০২ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১, ২২ শাওয়াল ১৪৪৫
`


ইচ্ছে পূরণ

ইচ্ছে পূরণ -

সায়লা ইয়াসমিন আজ খুব সকালে ঘুম থেকে উঠেছেন। তাকে আজ স্কুলে একটু আগেই যেতে হবে। তিনি একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চাকরি করেন। তার উপর দায়িত্ব পড়েছে ছোট্ট শিশুদের নিয়ে একটি শিক্ষা সফরে যেতে হবে। তিনি দারুণ খুশি। শিশুদের আনন্দেরও যেন বাঁধ মানছে না। কিন্তু ছোট্ট শিশু সাদিয়ার মনে আনন্দ নেই। শিক্ষা সফরে তার সব বন্ধু যাবে কিন্তু সে যেতে পারবে না। সাদিয়ার বাবা একজন দিনমজুর। কিছু দিন ধরে সে অসুস্থ। সংসারের খাবার জোগাড় করতেই সে হিমশিম খাচ্ছে, সাদিয়ার ইচ্ছে পূরণ কিভাবে করবে। কিন্তু ছোট্ট সাদিয়ার মনতো মানে না। সে সবার সাথে শিক্ষা সফরে যেতে চায়। শিক্ষা সফরে যেতে হলে তাকে ৪০০ টাকা দিতে হবে। ক্লাসে সায়লা ইয়াসমিন এলো। তার হাতে কিছু চকোলেট। সব বাচ্চা তাকে ঘিরে ধরল। সবাই খুব মজা করতে লাগল। তিনি এক এক করে সবাইকে চকোলেট দিলেন। চকোলেট দেয়া শেষ হলে তিনি শিক্ষা সফর নিয়ে কথা বলা শুরু করলেন। সব শিশুরা আনন্দে লাফালাফি করতে লাগল। কিন্তু শুধু সাদিয়া চুপ করে রইল। ভীষণ মন খারাপ সাদিয়ার। সায়লা ইয়াসমিনের নজর গেল সাদিয়ার দিকে। সে সাদিয়ার কাছে এগিয়ে গেল। সাদিয়ার চোখে জল টলমল করছে। সায়লা ইয়াসমিন সব শুনল সাদিয়ার কাছ থেকে। সে সাদিয়াকে আদর করে বলল তুমিও সবার সাথে যাবে। সবার সাথে খেলবে ও আনন্দ করবে। সাদিয়া এখন খুব খুশি। তার ম্যাডাম তাকে বলেছে এতেই তার সব কষ্ট দূর হয়ে গেছে। কিন্তু তার টাকা কোথা থেকে জোগাড় হবে এ চিন্তা আর তার নেই। সায়লা ইয়ামমিন ভাবল সে নিজে সাদিয়ার টাকাটা দিয়ে দিবে। কিন্তু তার মাথায় একটি দারুণ আইডিয়া এলো। সে ভাবল সাদিয়ার বিষয়টিকে কেন্দ্র করে সে ক্লাসের বাকি শিশুদের মাঝে সহযোগিতার মনোভাব তৈরি করবে। কিভাবে একে অপরকে উপকার করা যায় এই মনোভাব তৈরি করবে। সেসব বাচ্চাকে জিজ্ঞাসা করল সাদিয়া তোমাদের কেমন বন্ধু? সবাই হাত উঠিয়ে উত্তর দিলো খুব ভালো বন্ধু ম্যাম। সায়লা বলল ঠিক আছে, হাত নামাও। সাদিয়ার যদি কোনো সমস্যা হয় তোমরা ওকে সহায়তা করবে না? সবাই একযোগে বলল, হ্যাঁ ম্যাম আমরা সবাই সহায়তা করব। সায়লা বলল, তোমরা তো জানো সাদিয়ার বাবা অসুস্থ। সাদিয়ার শিক্ষা সফরের জন্য ৪০০ টাকা লাগবে। তোমরা সবাই সহায়তা করলে সাদিয়া তোমাদের সাথে যেতে পারবে। তোমরা যদি সবাই ১০ টাকা করে দাও তবে সাদিয়ার টাকাটি পরিশোধ হবে। সায়লা জানে শিশুদের কাছে ১০ টাকা নাও থাকতে পারে। তা ছাড়া সবাইকে তাদের বাবার কাছ থেকে আনতে হবে। সায়লা বলল, তোমরা সবাই তোমাদের টিফিনের টাকা থেকে ২ টাকা করে জমা করবে। এভাবে পাঁচ দিনে দেখবে তোমাদের প্রত্যেকের কাছে ১০ টাকা হয়ে গেছে। পাঁচ দিন পর আমাকে তোমরা ১০ টাকা করে দিবে। ওই ক্লাসে মোট ৪৫ জন শিশু আছে। পাঁচ দিন পর সবাই ১০ টাকা করে সায়লার কাছে জমা করল। ৪৪০ টাকা জমা হলো। সাদিয়ার জন্য লাগবে ৪০০ টাকা। বাকি চল্লিশ টাকা দিয়ে সবার জন্য চকোলেট আনা হলো। টাকা হাতে নিয়ে সায়লা সবাইকে বলল, দেখ সাদিয়ার সমস্যা কত সহজে সমাধান হলো। সবাই সহযোগিতা করলে একটি কাজ কত সহজ হয়ে যায়। দশে মিলে কাজ করলে কোনো সমস্যাই সমস্যা নয়। শিশুরাও সায়লার এই অভিনব কৌশলকে খুব উপভোগ করল। সবার ক্ষুদ্র সহযোগিতায় সাদিয়ার অনেক বড় ইচ্ছে পূরণ হলো।

 


আরো সংবাদ



premium cement
রাজবাড়ীতে মালবাহী ট্রেন লাইনচ্যুত, রেল যোগাযোগ বন্ধ রাফায় হামলার ব্যাপারে ইসরাইলকে হুঁশিয়ারি হামাসের স্পেনের ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জে নৌকাডুবি, ৫০ শরণার্থীর মৃত্যুর ‌শঙ্কা ফিলিপাইনে খরায় জলাধার শুকিয়ে জেগে উঠেছে ৩০০ বছর আগের নগর ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় আজ প্রবল কালবৈশাখী ও শিলাবৃষ্টি হতে পারে সাবমেরিন বিধ্বংসী স্মার্ট ক্ষেপণাস্ত্রের সফল পরীক্ষা ভারতের মোস্তাফিজের মেইডেন দিয়ে আলোচনা ইসরাইলের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন কলম্বিয়ার বাংলাদেশ-সৌদি আরবের যৌথ উদ্যোগে ইউরিয়া সার কারখানার সম্ভাব্যতা সমীক্ষা সম্পন্ন আগামী ২ বছর উন্নয়নশীল এশীয় অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি ৪.৯ শতাংশ থাকার আশা এডিবি প্রেসিডেন্টের চুয়াডাঙ্গায় আগুনে পুড়ে পানবরজ ছাই

সকল