নয়। সে বোধ অমিতের মায়ের নেই।
এখন কান্নার শক্তিটুকুও চলে গেছে। চোখের পানি আর বন্যার পানি এক হয়ে গেছে। এবারে অমিতের মা হাত-পা পানিতে এলিয়ে দিলো। পানির স্রোত অমিতের মাকেও ভাসিয়ে নিয়ে চললো।

 


আরো সংবাদ



premium cement
‘ফ্রি ভিসার গল্প’ আর শূন্য হাতে ফেরা লাখো শ্রমিক নোয়াখালীতে প্রবাসীর স্ত্রীর ব্যক্তিগত ছবি দেখিয়ে চাঁদা আদায় দেশের উন্নয়নে পাকিস্তান প্রশংসা করে, অথচ বিরোধী দল দেখে না : কাদের আশুলিয়ায় বাঁশবাগান থেকে নারী পোশাক শ্রমিকের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার মিয়ানমারের কর্মকর্তারা ফেরত গেলেন, কিন্তু রোহিঙ্গা সঙ্কট কি আরো জটিল হচ্ছে দিনাজপুরে দুই ট্রাকের সংঘর্ষ, চালক-হেলপার নিহত মানিকগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২ সখীপুরে বৃষ্টির জন্য অঝোরে কাঁদলেন মুসল্লিরা দক্ষিণ ভারতে কেন কাজ করেনি বিজেপির হিন্দুত্ববাদী রাজনীতি জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের নতুন আংশিক কমিটি বাংলাদেশের হাসপাতাল ও চিকিৎসায় বিনিয়োগ সম্ভাবনা অন্বেষণে থাইল্যান্ডের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান

সকল