২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

মুসলিম উম্মাহর খেদমতে সউদী আরব

-

দুই পবিত্র মসজিদের সাবেক জিম্মাদার বাদশাহ ফাহাদ বিন আবদুল আযীয (আল্লাহ তার প্রতি রহম করুন) ইসলাম ও সারা বিশ্বের মুসলিম তথা মুসলিম উম্মাহর জন্য সউদী আরবের একনিষ্ঠ অবদানের কথা উল্লেখ করতে গিয়ে বলেছিলেন, আমাদের মুসলিম ভাইদের সাথে এবং আরব বিশ্বের সাথে আমাদের সম্পর্ক জোরদার করার জন্য আমাদেরকে অবশ্যই সব ধরনের প্রচেষ্টা চালাতে হবে এবং আমাদেরকে মুসলিম সম্প্রদায় তথা মুসলিম উম্মাহর জন্য সব কিছু করতে হবে।
বিভিন্নভাবে সউদী আরব মুসলিম সম্প্রদায়ের সেবা করার প্রতিশ্রুতি পালন করে যাচ্ছে। বিশ্বব্যাপী সউদী আরব শত শত কোটি ডলার সহায়তা প্রদান করার মাধ্যমে মুসলিম উম্মাহর সেবা করে যাচ্ছে। নিরাপত্তার সাথে ও আরামদায়কভাবে মুসলমানদের পবিত্র হজ পালনের জন্য সউদী আরব বিমানবন্দর, সি-পোর্ট সড়ক ও অন্যান্য সুযোগসুবিধাসহ একটি বিশাল নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছে। সউদী সরকার মক্কায় পবিত্র কাবা শরিফ এবং মদিনায় মসজিদে নববীর সম্প্রসারণ কাজে বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করেছে। প্রত্যেক জায়গায় মুসলিমদের স্বার্থকে এগিয়ে নেয়ার কাজে সউদী আরব সক্রিয় রয়েছে। এ জন্য সউদী আরব বহু কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। এসব কর্মসূচির একটি হলো অমুসলিম দেশগুলোয় সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায়ের সেবা বা সহায়তা দানের উদ্যোগ গ্রহণ। ঐতিহাসিক ইসলামী বিশ্বের বাইরে লাখ লাখ মুসলমানকে প্রতিষ্ঠিত করে দেয়া হয়েছে। তাদের সম্প্রদায়গুলো উন্নতি লাভ করছে এবং বেড়ে উঠছে সেখানকার বিপুলসংখ্যক মানুষ ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত হচ্ছে।
ইসলামের জন্মস্থান এবং মুসলিমদের হৃদয়ের অত্যন্ত আপন ও প্রিয় হিসেবে সউদী আরব কেবল ইসলামী বিশ্ব নয় এর বাইরে ও বসবাসরত মুসলিমদের জন্য একটি বিশেষ নৈতিক বাধ্যবাধকতা অনুভব করে। এই দায়দায়িত্ব পূরণ করার জন্য, সউদী আরব কয়েক দশক ধরে ঈমানদারদের এই বিশাল ও ক্রমবর্ধমান জনগোষ্ঠীর আধ্যাত্মিক প্রয়োজন পূরণ এবং ইসলামী বিশ্বের সাথে সম্পর্ক জোরদার করার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।
এই লক্ষ্যে সউদী আরব বিভিন্নভাবে কাজ করছে। প্রাথমিক পর্যায়ে যেসব এলাকায় বিপুলসংখ্যক মুসলমানের বসবাস বা মুসলিম সম্প্রদায় রয়েছে সেখানে মসজিদ ও ইসলামিক সেন্টার প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ১৯৮০ এবং ১৯৯০-এর দশকে এই প্রচেষ্টা ও উদ্যোগ জোরদার করা হয়। ফলে সউদী আরবের অর্থসহায়তায় বিশ্বব্যাপী ১৫০০ মসজিদ ও ২১০টি ইসলামী সেন্টার নির্মাণ করা হয়। ও পরে উল্লেখিত সউদী উদ্যোগের অংশ হিসেবে অদ্যাবধি বিশ্বের সব স্থানে আরো বেশি মসজিদ ও ইসলামী সেন্টার প্রতিষ্ঠার কাজ অব্যাহত রয়েছে। এই সেন্টার ও মসজিদ কমপ্লেক্সগুলো শুধু আধ্যাত্মিক প্রয়োজন পূরণ করার জন্য নয় বরং সেখানে মুসলিম সম্প্রদায়ের সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক প্রয়োজন পূরণ করারও ব্যবস্থা করা হয়েছে। সাধারণভাবে এসব সেন্টারে একটি বড় মসজিদ, শিক্ষার্থীদের জন্য শ্রেণিকক্ষ, একটি লাইব্রেরি, কনফারেন্স বা সভা সমাবেশ, প্রদর্শনী ও সাংস্কৃতিক সেমিনার অনুষ্ঠানের জন্য অডিটোরিয়াম ও হল রুমের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
প্রতিষ্ঠার পর এসব সেন্টার মুসলমানদের আকৃষ্ট করছে। কয়েক মাইল দূর থেকে মুসলমানরা নামজের জন্য বিশেষভাবে শুক্রবার জুমার নামাজে অংশগ্রহণের জন্য এখানে জমায়েত হয়ে থাকেন।
এই সেন্টারগুলোতে শিক্ষাগত, সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এসব সেন্টারে ইসলামী শিক্ষাবিষয়ক বিভিন্ন কোর্স সম্পন্ন করা হয়। মুসলিম পরিবারগুলো তাদের সন্তানদের ইসলামী শিক্ষা ও আদব কায়দা শেখার জন্য এসব সেন্টারে পাঠাতে আগ্রহী। তারা চায় সন্তানরা এখান থেকে সঠিক ধর্মীয় শিক্ষা ও তার অনুশীলনের সুযোগ পাক। এছাড়া এসব কমপ্লেক্স হচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ সমাবেশ বা জমায়েতের স্থান। যেখানে ধর্মীয় সমাবেশ, প্রদর্শনী এবং সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের জবাই একত্র হতে পারে। এভাবে বিভিন্ন পর্যায়ের মুসলমানদের মধ্যকার বিভিন্ন মতপার্থক্য দূর করে পারস্পরিক বন্ধন সৃষ্টির একটি সুন্দর পরিবেশ তৈরি হতে পারে।
এসব সেন্টারে হাজার হাজার মানুষ ও দর্শনার্থীর পরিদর্শন ও অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের সুযোগ রাখা হয়েছে। ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়েও মুসলমানরা যাতে সভায় অংশগ্রহণ করতে পারেন সেভাবেই পরিকল্পিভাবে সেন্টারগুলো তৈরি করা হয়েছে। অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি সেন্টারের অবস্থান হচ্ছে ওয়াশিংটন ডিসি, নিউ ইয়র্ক, লসঅ্যাঞ্জেলেস, স্যানফ্রানসিসকো, শিকাগো, মাদ্রিদ, লন্ডন, রুম, প্যারিস, বন, ব্রাসেলস, জেনেভা, টোকিও, টরেন্টো, ভিয়েনা, লিসবনে। এসব কমপ্লেক্সের মধ্যে দু’টি একেবারে নতুন কমপ্লেক্স খোলা হয়েছে। একটি লস অ্যাঞ্জেলেসের উপকণ্ঠে এবং অপরটি স্কটল্যান্ডের এডিনবার্গে। মরহুম বাদশাহ ফাহাদ বিন আবদুল আযীয এই দু’টি শহরের মুসলিমদের জন্য এই দু’টি কমপ্লেক্স দান করেছেন। এই নতুন দু’টি কমপ্লেক্সের প্রত্যেকটিতে ঐতিহ্যবাহী ইসলামী স্থাপত্যের নিদর্শন অনুযায়ী একটি বড় মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছে। এই মসজিদ দু’টি অত্যন্ত আকর্ষণীয় করে নির্মাণ করা হয়েছে। এ দুটো কমপ্লেক্সে প্রয়োজনীয় বল আধুনিক সুযোগ সুবিধাসহ বড় ইসলামী সেন্টার আছে।
যেসব এলাকায় বেশি মুসলিম বসবাস করে না সেসব স্থানে সউদী অর্থায়নে ছোট ছোট মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছে। এশিয়া, ইউরোপ, আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া এবং উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকার ১৫০০ স্থানে এ ধরনের মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছে।
একইভাবে সউদী অর্থসহায়তায় ৩ দশমিক ৭৫ মিলিয়ন বা ৩৭ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলারে বাংলাদেশের জাতীয মসজিদ বায়তুল মোকাররমের সম্প্রসারণ ও সৌন্দর্যকরণ কর্মসূচি সম্পন্ন করা হয়েছে। সম্প্রতি বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে বহু মসজিদ ও ইসলামী সেন্টারে প্রতিষ্ঠা করার জন্য বাংলাদেশকে ২০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার পরিশোধ করার একটি রাজকীয় নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
বাংলাদেশে ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি প্রতিষ্ঠায় সউদী আরব সবচেয়ে বেশি ডোনেশন দিয়েছে। এই বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ পর্যন্ত সউদী আরব নিয়মিতভাবে বিপুল আর্থিক, অ্যাকাডেমিক ও প্রশাসনিক অবদান রেখেছে।
বিশ্বব্যাপী ইসলামী সেন্টার ও মসজিদ নির্মাণে সরাসরি আর্থিক সহায়তা ছাড়াও সউদী আরব মুসলিম বিশ্বের ভেতরে ও বাইরে মুসলমানদের সেবায় নিয়োজিত বিপুলসংখ্যক বিশেষায়িত সংগঠনকে হয় সংগঠন প্রতিষ্ঠায় অথবা তাদের কার্যক্রমে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে ইসলামী সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি), দ্য মুসলিম ওয়ার্ল্ড লিগ, বাদশাহ ফয়সাল ফাউন্ডেশন, দি ওয়ার্ল্ড অ্যাসেম্বলি অব মুসলিম ইয়ুথ ইত্যাদি।
সউদী আরব আন্তর্জাতিক ইসলামিক ত্রাণ সংস্থা, বসনিয়া-হারজেগোভিনার মুসলমানদের জন্য দান সংগ্রহের লক্ষ্যে উচ্চতর কমিটির মতো বিশেষ সংগঠনও গঠন করেছে এবং আরো বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউশন প্রতিষ্ঠা করেছে।
একইভাবে আফগানিস্তানের গৃহহীন, এতিম এবং যুদ্ধের কারণে বিধবা হওয়াদের জন্য বিপুল পরিমাণ মানবিক সহায়তা দিয়েছে। ইয়েমেনে বছরের পর বছর সংঘটিত গৃহযুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত লোকদের মানবিক সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে সউদী আরব। ইয়েমেনীদের জন্য সউদী আরব কোটি ডলার সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে। বাদশাহ সালমান মানবিক সহায়তা এবং রিলিফ সেন্টার ও ক্ষতিগ্রস্ত এসব লোকের সহায়তার জন্য সম্ভব সবকিছু করছে।
বাংলাদেশ ও অন্যান্য দেশে অবস্থানরত মিয়ানমারের নির্যাতিত রোহিঙ্গা মুসলিমদের জন্য মানবিক সহায়তাদানে সউদী আরব সব সময় আগ্রহী। সউদী আরব গৃহযুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত সিরিয়ায় শরণার্থীদের জন্য তাদের সীমান্ত খুলে দিয়েছে এবং তাদের জন্য সব সুযোগ সুবিধা দিয়েছে। বর্তমানে সউদী আরবে ২৫ মিলিয়নেরও বেশি সিরীয় শরণার্থী রয়েছে।
সউদী আরব মদিনা আল মুনওয়ারায় ১৯৮৫ সালে কিং ফাহাদ হোলি কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স প্রতিষ্ঠা করে। এই প্রেস থেকে পবিত্র কুরআন ছাপিয়ে কয়েকটি ভাষায় অনুবাদ করে কোটি কোটি কপি পবিত্র কুরআন বিভিন্ন দেশে বিনামূল্যে সরবরাহ করা হয়। এছাড়া পবিত্র কুরআনের অনুবাদ বিভিন্ন ভাষায় রেকর্ড করে তার অডিও এবং ভিডিও ক্যাসেট বিনামূল্যে পৃথিবীর প্রায় সব দেশে সরবরাহ করা হয়। এই প্রিন্টিং কমপ্লেক্সটি বিশেষভাবে মুসলিম সম্প্রদায়ের সেবায় নিয়োজিত। এই প্রেস থেকে ছাপা হওয়া কুরআন ও অন্যান্য দ্রব্যসামগ্রী বিনামূল্যে মক্কায় হাজীদের মধ্যে এবং বিশ্বব্যাপী বিতরণ করা হয়। সউদী আরবের আরো একটি উদ্যোগ হচ্ছে মুসলিম সংখ্যালঘুদের শিক্ষাদানে সহায়তা করা।
ইসলামী বিশ্বের বাইরেও অব্যাহতভাবে মুসলিম সংখ্যালঘুরা বেড়ে উঠছে। তাদের শিশুদের জন্য ইসলামী এবং আরবি শিক্ষা দানের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। অধিকাংশ ক্ষেত্রে, ইসলামী সেন্টার এবং মসজিদগুলো এই প্রয়োজনীয়তা পরিপূর্ণভাবে পূরণ করে আসছে। দুই দশক আগে, সউদী আরব উত্তর আমেরিকা এবং ইউরোপে ইসলামী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করতে শুরু করে। এসব স্কুলে ইসলামী শিক্ষার ওপর জোর দিয়ে আরবি এবং স্থানীয় ভাষায় একটি সম্পূর্ণ কারিকুলাম দেয়া হয়। ওয়াশিংটন ডিসি, লন্ডন, বন এবং মস্কোর কাছে এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হয়। ক্যালিফোর্নিয়ার দক্ষিণাঞ্চল এবং স্কটল্যান্ডসহ অন্যান্য স্থানেও ইতোমধ্যে এ ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
অধিকন্তু সউদী আরব বড় বড় মুসলিম দেশ এবং সংখ্যালঘু কমিউনিটি থেকে মেধাবী ছাত্রদের বৃত্তি দিয়ে সউদী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অধ্যয়নের সুযোগ করে দিয়েছে। বর্তমানে সারা বিশ্ব থেকে এ ধরনের হাজার হাজার ছাত্র মক্কা, মদিনা ও রিয়াদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অধ্যয়ন করছেন। এসব বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জনকারী কয়েক শ’ ছাত্রকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ইসলামের সঠিক শিক্ষা পৌঁছে দেয়ার জন্য দায়ী (প্রচারক) হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
বিশ্বব্যাপী ইসলামী সেন্টার ও মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছে মুসলিম নেতৃবৃন্দ এবং কমিউনিটির সদস্যদের মধ্যে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ স্থাপনের লক্ষ্যে। লস অ্যাঞ্জেলেস কমপ্লেক্স রাস্তা থেকে একটি চার্চ পর্যন্ত অবস্থিত। এসব ইসলামী সেন্টার ও মসজিদের অনেকগুলোকে আন্তঃধর্মীয় বা ইন্টারফেইথ চ্যারিটি বা জনকল্যাণমূলক কাজের জন্যই প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে; যাতে আন্তঃধর্মীয় বোঝাপড়াকে প্রমোট করা যায়।
এভাবে সউদী আরব ইসলামী বিশ্বের বাইরে থাকা বসবাস করে তাদেরসহ মুসলমানদের প্রয়োজন পূরণ করতে চায়। এভাবে ইসলামের ব্যাপারে অধিকতর উপলব্ধি ও জানাশোনা জোরদার করতে চায়।
মুসলিম ও অমুসলিমদের মধ্যে পারস্পরিক সমঝোতা ও বোঝাপড়া এবং অধিকতর সৌহার্দ্যপূর্ণ আলাপ-আলোচনার জন্য এ ধরনের প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা অত্যাবশ্যক। বাদশাহ আবদুল্লাহ বিন আবদুল আযীয আল সউদ আন্তঃধর্মীয় বা আন্তঃবিশ্বাস সংলাপের উদ্যোগ নিয়েছিলেন। তিনি পৃথিবীর অনেক গুরুত্বপূর্ণ অংশে প্রায় বিখ্যাত সব ধর্ম ও সংস্কৃতির নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে কয়েকটি সফল কনফারেন্স করেছিলেন।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আযীয আল সউদের নেতৃত্বে সউদী আরব সারা বিশ্বের মুসলিম উম্মাহর জন্য একটি গতিশীল ভূমিকা পালন করছে।
কোনো সীমান্তবিহীন মানবতার সেবা করার জন্য কিং সালমান হিউমিনিটারিয়ান এইড অ্যান্ড রিসিট সেন্টার প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এই সংস্থা বাংলাদেশসহ বিশ্বের ৪০টিরও বেশি দেশের মানুষ ও কমিউনিটির সেবা দিয়ে যাচ্ছে। সউদী আরবের কাছ থেকে বেশির ভাগ মানবিক সহায়তা লাভকারী পাঁচটি দেশের মধ্যে রয়েছে : ইয়েমেন, ফিলিস্তিন, সিরিয়া, সোমালিয়া ও পাকিস্তান। কিং সালমান সেন্টার ২০১৫ সাল থেকে এ পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী ৪৪টি দেশে এক হাজার ৫৭টি কল্যাণমূলক বিভিন্ন প্রকল্প সম্পন্ন করেছে। কিং সালমান সেন্টার প্রতিষ্ঠার মাত্র কয়েক বছরের মধ্যেই শত শত কোটি ডলার ব্যয় করেছে। ২০০৭ সাল থেকে ওই তহবিল থেকে বাংলাদেশে চলে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সহায়তা অব্যাহত রাখা হয়েছে। আন্তর্জাতিক শরণার্থী সংস্থাকে (আইওএম) রোহিঙ্গাদের আশ্রয়দান, পানি, স্যানিটেশন ও স্বাস্থ্য সহায়তা প্রদান এবং কক্সবাজারে বসবাসরত স্থানীয় বাংলাদেশীদের জন্য সউদী ত্রাণ তহবিল থেকে ৪ দশমিক ২ মিলিয়ন ডলার দেয়া হয়েছে।
বাংলাদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জরুরি ত্রাণসহায়তা দানের জন্য উদ্বাস্তুবিষয়ক জাতিসঙ্ঘ হাইকমিশনার এবং কিং সালমান হিউমিনিটারিয়ান এইড সেন্টার (কেএস রিলিফ) ২০১৯ সালের এপ্রিল মাসে ৩ মিলিয়ন ডলারের একটি চুক্তি স্বাক্ষর করে। বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিউএফপি) মাধ্যমে বাংলাদেশের স্কুলপড়–য়া শিশু ও তাদের পরিবারকে সহায়তা দানের জন্য সউদী আরবের ত্রাণ তহবিল থেকে তিন শ’ মেট্রিক টন খেজুর দান করা হয়েছে।
সউদী সরকার বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে শেল্টার হাউজ নির্মাণের জন্য বিপুল পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ দিয়েছে। এ ছাড়াও সাইক্লোন সিডর ও আইলায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সহায়তায় বিপুল পরিমাণ মানবিক ও ত্রাণসহায়তা দিয়েছে। বাংলাদেশের সিডরে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য বাদশাহ আবদুল্লাহর গোপন ও বিশেষ দান ছিল কোনো একক ব্যক্তি কর্তৃক সবচেয়ে বড় দান।
সউদী সংবাদ সংস্থা জানায়, ২০০৭ থেকে ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সউদী আরব বিশ্বের পাঁচটি মহাদেশের ৭৮টি দেশের ৯৯৯টি প্রকল্পের জন্য ৩২ দশমিক ৬৫ বিলিয়ন ডলার বরাদ্দ দিয়েছে। আন্তর্জাতিক ও স্থানীয় সংস্থা এবং সহায়তা গ্রহণকারী দেশগুলোর সরকারসহ ১৫০ অংশীদার এসব প্রকল্প বাস্তবায়ন করে। সউদী আরবে উন্নয়ন শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত সব সময় সউদী আরব মানবতার জন্য বিশেষভাবে মুসলিম উম্মাহর কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছে।

 


আরো সংবাদ



premium cement
দুই বিভাগে বৃষ্টি হতে পারে ফ্রান্স, ব্রাজিল ও প্যারাগুয়ে সফরে যাচ্ছেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী থাইল্যান্ড সফরকে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে মাইলফলক বললেন প্রধানমন্ত্রী লালমনিরহাটে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশী যুবক নিহত এখনো শেষ হয়নি বিতর্কিত আউটের রেশ, ব্যতিক্রমী প্রতিবাদ মুশফিকের ‘ফ্রি ভিসার গল্প’ আর শূন্য হাতে ফেরা লাখো শ্রমিক নোয়াখালীতে প্রবাসীর স্ত্রীর ব্যক্তিগত ছবি দেখিয়ে চাঁদা আদায় দেশের উন্নয়নে পাকিস্তান প্রশংসা করে, অথচ বিরোধী দল দেখে না : কাদের আশুলিয়ায় বাঁশবাগান থেকে নারী পোশাক শ্রমিকের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার মিয়ানমারের কর্মকর্তারা ফেরত গেলেন, কিন্তু রোহিঙ্গা সঙ্কট কি আরো জটিল হচ্ছে দিনাজপুরে দুই ট্রাকের সংঘর্ষ, চালক-হেলপার নিহত

সকল